বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন জেল খেটে মুশফিক উদ্দিন টগর (৫০) অস্ত্র হাতে আবারও ধরা পড়েছেন। অন্যদিকে আলোচিত এই হত্যার প্রায় দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও এ মামলার দুজন প্রধান আসামি মোকাম্মেল ও নুরুল এখনো ধরাই পড়েননি।

১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মুক্তির পর মুশফিক উদ্দিন টগর অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বেচাকেনায় জড়িয়ে পড়েছেন। এ কারণে ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর আজিমপুর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

যা ঘটেছিল সেদিন

২০০২ সালের ৮ জুন শনিবার। অন্যদিনের মতোই সেদিন দুপুরে ক্লাসে গিয়েছিলেন বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার (সনি)। ক্লাস না হওয়ায় হলে ফেরার পথে ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই দিন বুয়েট ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের তৎকালীন ছাত্রদল নেতা মুশফিক উদ্দিন টগর গ্রুপের মধ্যে দরপত্র নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধের মাঝখানে পড়ে নিহত হন কেমিকৌশল বিভাগের ১৯৯৯ ব্যাচের ছাত্রী সনি।

ওই সময় বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্রদল নেতা মোকাম্মেল হায়াত খান ও মুশফিক উদ্দিন টগর গ্রুপ বুয়েটে চাঁদাবাজি, টেন্ডার দখল ও নানা সন্ত্রাসী কাজের নেতৃত্ব দিতেন। ওই সময় বুয়েটে আবাসিক হল নির্মাণসহ বেশকিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছিল। এসব কাজের দরপত্র কারা পাবে তা নিয়ে আগে থেকেই এ দুটি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। ১১ জুন দুই কোটি টাকার টেন্ডার (দরপত্র) হওয়ার কথা ছিল। ওই টেন্ডার বাগিয়ে নিতে আগে থেকেই দুই পক্ষ শক্তি পরীক্ষার মহড়া দিতে থাকে।

সে সময় বুয়েট ক্যাফেটেরিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া মানে ছিল পুরো ক্যাম্পাসের দখল। জুন মাসের শুরুতে মুকি গ্রুপ টগরকে সরিয়ে ক্যাফেটেরিয়া দখলে নিলে সংঘাত আরও বেড়ে যায়। মিডটার্ম পরীক্ষার ছুটি শেষে ৮ জুন থেকে বুয়েটে ক্লাস শুরুর কথা ছিল; কিন্তু ওই সময় ফুটবল বিশ্বকাপ চলায় ক্লাস শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা সেভাবে ক্লাসে অংশ নিতেন না।

এ কারণে ক্লাস না হওয়ায় বুয়েটের মূল ভবনের কেমিকৌশল বিভাগ থেকে হলে ফিরছিলেন সনি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে হঠাৎ গোলাগুলি শুরু হয়। আধঘণ্টা ধরে চলে বন্দুকযুদ্ধ। একপর্যায়ে কোমরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সনি। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর মৃত্যু হয়।

ছাত্ররাজনীতির সহিংসতায় মেধাবী শিক্ষার্থী সনির অকালমৃত্যু সে সময় শুধু বুয়েট নয়, পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এ ঘটনার পর সে সময় দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়। সংবাদপত্রে এ ঘটনার খবর দীর্ঘ সময় ধরে প্রকাশ হতে থাকে।

সংবাদপত্রের প্রতিবেদন

হত্যাকাণ্ডের পর দিন ২০০২ সালের ৯ জুন ‘প্রথম আলো’ পত্রিকা ‘বুয়েটে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের গুলিবিনিময়ে ছাত্রী নিহত’ শিরোনামের প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, এ ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের পাঁচটি হলে তল্লাশি চালিয়ে ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হল থেকে ১০টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

দৈনিক ‘জনকণ্ঠ’ পত্রিকা লিখেছিল, দখল আর টেন্ডারবাজি নিয়ে এই সংঘর্ষ হয়। ঘটনার পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন হলে তল্লাশি চালিয়ে ৫০ জনকে আটক করা হয়। হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র ধর্মঘট ডাকা হয়।

