ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল ‘লাইভ-স্ট্রিমড গণহত্যা’ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সোমবার গ্রিসে পৌঁছানোর পর তিনি এই মন্তব্য করেন। খবর সাবাহ নিউজের।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আটক অবস্থায় থুনবার্গকে নির্যাতন ও ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খেতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে।

আরো পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্রথম দফার আলোচনা ‘ইতিবাচক’

অস্ত্র সমর্পণে সম্মত হওয়ার খবর ‘বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’: হামাস

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে ৪০টিরও বেশি নৌযানে ত্রাণ নিয়ে গাজায় যাওয়ার সময় আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে গত বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ৪৭৯ জনকে আটক করে ইসরায়েল। আটক এসব অধিকারকর্মীর মধ্যে সোমবার গ্রেটা থুনবার্গসহ আরো ১৭১ জনকে গ্রিস এবং স্লোভাকিয়ায় ফেরত পাঠায় ইসরায়েল। 

থুনবার্গ ও অন্য অধিকারকর্মীরা সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে পৌঁছান। এথেন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেটাসহ অন্য অধিকারকর্মীদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তাদের সমর্থকেরা। সে সময় অনেকের হাতেই ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।

এথেন্সের এলিফথেরিওস ভেনিজেলোস বিমানবন্দরে বক্তব্য রাখেন থুনবার্গ। তিনি বলেন, “আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারাগারে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন সম্পর্কে আমি অনেকক্ষণ কথা বলতে পারি, বিশ্বাস করুন। কিন্তু গল্পটা আসলে সেটা নয়। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের চোখের সামনেই (গাজায়) একটা গণহত্যা চলছে, লাইভ-স্ট্রিমড (সরাসরি সম্প্রচারিত) গণহত্যা।” 

থুনবার্গ বলেন, “আজ কেউ এই অজুহাত দিতে পারবে না যে তারা জানত না (গাজায়) কী ঘটছে। ভবিষ্যতেও কেউ বলতে পারবে না- ‘আমরা জানতাম না’।”

থুনবার্গ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আরো বলেন, “তারা ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ‘একটি পুরো জাতিকে মুছে ফেলতে চায়’।”

তিনি বলেন, “গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।”

থুনবার্গ আরো বলেন, “আমি কখনও বুঝতে পারব না মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে কীভাবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখা হচ্ছে- যারা বছরের পর বছর অবরোধ, নিপীড়ন ও বর্ণবৈষম্যের মধ্যে বন্দি।”

সুইডিশ এই অধিকারকর্মী জোর দিয়ে বলেন, “ইসরায়েল গণহত্যা থেকে কোনো দায়মুক্তি পেতে পারে না।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল থ নব র গ ইসর য় ল গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় ভয়াবহ হামলা ইসরায়েলের, নিহত ২৫

গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো ৭৭ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) গাজার বেশ কয়েকটি এলাকায় ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে। আইডিএফ দাবি করেছে,  দক্ষিণ গাজার রাফায় তাদের বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আরো ৩ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আহত বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, গাজা শহরের শুজাইয়া পাড়ার একটি বাড়ি লক্ষ্য করে কামানের গোলাবর্ষণের মাধ্যমে আক্রমণ শুরু হয়েছিল, যার ফলে একজন তরুণ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

তিনি আরো জানান, একই পাড়ায় একটি বেসামরিক সমাবেশে আরেকটি হামলায় আরো একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও আরো কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।

মুখপাত্র জানান, গাজা শহরের জেইতুন পাড়ায় অবস্থিত গাজার এনডাওমেন্টস মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরেও ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় এক গর্ভবতী নারী এবং একটি মেয়ে সহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

তিনি জানান,  দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একদল বেসামরিক নাগরিকের উপর ইসরায়েলি হামলায় তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

আনাদোলুর একজন সংবাদদাতার মতে, ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে এলাকা থেকে সরে এসেছিল, সেই এলাকাগুলোতে এই হামলা চালানো হয়েছে।

হামাস ইসরায়েলের এই হামলাকে ‘ভয়াবহ গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুদ্ধবিরতির মধ্যে ইসরায়েল ধারাবাহিকভাবে হামলার মাত্রা বাড়িয়ে চলেছে। যুদ্ধাপরাধী (প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন) নেতানিয়াহু আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা পুনরায় শুরু করতে চাইছেন।” 

হামাস ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর গুলি চালানোর বিষয়ে ইসরায়েলি দাবিকে ‘ইসরায়েলের অপরাধ ও যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘনকে ন্যায্যতা দেওয়ার একটি দুর্বল ও উন্মুক্ত প্রচেষ্টা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির গ্যারান্টিদাতা হিসেবে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতারকে যুদ্ধবিরতির জন্য হুমকিস্বরূপ লঙ্ঘন বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের ওপর অবিলম্বে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের মতামত গুরুত্বহীন: সারজিস আলম
  • যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় ভয়াবহ হামলা ইসরায়েলের, নিহত ২৫
  • জুলাই গণহত্যার বিচার যেন প্রতিহিংসার বা প্রতীকী না হয়: সিপিবি