হারজিত কর (৭৩) তাঁর জীবনের ৩০ বছরের বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়েছেন। হঠাৎ সেখান থেকে তাঁকে বিতাড়িত করে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) কর্মকর্তারা ৮ সেপ্টেম্বর হারজিতকে আটক করেন। এ ঘটনায় শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

পাঞ্জাবের রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে বাঁচতে ১৯৯১ সালে ছোট দুই ছেলেকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় পাড়ি জমান হারজিত কর। এত দিন ধরে সেখানেই বসবাস ও কাজ করছিলেন তিনি। এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকবার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু সফল হননি।

আরও পড়ুনভারতের এত লোক কেন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ পথে ঢুকছে১২ ডিসেম্বর ২০২৪

হারজিত করের আইনজীবী দীপক আহলুয়ালিয়া অভিযোগ করেছেন, কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার ইতিহাস নেই হারজিতের। এরপরও আটক করার সময় আইসিই কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা অগ্রহণযোগ্য।

ওই আইনজীবী আরও বলেন, হারজিতকে ১৯ সেপ্টেম্বর জর্জিয়ার একটি আটককেন্দ্রে রাখা হয়। ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাড়িতে যেতে কিংবা পরিবার ও বন্ধুদের কাছ থেকে ভালোমতো বিদায় নিতে পারেননি।

সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকার হারকিউলিসে বসবাস করতেন হারজিত। দুই দশক ধরে শাড়ির দোকানে সেলাইয়ের কাজ করতেন তিনি। পাশাপাশি নিয়মিত কর পরিশোধ করেছেন। আশ্রয়প্রার্থীরা তাঁদের আবেদনের প্রক্রিয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাস ও কাজ করতে পারেন।

আহলুয়ালিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিওতে হারজিতের সঙ্গে হওয়া আচরণকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, হারজিতকে কোনো বিছানা ছাড়াই ৬০ থেকে ৭০ ঘণ্টা আটক রাখা হয়। তিনি মেঝেতে ঘুমাতে বাধ্য হন। ওষুধ খাওয়ার জন্য তাঁকে বরফ দেওয়া হয়েছিল। তিনি যে খাবার খেতে পারতেন, তা দেওয়া হয়নি। এমনকি প্রহরীরা তাঁকে স্যান্ডউইচ খেতে পারেন না বলেও দোষারোপ করেছেন।

সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকার হারকিউলিসে বসবাস করতেন হারজিত। দুই দশক ধরে শাড়ির দোকানে সেলাইয়ের কাজ করতেন তিনি। পাশাপাশি নিয়মিত কর পরিশোধ করেছেন। আশ্রয়প্রার্থীরা তাঁদের আবেদনের প্রক্রিয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাস ও কাজ করতে পারেন।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র ফেরত পাঠালে অবৈধ অভিবাসী গ্রহণে ভারত সহযোগিতা করবে২২ জানুয়ারি ২০২৫

এর আগে বিবিসিকে আইস বলেছে, প্রায় দশক ধরে সব আইনিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন হারজিত। ২০০৫ সালে এক অভিবাসন বিচারক তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নের আদেশ দেন।

হারজিতকে আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে শিখ সম্প্রদায়ের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ায় তাঁরা বিক্ষোভ করেছেন।

ঠিক এমন এক সময় হারজিত করকে আটক করা হয়, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কঠোর অভিবাসন নীতি অনুসরণ করছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবছর লাখ লাখ আশ্রয়প্রার্থী যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পৌঁছান। বর্তমানে আশ্রয়সংক্রান্ত ৩৭ লাখের বেশি মামলা অভিবাসন আদালতে চলমান।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সবচেয়ে খারাপ মানুষদের নির্বাসিত করতে চান। কিন্তু সমালোচকেরা বলছেন, যাঁদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার ইতিহাস নেই ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন, এমন অভিবাসীরাও ট্রাম্পের এই নীতির নিশানা হচ্ছেন।

আরও পড়ুনকর্মী ভিসায় ট্রাম্পের ফি আরোপে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কোন দেশ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য় য ক তর ষ ট র স প ট ম বর প রক র য় ক জ করত কর ছ ন করত ন বসব স

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি অপরাধপ্রবণ এলাকায় বুধবার দিনভর বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ছুরি, দুটি ধারালো চাকু, দুটি লোহার রড, একটি সাইকেল ও ৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়মিত মামলা, মাদক মামলা, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হীরা (১৯), রফিক (২১), আবদুর রহমান (৩৯), নাবিদ হাসান ওরফে চয়ন (২৬), খোকন (৩১), মনসুর (৩৫), জুয়েল (৩২), সানজু (২২), মিলন (৪২), শাওন (৩৬), নোয়াজ শরীফ (২৮), সেলিম (৩৪), আসাদুজ্জামান ওরফে ইমন (২৩), আনোয়ার হোসেন (৩৬), সজল (৩০), বরকত গাজী (২৮), জুয়েল (৩৮), আরমান (৩০), বাদল (৩৮), কোরবান (২৮), নয়ন (২৭), মাসরুফ (২৩), আল আমিন (২৭), রাকিব (১৮), মিলন (২৫), ওয়াজিদ (৩৬), এরশাদ (২৫), ছালাম ওরফে সামাদ (৩৭) ও দিলসার (৩০)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