আর ‘ইত্তেফাক’ পত্রিকার খবরে উল্লেখ করা হয়েছিল, দুই কোটি টাকার টেন্ডার কবজা করতে প্রচণ্ড গোলাগুলি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে তল্লাশি চালিয়ে ছাত্র এবং বহিরাগতসহ গ্রেপ্তার ৫৫ করা হয়।

আরও পড়ুনবুয়েটের সনি হত্যায় সাজাভোগের পর মুশফিক অবৈধ অস্ত্র বেচাকেনায় জড়িত হন: র‍্যাব১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যেমন ছিল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। নির্বাচনের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ এবং লুটপাটের ঘটনা দেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

এসব ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা জড়িত থাকার খবর তখনকার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আন্তর্জাতিক মহলও এসব ঘটনায় উদ্বেগ জানায়; কিন্তু বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণের পরও তখন পরিস্থিতির কোনো বদল হয়নি।

বিএনপি সরকার গঠনের আট মাসের মাথায় সনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিলেও সরকার সমালোচনার মুখে পড়ে।

বুয়েটের চিঠি, সরকারের উদাসীনতা

সনি হত্যার আগে থেকেই ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তৎপরতা নিয়ে বুয়েট প্রশাসন চার দফা চিঠি দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল আইনশৃঙ্খলার অবনতির বিষয়ে; কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সে ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করলেও সাড়া মেলেনি। ওই বছরের ২৬ জুন ‘প্রথম আলো’ পত্রিকায় এ–সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করা হয়।

দুই আসামি এখনো পলাতক

ঢাকার বিচারিক আদালতে সনি হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয় ২০০৩ সালের ২৯ জুন। রায়ে ছাত্রদলের নেতা মুশফিক উদ্দিন টগর, মোকাম্মেল হায়াত খান ওরফে মুকিত ও নুরুল ইসলাম ওরফে সাগরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া পাঁচজনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

পরে ২০০৬ সালের ১০ মার্চ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের সাজা কমিয়ে তাঁদেরও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন উচ্চ আদালত। পাশাপাশি যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামির মধ্যে এস এম মাসুম বিল্লাহ ও মাসুমকে খালাস দেওয়া হয়। ওই হত্যাকাণ্ডে দণ্ডিত ছয় আসামির মধ্যে মুশফিক উদ্দিন টগর যাবজ্জীবন সাজাভোগ করেছেন। প্রধান দুই আসামি মোকাম্মেল ও নুরুল এখনো পলাতক। বাকিরা কারাগারে আছেন।  

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব। সেখানে র‍্যাব জানায়, সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলায় সাজাভোগ করা আসামি মুশফিক উদ্দিন টগর অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বেচাকেনায় জড়িত.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র হত য র প রক শ ব এনপ সরক র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

সংবেদনশীল না হলে কেউ ভালো শিল্পী হতে পারে না: জুয়েল আইচ

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রায়ই তরুণদের দেখা যায় সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে ভুগতে। ফলে অনেক সময় যথেষ্ট মেধা, আগ্রহ ও দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ক্যারিয়ারে ভালো করতে পারেন না। তরুণদের সঠিক দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা জোগাতে প্রথম আলো ডটকম ও প্রাইম ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত পডকাস্ট শো ‘লিগ্যাসি উইথ এমআরএইচ’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ রিদওয়ানুল হকের সঞ্চালনায় একাদশতম পর্বে অতিথি হিসেবে অংশ নেন বিশ্বখ্যাত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। আলোচনার বিষয় ছিল ‘শিল্প, মুক্তিযুদ্ধ এবং মানবতার সংমিশ্রণে গঠিত এক অনন্য লিগ্যাসি’।

‘মানুষ তার আশার সমান সুন্দর, বিশ্বাসের সমান বড় এবং কাজের সমান সফল। কাজই মুক্তি। তবে আশাও বড় রাখতে হবে। আশা না থাকলে কাজ হবে না।’ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে তরুণদের উদ্দেশে কথাগুলো বলেন জুয়েল আইচ। পডকাস্ট শোর এ পর্ব প্রচারিত হয় গতকাল শনিবার প্রথম আলোর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে।

পডকাস্টের শুরুতেই সঞ্চালক জানতে চান, মুক্তিযুদ্ধের শরণার্থীশিবিরে প্রথম যেদিন জাদু দেখালেন, সেই অনুভূতি কেমন ছিল?

