ডান চোখের নেত্রনালি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেখতে পান না বৃদ্ধ সুফিয়া বেগম (৮০)। আর্থিক সামর্থ্যের অভাবে বড় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেওয়া সম্ভব নয়। তাই তিনি চরফ্যাশনের ফ্যাশন স্কয়ারে আয়োজিত বিনা মূল্যের চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পে আসেন। সঙ্গে ছিলেন আরও তিন ননদ।

ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়ার পক্ষ থেকে এই বিশেষ চিকিৎসাসেবার আয়োজন করা হয়। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার চরফ্যাশন উপজেলা সদর ও দক্ষিণ আইচা থানায় দুই দিনব্যাপী এ সেবা কার্যক্রম চলে। আয়োজকেরা জানান, দুই দিনের এই ক্যাম্পে অন্তত পাঁচ হাজার রোগীকে বিনা মূল্যে সেবা দেওয়া হয়।

গত মঙ্গলবার চরফ্যাশনে এসে নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। পরদিন বুধবার সকাল ১০টায় ফ্যাশন স্কয়ারে চক্ষু চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপর উপজেলার আসলামপুর, ওমরপুর ও নজরুল নগর ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে গণসংযোগ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ আইচা থানার চরমানিকা ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। একই দিন শশীভূষণ ও হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে গণসংযোগ ও পথসভায় অংশ নেন। এ সময় তিনি বিএনপির পক্ষে জনগণের কাছে ভোট চান।

ঢাকা থেকে আগত পাঁচজন চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও তাঁদের দল বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিনা মূল্যে সেবা দিয়েছেন। চোখ পরীক্ষা, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চশমা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার পাশাপাশি ছানি অস্ত্রোপচারেরও ব্যবস্থা রাখা হয়।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ফাতেমা বেগম বলেন, চোখ জ্বালাপোড়ার সমস্যা নিয়ে তিনি এসেছিলেন। চিকিৎসক চোখের ড্রপ দিয়েছেন। ওসমানগঞ্জের আব্দুল মালেকের ডান চোখে ছানি পড়েছে। প্রয়োজন হলে তাঁর অস্ত্রোপচার করা বলে জানানো হয়েছে।

চরফ্যাশন পৌরসভার আব্দুল মান্নান মুনসি (৬৫) চোখে পানি পড়ায় বিনা মূল্যে ড্রপ, চশমা ও ওষুধ পেয়েছেন। আসলামপুরের বিবি রহিমা (৫৬) ডান চোখে ছানি পড়ায় ওষুধ ও ড্রপ পেয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। 

এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল। 

পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।

অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”

তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”

ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণ আদায়ে লাগবে ৩৩৩ বছর
  • ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