নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিষয়ে সিইসি বললেন, ‘সময় আসুক’
Published: 11th, January 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, ‘আমাদের কাজ হলো যখন আমরা শিডিউল ঘোষণা করি, তার আগে নিবন্ধিত যে কয়টি দল থাকে, তাদের মধ্যে সুন্দর একটা নির্বাচন আয়োজন করা। সময় আসুক, দেখবেন কারা কারা নিবন্ধিত অবস্থায় থাকে। যারা যারা থাকবে, তাদের নিয়ে নির্বাচন করব। অপেক্ষা করুন, আমরাও অপেক্ষা করি।’
আজ শনিবার সকালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সিলেটের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শুরুর আগে এ কথাগুলো বলেন সিইসি। সিলেট সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে এই মতবিনিময় সভা হয়।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন কবে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমি সফরে ছিলাম, মৌলভীবাজার থাকা অবস্থায় পত্রিকায় খবরটি দেখেছি। বিস্তারিত জানি না। ঢাকা ফিরে গিয়ে কমিশনে আলাপ–আলোচনা করে পরে এটা নিয়ে রিঅ্যাকশন দেব, আমি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাই না।’
এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘একটি বিষয় ক্ল্যারিফাই করা খুব প্রয়োজন মনে করছি। পত্রপত্রিকায় দেখছি, অনেকে বলছেন যে এক দিনে সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার সুপারিশ কেউ কেউ করছেন। বিষয়টি আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, এটা কোনোমতেই সম্ভব নয়। এটা বাস্তবায়নযোগ্য কোনো পরামর্শ নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচন মানে পাঁচ স্তরের নির্বাচন। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা, জেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ। আমাদের সিটি করপোরেশন ১২টি, পৌরসভা ৩৩০টি, তিনটি পার্বত্য জেলা বাদে জেলা ৬১টি, উপজেলা ৪৯৫টি ও ইউনিয়ন ৪ হাজার ৫৯৫টি, সব কটি নির্বাচন এক দিনে করা! আমাদের জন্য আদৌ গ্রহণযোগ্য একটা সুপারিশ নয়, এটা বাস্তবায়নযোগ্য নয়।’
জাতীয় নির্বাচন কবে হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বরের ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় নির্বাচনের টাইম ফ্রেম নিয়ে, সেটা মাথায় রেখে ইসি কাজ করছে। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ওনার বক্তব্য অনুযায়ী যাতে আমরা নির্বাচন করতে পারি, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমে হবে না বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘ইভিএমের মাধ্যমে করার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন এখনো পাইনি। প্রতিবেদনটি পাওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’