বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও একজনের মৃত্যু
Published: 30th, September 2025 GMT
বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও একজন মারা গেছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবুল চন্দ্র রায় (৩৩) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। বাবুল বরগুনা পৌরসভার নয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাবুল হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। তবে স্বজনেরা তাঁকে বরিশাল নিতে পারেননি। চলতি বছরে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখন পর্যন্ত ১১ জন মারা গেছেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) তাজকিয়া সিদ্দিকাহ প্রথম আলোকে বলেন, মারা যাওয়া বাবুল চন্দ্র রায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বরিশাল নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু স্বজনেরা তাঁকে বরিশাল নিতে পারেননি। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তিনি মারা যান।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, আজ মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৫৪ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। একই সময়ে মারা গেছেন একজন। এ নিয়ে চলতি বছরে জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৩।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, এ বছর বরগুনায় শুরু থেকেই ডেঙ্গুর উচ্চ সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। আগস্টে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সেপ্টেম্বরে সংক্রমণ আবার বেড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন। সেপ্টেম্বরে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ডেঙ্গু সংক্রমণ মারাত্মক রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা আগে থেকেই জানানো হয়েছিল।
বরগুনায় এর আগে কখনো ডেঙ্গুর এমন ধারাবাহিক ও উচ্চ সংক্রমণ দেখা যায়নি। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) জরিপে দেখা যায়, গত ২৬ জুন বরগুনা পৌরসভার ৩১ শতাংশ ও গ্রামাঞ্চলের ৭৬ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ক রমণ বরগ ন য় বর শ ল অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
এমন এক সময়ে যখন বেশিরভাগ মানুষ লেখার জন্য কিবোর্ড ব্যবহার করে, তখন হাতের লেখা কি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ? ভারতীয় আদালতের মতে, অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, যদি সেই লেখক হন একজন চিকিৎসক।
ডাক্তারদের বাজে হাতের লেখা নিয়ে ভারতসহ সারাবিশ্বেই রসিকতা করা হয়। কারণ অনেক ক্ষেত্রে এই লেখা কেবল ফার্মাসিস্টরাই বুঝতে পারেন, রোগী কিংবা অন্য কেউ নয়। কিন্তু স্পষ্ট হাতের লেখার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি আদেশ জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মেডিকেল প্রেসক্রিপশন পাঠ একটি মৌলিক অধিকার।’ কারণ এটি জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
আদালতের এই আদেশ এমন একটি মামলায় এসেছে, যেখানে লিখিত শব্দের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় একজন নারীকে ধর্ষণ, প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগ ছিল এবং বিচারপতি জসগুরপ্রীত সিং পুরি জামিনের জন্য পুরুষের আবেদনের শুনানি করছিলেন।
ওই নারী অভিযোগ করেছিলেন, লোকটি তাকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, তার ভুয়া সাক্ষাৎকার নিয়েছে এবং তাকে যৌন শোষণ করেছে।
অভিযুক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তাদের সম্মতিতে সম্পর্ক ছিল এবং অর্থ নিয়ে বিরোধের কারণে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
বিচারপতি পুরি জানান, যখন ওই নারীকে পরীক্ষা করা এক সরকারি চিকিৎসকের মেডিকেল রিপোর্টটি দেখেন, তখন এর কিছুই তিনি বুঝতে পারেননি।
বিচারপতি তার আদেশে লিখেছেন, “এটি এই আদালতের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। কারণ একটি শব্দ বা একটি অক্ষরও স্পষ্টভাবে পড়া যায়নি।”
বিবিসি রায়ের একটি কপি দেখেছে যার মধ্যে প্রতিবেদন এবং দুই পৃষ্ঠার একটি প্রেসক্রিপশন রয়েছে। পুরো প্রেসিক্রিপশন ও রিপোর্ট অপাঠ্য।
বিচারপতি পুরি লিখেছেন, “যেহেতু প্রযুক্তি ও কম্পিউটার সহজলভ্য, তবুও এটা অবাক করার মতো যে সরকারি ডাক্তাররা এখনো হাতে প্রেসক্রিপশন লিখছেন যা সম্ভবত কিছু রসায়নবিদ ছাড়া অন্য কেউ পড়তে পারে না।”
আদালত সরকারকে মেডিকেল স্কুলের পাঠ্যক্রমের মধ্যে হাতের লেখার পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে এবং ডিজিটালাইজড প্রেসক্রিপশন চালু করার জন্য দুই বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করতে বলেছে।
বিচারপতি পুরি জানিয়েছেন, যতদিন না এটি বাস্তবায়ন না হয়, ততদিন পর্যন্ত সব ডাক্তারকে বড় অক্ষরে স্পষ্টভাবে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে।
ঢাকা/শাহেদ