রেফারি বিতর্কে ফাইনাল বয়কটের হুমকি রিয়ালের
Published: 25th, April 2025 GMT
কোপা দেল রে ফাইনালের আগে রীতিমতো উত্তাল স্প্যানিশ ফুটবল। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচের রেফারি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে শিরোপা লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। শুধু তাই নয়, বার্সেলোনার বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে নামার আগে শুক্রবার নির্ধারিত অনুশীলন সেশন ও সংবাদ সম্মেলনও বাতিল করেছে ক্লাবটি। একইসঙ্গে ক্লাব সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজও জানিয়ে দিয়েছেন, রেফারি বিতর্কে ক্লাব ডিনারে অংশগ্রহণ করবে না তার দল।
শনিবার দিবাগত রাতে সেভিয়ার লা কার্তুজা স্টেডিয়ামে মাঠে গড়ানোর কথা মৌসুমের অন্যতম মর্যাদার এই ‘এল ক্লাসিকো’ ফাইনাল। ম্যাচের আগে দুই ক্লাবের উন্মুক্ত অনুশীলন ও সংবাদ সম্মেলনের পরিকল্পনা থাকলেও রেফারিং বিতর্কের কারণে রিয়াল পুরোপুরি ক্ষুব্ধ।
বিতর্কের সূত্রপাত শুক্রবার, যখন ম্যাচের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেফারি রিকার্দো দে বুরহোস বেনগোয়েচিয়া ও ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি পাবলো গঞ্জালেজ ফুয়ের্তেস এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন। সেখানে আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন দে বুরহোস। তিনি অভিযোগ করেন, সম্প্রতি রেফারিদের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য মানসিক চাপ ও ব্যক্তিগত আক্রমণ বেড়েই চলেছে, যা সহ্য করা কঠিন।
দে বুরহোস বলেন, ‘যখন আপনার নিজের সন্তান স্কুলে গিয়ে শুনে তার বাবা একজন ‘চোর’, তখন সে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে আসে। এটা খুবই কষ্টদায়ক। আমি আমার ছেলেকে বোঝানোর চেষ্টা করি, তার বাবা একজন সৎ মানুষ, যে ভুল করলেও সেটা ইচ্ছাকৃত নয়। আমি একজন ক্রীড়াবিদের মতোই, মানুষ হিসেবে ভুল হতেই পারে। এমন আচরণ শুধু পেশাদার ফুটবলে নয়, শিকড়ের স্তর পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি—ভাবুন তো, আমরা কোথায় যাচ্ছি, ক্রীড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী হওয়া উচিত?’
ভিডিও রেফারি গঞ্জালেজ অবশ্য আবেগী কথা না বলে আরও কড়া সুরে বলেন, ‘আমরা চুপ করে থাকব না। এখন সময় এসেছে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার। এটা বন্ধ না হলে, আমাদেরকেও পদক্ষেপ নিতে হবে। খুব শিগগিরই আপনারা আমাদের অবস্থান জানতে পারবেন। ইতিহাসে এমন সিদ্ধান্ত হয়তো আগে আসেনি।’
এদিকে রিয়াল মাদ্রিদের দাবি, এমন আবেগঘন অবস্থায় থাকা রেফারিরা ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ পরিচালনার জন্য উপযুক্ত নন। তাই তারা রেফারি বদলের অনুরোধ জানায় স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছে। কিন্তু ফেডারেশন সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দেয়, রেফারিংয়ের সিদ্ধান্তে ক্লাবগুলোর হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।
এর প্রতিবাদেই রিয়াল তাদের পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন ও অনুশীলন বাতিল করে দেয়। স্প্যানিশ দৈনিক মার্কার খবরে বলা হয়, রিয়াল শিবিরে ক্ষোভ এতটাই তীব্র যে তারা ম্যাচে অংশ নাও নিতে পারে। যদিও এমনটা নাও হতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে ক্লাবের মধ্যে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদ টিভি আবারও রেফারি দে বুরহোসকে ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে এক বিতর্কিত প্রতিবেদন প্রচার করেছে। অপরদিকে, বার্সেলোনা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক এই অবস্থানকে সমালোচনা করে বলেন, ‘রেফারিদের ওপর এভাবে চাপ তৈরি করা ফেয়ার প্লের নীতির পরিপন্থী।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত ৪
কুমিল্লায় চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মো. বশির আহমেদ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর মো. বশির আহমেদ বলেন, “গত দুইদিনে তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আজ শনিবার আরো একজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।”
তিনি বলেন, “আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কুমিল্লা নগরের, কেউ জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। সবার নমুনা কুমিল্লা নগরের একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করা হয়েছিল।”
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে আরো ১ জনের করোনা শনাক্ত
কিট সংকটে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা বন্ধ
ডা. বশির আহমেদ বলেন, “আক্রান্তদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। দুইজন ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। একজনের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর বেশ কিছুদিন কুমিল্লায় নতুন করে সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। ফলে অনেকটাই স্বস্তিতে ছিলেন নগরবাসী। হঠাৎ একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জনমনে আবারো আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই মাস্ক পরছেন এবং সাবধানতা অবলম্বনের চেষ্টা করছেন। তবে, গণপরিবহন, বাজার কিংবা ওষুধের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার তেমন প্রবণতা দেখা যায়নি।
কুমিল্লা শহরের বাসিন্দা আমেনা আক্তার বলেন, “আবার যেন সেই দিনগুলো ফিরে আসছে। দোকান-বাজারে মাস্ক ছাড়া মানুষ চলাফেরা করছে। আমরা তো আরেক দফা লকডাউনের ভয়ে আছি।”
সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ানোর পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরির জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে প্রচার অভিযান চালানো হবে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডাক্তার সানজিদুর রহমান বলেন , “করোনা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। হঠাৎ সংক্রমণ বৃদ্ধির ঘটনা অবহেলার সুযোগ নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে অবস্থা জটিল হতে পারে।”
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কুশ বড়ুয়া বলেন, “করোনার বর্তমান পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে প্রয়োজনে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