উত্তরে জুয়েল আইচ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সব বাদ দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিই। আমরাই খুব সম্ভবত প্রথম পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিহত করি। আমি শৈশব থেকেই জাদু দেখাই। তবে মুক্তিযুদ্ধের শরণার্থীশিবিরে জাদু দেখানোর সেই অনুভূতিটি ছিল একেবারেই ম্যাজিক্যাল।’

প্রসঙ্গক্রমে সঞ্চালক জানতে চান, শিল্পকে সাহস করে অস্ত্রতে পরিণত করার এই আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে এল?

জুয়েল আইচ বলেন, ‘এটা আত্মবিশ্বাস নয়। আমি অসম্মান সহ্য করতে পারি না। আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই দেখছিলাম, তারা (পাকিস্তান) আমাদের বিভিন্নভাবে অসম্মান করে আসছে। কখনো গানে, কখনো ছবি এঁকে কিংবা কবিতার ভাষায় আমরা সব সময় এর প্রতিবাদ করে এসেছি। এভাবে করেই শেষ পর্যন্ত আমরা মুক্তিযুদ্ধে নেমে গেলাম।’

জুয়েল আইচকে কেউ বলেন ম্যাজিশিয়ান, আবার কেউ বলেন মিউজিশিয়ান। তবে জুয়েল আইচ একজন দার্শনিকও বটে। জাদুর মোহনীয়তা আর বাস্তবতার যে রূঢ় চিত্র—এই দুটো আপনার জীবনে কেমন প্রভাব ফেলেছে?

সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের উত্তরে জুয়েল আইচ বলেন, ‘বাস্তবতাকে আমরা বলে থাকি “কঠিন” আর স্বপ্ন তো আমরা আকাশসমান ভাবতে পারি। একদম রংধনুর মতো সাত রং। এই দুটোকে যদি কেউ আয়ত্ত না করতে পারে, তবে তার জীবন কিন্তু সেখানেই শেষ। সে বেঁচে থাকবে কিন্তু মরার মতো।’ তিনি বলেন, ‘সে জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দরকার। যেমন আপনি কোনোভাবেই আমাকে দুঃখী বানাতে পারবেন না। আমি দুঃখ পাই না, তবে বারবার আমাকে খ্যাপাতে থাকলে আমি রুখে দাঁড়াই।’

জুয়েল আইচ কখনোই পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ছাড়া স্টেজে ওঠেন না। সঞ্চালক জানতে চান, এর পেছনে কারণ কী?

জুয়েল আইচ বলেন, প্রস্তুতি ছাড়া কোনো কাজ সুন্দরমতো হয় না। প্রস্তুতি ছাড়া যদি কেউ কিছু করে, তবে সেগুলো অনেক নিম্নমানের হবে। তিনি বলেন, ‘আমি একটি বাঁশি দিয়ে সব রাগ বাজাতে পারি। এটা কি এক দিনেই সম্ভব!’

আপনার পারফরম্যান্সের সময় আপনি মাঝেমধ্যে নিঃশব্দ হয়ে যান। যেখানে কোনো উদ্যম নেই। এই ‘সাইলেন্স’-এর কারণটা কী?

সঞ্চালক জানতে চাইলে জুয়েল আইচ বলেন, শব্দের চেয়ে নিঃশব্দের ভাষা বেশি গভীর। একটি পেইন্টিং, যেখানে কোনো শব্দ থাকে না কিন্তু কত কিছু বলে দেয়! দেখবেন কেউ অনেক খেপে গেলে নীরব হয়ে যায়। আসলে শব্দে যা বলা যায়, নিঃশব্দে তার চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব।

বর্তমানের এই ডিজিটাল যুগে সবকিছুই হাতের নাগালে, এমনকি জাদুও। জাদু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে আসার পর এর আবেদন কিছুটা কমে যাচ্ছে কি না? জানতে চাইলে জুয়েল আইচ বলেন, খালি চোখে দেখলে তা আসলেই কমে যাচ্ছে। কারণ, এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে যে জাদুগুলো দেখানো হচ্ছে, তা দেখে মানুষ বিস্মিত। তিনি বলেন, ‘তারা ভাবছে, আমরা আগে যেসব জাদু দেখেছি, এগুলো তো তার থেকেও বিস্ময়কর। কিন্তু তারা হয়তো বুঝতে পারছে না, এখন সবকিছুর সঙ্গে মিশে গেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।’

সঞ্চালক এরপর প্রশ্ন করেন, আপনি একসময় ‘পালস স্টপিং’ ধরনের ইলিউশন বন্ধ করেছিলেন। এর পেছনে উদ্দেশ্য কী ছিল?

