Prothomalo:
2025-11-17@10:24:39 GMT

রাজশাহীতে আইনি ব্যবস্থা নিন

Published: 1st, October 2025 GMT

কৃষি বিভাগ যখন উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে চাষিদের ডিএপি (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার ব্যবহারে উৎসাহিত করছে, ঠিক তখনই মাঠপর্যায়ের চিত্রটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকেরা সরকারি নির্ধারিত দামে এই সার পাচ্ছেন না। অভিযোগ উঠেছে, পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও পরিবেশকেরা (ডিলার) কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রান্তিক চাষিদের বাধ্য করছেন খোলাবাজার থেকে তিন গুণ বেশি দামে সার কিনতে। এই পরিস্থিতি কেবল কৃষকের উৎপাদন খরচই বাড়াচ্ছে না, বরং সরকারের কৃষি সহায়তা কর্মসূচির উদ্দেশ্যকেই ম্লান করে দিচ্ছে।

রাজশাহী জেলার জন্য সেপ্টেম্বর মাসে ২ হাজার ৫২১ মেট্রিক টন ডিএপি সার বরাদ্দ করা হয়েছিল। কৃষি বিভাগ বারবার সারের পর্যাপ্ত সরবরাহের দাবি জানালেও কৃষকেরা ডিলারদের গুদামে গিয়ে ‘সরবরাহ শেষ’ এই অজুহাত শুনছেন। অন্যদিকে স্থানীয় খুচরা দোকানগুলোতে ‘বাংলা ডিএপি’ প্রতি বস্তা ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে সরকার নির্ধারিত মূল্য মাত্র ১ হাজার ৫০ টাকা। অর্থাৎ, চাষিরা প্রতি বস্তায় প্রায় ১ হাজার ২৫০ টাকা বেশি দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

এই সংকট স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে তদারকির অভাবে সরকারি ভর্তুকির সার ডিলারদের গুদাম থেকে সরাসরি খুচরা বিক্রেতা ও কালোবাজারিদের হাতে চলে যাচ্ছে। তানোরের এক ডিলারের গুদামে সার থাকা সত্ত্বেও একজন কৃষককে ‘ইউরিয়া ছাড়া আর কোনো সার নেই’ বলে ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনা কেবল অনিয়ম নয়, এটি প্রান্তিক চাষিদের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, কৃষকেরা কেন সরাসরি কৃষি অফিসে অভিযোগ না করে সাংবাদিকের কাছে যাচ্ছেন। তাঁর এমন প্রতিক্রিয়া দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার শামিল। মাঠপর্যায়ের চিত্র যখন স্পষ্ট বলছে যে ডিলাররা সরাসরি নিয়ম লঙ্ঘন করছেন, তখন কৃষি অফিসের উচিত ছিল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদারকি জোরদার করা। কিন্তু তিনি যেভাবে কৃষকদের প্রতি ক্ষোভ
প্রকাশ করলেন, তা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। সার নিয়ে এমন অনিয়ম নতুন নয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভালোভাবেই এ বিষয়ে অবগত। এমনকি এমন অভিযোগও আছে, সার নিয়ে অনিয়মের সঙ্গে একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাও জড়িত।

সার নিয়ে অনিয়মের অভিযোগের ক্ষেত্রে ডিলারদের লাইসেন্স অবিলম্বে বাতিল করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। ডিলাররা কোন কৃষককে কী পরিমাণ সার দিচ্ছেন, তার তালিকা এবং কৃষকের মোবাইল নম্বরসহ একটি স্বচ্ছ ডেটাবেজ তৈরি করে নিয়মিত তদারক করতে হবে।

কৃষি কর্মকর্তাদের অবশ্যই অফিসে বসে না থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের গুদামে অভিযান চালিয়ে মজুত ও বিক্রির মূল্য যাচাই করতে হবে। এখন আমরা দেখতে চাই রাজশাহী অঞ্চলে সারের অনিয়ম ঠেকাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%

এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের

থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।

থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।

সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এফএওর সূচক কমেছে

প্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।

চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের

অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে আশুগঞ্জ সার কারখানায় সমাবেশ 
  • সরবরাহ বাড়ছে শীতের আগাম ফুলকপি ও বাঁধাকপির, কমছে দাম
  • গ্রিস থেকে গ্যাস আমদানিতে সম্মত ইউক্রেন: জেলেনস্কি
  • থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
  • ইউক্রেনের হামলা: নভোরো-সিয়েস্ক বন্দরের তেল রপ্তানি বন্ধ করল রাশিয়া
  • চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে
  • জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলার বরাদ্দ অর্থের বেশিরভাগ পাচ্ছে উষ্ণায়নে দায়ী দেশগুলো