বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হ‌জের তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। সর্ব‌নিম্ন হজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা সাশ্রয়ী হজ প‌্যা‌কে‌জে অন্তর্ভূক্ত। 

গতবা‌রের চে‌য়ে এবার বিমান ভাড়া ক‌মি‌য়ে সবগু‌লো হজ প‌্যা‌কেজ নির্ধারণ করা হ‌য়ে‌ছে। গতবছর দু‌টি হজ পা‌কেজ থাক‌লেও এবার সরকা‌রি ব‌্যবস্থাপনার মতো বেসরকা‌রি ব‌্যবস্থাপনায়ও তিন‌টি হজ প‌্যা‌কেজ ঘোষণা করা হ‌য়ে‌ছে। 

আরো পড়ুন:

শাবিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী বহিষ্কার

সরকা‌রিভা‌বে খরচ ক‌মি‌য়ে হ‌জের তিন প‌্যা‌কেজ ঘোষণা

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নয়াপল্টনে একটি হোটেলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার এসব হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

এ সময় সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারওয়ারও উপস্থিত ছিলেন।

ফ‌রিদ আহ‌মেদ জানান, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য তিনটি হজ প্যাকেজ করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য খাওয়া ও কোরবানিসহ বিশেষ হজ প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সাধারণ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে ব্যয় হবে সর্বমোট ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং সাশ্রয়ী হজ প‌্যা‌কে‌জের মূল‌্য ধরা হ‌য়ে‌ছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের খাবার খরচ প্যাকেজের বাইরে থাকলেও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্নত সার্ভিসের জন্য খাবারের মূল্য প্রতিটি প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত ব‌লেও জানান তি‌নি।

প্রতি সৌদি রিয়াল ৩২ টাকা ৮৫ পয়সা ধরে প্যাকেজের খরচ হিসাব করা হয়েছে জানিয়ে ফ‌রিদ আহ‌মেদ জানান, পরবর্তী সময়ে এ রেটে কোন পরিবর্তন আসলে তা প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

হজ এজেন্সিগুলোর জন্য সাধারণ হজ প্যাকেজ ও সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে বিশেষ প্যাকেজ থেকে কম-বেশি করে তারা নিজস্ব প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন হাব মহাসচিব।

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্যাকেজের সব টাকা প‌রি‌শোধ কর‌তে হ‌বে জা‌নি‌য়ে ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, “বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেক হজযাত্রী কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন। আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত নিবন্ধন চলবে। হজ প্যাকেজের বাকি অর্থ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই নিজ নিজ এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে জমা করে বা এজেন্সির অফিসে জমা দিয়ে মানি রিসিট গ্রহণ ও সংরক্ষণ করবেন। কোনোক্রমেই মধ্যস্বত্বভোগীদের কছে কোনো প্রকার লেনদেন করবেন না।” 

কোনো এয়ারলাইন্স এ বছর ডেডিকেটেড ফ্লাইট ছাড়া শিডিউল ফ্লাইটে কোনো হজযাত্রী বহন করতে পারবে না জানিয়ে মহাসচিব বলেন, “প্যাকেজ ঘোষণার পর সৌদি সরকার কোনো খাতে খরচ বাড়ালে তা প্যাকেজ মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং হজযাত্রীকে এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।”

হাব মহাসচিব বলেন, “গত বছর হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা। এবার ১২ হাজার ৯৯০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা। বিমান ভাড়া আরও কমানো হলো প্যাকেজের মূল্য কমানো হবে।”

তিনি বলেন, “এর আগে গত দুই বছর অন্যায়ভাবে ২ লাখ টাকা করে হজযাত্রীদের কাছ থেকে বিমান ভাড়া আদায় করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, যেটি হজযাত্রীদের প্রতি জুলুম ছিল, অন্যায় ছিল। হজযাত্রীদের কাছ থেকে এ টাকা লুট করা হয়েছিল বলে আমরা মনে করি। কারণ তখন এক ডলারের দাম ছিল ১০০ টাকা। এখন এক ডলারের বিপরীতে টাকা ১২২ টাকা ৫০ পয়সা, কিন্তু এবার বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা। হজযাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত প্রায় এক লাখ টাকা আদায় করা হয়েছিল।” 

বিশেষ হজ প্যাকেজ : হাব মহাসচিব জানান, বিশেষ প্যাকেজে হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৭০০ মিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকায় আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় 'ডি' ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ।

এছাড়া, মক্কার হোটেল বা বাড়ি থেকে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত; এটাচড্ বাথ সহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৫ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে এ প্যাকেজে।

সাধারণ হজ প্যাকেজ: হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৩ কিলোমিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকার বাইরে আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় ‘ডি’ ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হবে।

মক্কার হোটেল বা বাড়ি থেকে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত। অ্যাটাচ বাথসহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে এ প্যাকেজে।

সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ: এ প্যাকেজে হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব হবে ৬/৭ কিলোমিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকার বাইরে আবাসন হবে। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় ‘ডি’ ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেম থেকে খাবার সরবরাহ করা হবে এ প্যাকেজে।

এছাড়া, মক্কার হোটেল বা বাড়ি হতে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত; অ্যাটাচ বাথসহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে সাশ্রয়ী প্যাকেজে।

গতবছর খাবার খরচ যুক্ত করে বেসরকা‌রি ব‌্যবস্থাপনায় সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা নির্ধারণ ক‌রে সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকরা।

এবার খরচ ক‌মি‌য়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন সরকারি ব্যবস্থাপনার ঘোষণা করেন।

প্যাকেজ–১ এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা। এছাড়া, হজ প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮১ টাকা ও হজ প্যাকেজ-৩ এ ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা খরচ ধরা হয়েছে।

‘বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ’ শিরোনামে একটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ১৮৫ টাকা। সরকার অনুমোদিত এ প্যাকেজ নিয়ে এজেন্সিগুলো অতিরিক্ত দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হজ হজয ত র দ র জ র খরচ ব সরক র এক ল খ মদ ন য় র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি

চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।

এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।

আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।

এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।

এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে কফি–সংস্কৃতি প্রসারে ‘আমা কফি’
  • রাজশাহীতে আইনি ব্যবস্থা নিন
  • চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি