বান্দরবানের কেওক্রাডং ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হচ্ছে ১ অক্টোবর থেকে
Published: 27th, September 2025 GMT
বান্দরবানের রুমা উপজেলার কেওক্রাডং পাহাড়চূড়ায় পর্যটক ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে আগামী ১ অক্টোবর থেকে। দুর্গাপূজার ছুটি সামনে রেখে পর্যটক ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ এবং আইনশৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, সব দিক বিবেচনা করেই কেওক্রাডং পাহাড়চূড়ায় পর্যটক ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান নিয়মকানুন মেনে পর্যটকেরা সেখানে ভ্রমণ করতে পারবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় দীর্ঘদিন ধরে কেওক্রাডং পাহাড়চূড়ায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এ ছাড়া পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা কেওক্রাডং ছাড়াও থানচি উপজেলার রেমাক্রী ও নাফাখুমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
জেলা আবাসিক হোটেল-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গত ৬ জুন রুমার বগালেক এবং থানচির তিন্দু ও তুমাতুঙ্গি এলাকায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এর পর থেকেই পর্যটকের আগমন বেড়েছে। কেওক্রাডং খুলে দেওয়া হলে পর্যটক প্রবাহ আরও বাড়বে। তবে নাফাখুম খুলে দেওয়ার দাবিও জোরালো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক জানান, রেমাক্রী ও নাফাখুম এলাকায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি এখনো বিবেচনায় রয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে এলে ধাপে ধাপে সেসব এলাকাও খুলে দেওয়া হবে।
এর আগে ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। ওই বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে এ তিন উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামের একটি সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা বাড়তে থাকে। কেএনএফের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার যোগাযোগের অভিযোগও ওঠে। ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর থেকে যৌথ বাহিনী কেএনএফ ও শারক্বীয়া জঙ্গিদের দমনে অভিযান শুরু করলে নিরাপত্তার কারণে ২০ অক্টোবর থেকে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
পরে ধাপে ধাপে কয়েকটি এলাকায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রোয়াংছড়ির দেবতাখুমও খুলে দেওয়া হয় পর্যটকদের জন্য।
আরও পড়ুনবান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার০৬ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন র য় পর যটক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে আজও অবরোধ চলছে, স্থবির জনজীবন
খাগড়াছড়িতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’-এর ব্যানারে ডাকা সড়ক অবরোধ আজ মঙ্গলবারও অব্যাহত রয়েছে। জেলার চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও ঢাকা-খাগড়াছড়ি সড়কে অবরোধ শিথিল করা হলেও দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়নি। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও অল্পসংখ্যক অটোরিকশা-ইজিবাইক চলাচল করছে। প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারাও বহাল রয়েছে জেলার সদর ও গুইমারা উপজেলায়।
পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতা এ অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালেই গত রোববার বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছিল স্থানীয় একটি পক্ষ। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁরা তিনজনই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ আহত হন অন্তত ২০ জন।
আজ সকালে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের শাপলা চত্বর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সড়কে মানুষের হাঁটাচলাও তেমন নেই। একাধিক ব্যক্তি একসঙ্গেই দেখলেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শহরে কেবল কয়েকটি টমটম চলাচল করতে দেখা গেছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল রয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত শনিবার খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর সদর উপজেলা, পৌরসভা এলাকা এবং গুইমারা উপজেলায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখার উদ্দিন খন্দকার বলেন, অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।