এক আদালতে জরিমানার পর এবার আরেকটিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল, চুমু কাণ্ডে জেরবার রুবিয়ালেস
Published: 22nd, February 2025 GMT
বিশ্বকাপ ফাইনালের পুরস্কারমঞ্চে চুমু কাণ্ডের ঘটনায় স্পেনের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর এবার আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতেও হেরেছেন লুইস রুবিয়ালেস। স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) এই সাবেক সভাপতিকে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ৩ বছরের যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, আপিল শুনানি শেষে তা বহাল রেখেছেন কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্ট (সিএএস)।
রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে খেলাধুলা অঙ্গনের সর্বোচ্চ আদালতের রায় এসেছে এমন সময়ে, যার এক দিন আগে স্পেনের উচ্চ আদালত সম্মতিবিহীন চুমুর জন্য তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ হাজার ইউরো জরিমানা করেছেন।
২০২৩ সালের আগস্টে সিডনিতে ফিফা নারী বিশ্বকাপের ফাইনালের পুরস্কারমঞ্চে স্পেনের হেনি হেরমোসোকে চুমু খান রুবিয়ালেস। এ ঘটনায় তৎকালীন আরএফইএফের সভাপতি রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে সম্মতিবিহীন চুমুর অভিযোগ আনেন হেরমোসো। যার জেরে স্পেন ও বিশ্ব ফুটবলে তোলপাড় উঠলে অক্টোবরে রুবিয়ালেসকে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে ফিফা।
নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রুবিয়ালেস আপিল করলে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর তিনি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে যান, যেটির রায় এসেছে শুক্রবার। রায়ে বিশ্বকাপ ফাইনালের পুরস্কার মঞ্চে রুবিয়ালেসের আচরণে ‘ফিফা ডিসিপ্লিনারি কোডের একাধিক এবং গুরুতর লঙ্ঘন ঘটেছে’ উল্লেখ করে আপিল আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার স্পেনের উচ্চ আদালত সম্মতি ছাড়া হেরমোসোকে চুমুর ঘটনায় রুবিয়ালেসকে যৌন হয়রানির ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেন। পাশাপাশি আগামী এক বছরের মধ্যে হেরমোসোর সঙ্গে যোগাযোগ বা তাঁর ২০০ মিটার অঞ্চলের মধ্যে অবস্থানেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে একই রায়ে হেরমোসোকে তাঁর বক্তব্য থেকে সরিয়ে আনতে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ থেকে রুবিয়ালেসকে খালাস দেওয়া হয়।
যদিও শুক্রবার হেরমোসোর আইনজীবী আনহেল চাবারিয়া বলেছেন, তাঁর মক্কেল চাপ প্রয়োগ বিষয়ক রায়ে আপিল করবেন। তার আগে সম্মতিবিহীন চুমোতে দোষী সাব্যস্তের বিষয়ে আপিল করার কথা বলেছিলেন রুবিয়ালেসের আইনজীবীও।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
রাজধানীর রমনা থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম ও এস এম গোলাম মোস্তফা আজাদকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত এনায়েত করিম চৌধুরী ও এস এম গোলাম মোস্তফাকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মাসুদ ও মোস্তফাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিমকে গত সোমবার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বাস্তবে তিনি র-এর (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এজেন্ট। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার মিশন নিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। সেটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হলে তাঁর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আরও অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে। এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিমসহ আর কারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, সেটি জানার জন্য তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অপরদিকে এনায়েত করিম চৌধুরীর পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি ৬ সেপ্টেম্বর দেশে এসেছেন, তাঁর আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার কথা ১৪ সেপ্টেম্বর। তিনি বাংলাদেশে এসে গুলশানে অবস্থান করছিলেন।
এনায়েত করিম চৌধুরীর আইনজীবী ফারহান এমডি আরাফ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর মক্কেল কোনোভাবেই জড়িত নন। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি কোনোভাবে যুক্ত নন।
এর আগে গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরীকে (৫৫) সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার সকালে রাজধানীর মিন্টোরোড থেকে এনায়েত করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়। তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তিনি মার্কিন নাগরিক।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এনায়েত করিম নিজেকে মাসুদ করিম নামে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। এই পরিচয়ে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখান। ২০১৮ সালের ভোটের আগেও তিনি একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেশের বাইরে বৈঠক করেন।
পুলিশ বলছে, গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরী প্রাডো গাড়িতে করে মিন্টোরোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গাড়ি থামিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে তাঁকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম বলেছেন, বর্তমান সরকার পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার গঠনে কাজ করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খুব নাজুক অবস্থায় আছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গেও এই সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করতে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি উচ্চ ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।