জুয়েল আইচ বলেন, ‘এই পালস স্টপিংয়ের মাধ্যমে আমি পুরো দেশজুড়ে এক বিস্ময় সৃষ্টি করেছিলাম। দলে দলে মানুষ এটি দেখতে আসত। কিন্তু এসব দেখে মানুষ অনেক বেশি আতঙ্কিত হতো, অনেক মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়ত। একবার একজন অনেক বড় পালোয়ান এটি দেখতে এসে অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। সেদিন শো শেষ করেই আমি আমার টিমকে বলি, এই ম্যাজিক আর হবে না। কারণ, এই ম্যাজিক এত এত মানুষকে ডেকে আনছে বটে কিন্তু এটি মাত্রা অতিক্রম করে ফেলছে। যা মোটেও ঠিক নয়।’

প্রসঙ্গক্রমে সঞ্চালক জানতে চান, তাহলে কি একজন শিল্পীকে সংবেদনশীলও হতে হয়?

‘অবশ্যই।’ জুয়েল আইচ বলেন, একজন শিল্পীকে অবশ্যই সংবেদনশীল হতে হবে। সংবেদনশীল না হলে তিনি ভালো শিল্পী হতে পারবেন না।

আপনি যেমন বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের সামনে পারফর্ম করেছেন, তেমনি এমন শিশুদের জন্যও জাদু দেখিয়েছেন, যারা কখনো টিকিট কিনে শো দেখতে পারে না। আপনার চোখে আসল মর্যাদা কোথায়—বৃহৎ মঞ্চে, নাকি একটিমাত্র বিস্মিত মুখে?

সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে জুয়েল আইচ বলেন, ‘আসলে মঞ্চ ব্যাপার নয়। আমি আমার জাদুতে বিস্মিত এবং মুগ্ধ হয়ে থাকা দেখতে ভালোবাসি। শুধু বিস্ময় নয়, বিস্ময়ের সঙ্গে মুগ্ধতা আমার ভালো লাগে।’

আরও পড়ুননীতি আর মূল্যবোধ শক্ত থাকলে কেউ থামাতে পারবে না: রুবাবা দৌলা১২ অক্টোবর ২০২৫

পডকাস্টের শেষ পর্যায়ে সঞ্চালক জানতে চান, আমরা আরেকজন জুয়েল আইচ কবে পাব?

মুচকি হেসে জুয়েল আইচ বলেন, ‘যখন সেই উদ্যম নিয়ে কেউ কাজ করবে, ঠিক তখন। সে হয়তো আমাকেও ছাড়িয়ে যাবে। শুধু ম্যাজিকে নয়, সব দিক দিয়েই।’

আরও পড়ুনবাবা প্রথমে আমাকে অফিস সহকারীর কাজ দিয়েছিলেন: হাতিলের চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান০৫ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প
  • এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী কারা, কীসের ব্যবসা তাঁদের
  • করদাতা মারা গেলেও যে কারণে কর দিতে হয়, কীভাবে দেওয়া হয়
  • ৩ কোটি টাকা, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজসহ আরও যা যা পান একজন মিস ইউনিভার্স
  • গায়িকা থেকে বিধায়ক, মৈথিলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী চমকে ওঠার মতো
  • সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস
  • বিএনপি নেতা খুন: অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ফেসবুকে লিখলেন ‘আউট’
  • সাজা হলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘কনভিকশন ওয়ারেন্টের’ আবেদন করা হবে
  • সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
  • সংবেদনশীল না হলে কেউ ভালো শিল্পী হতে পারে না: জুয়েল আইচ