তৈরির পোশাক কারখানার উচ্ছিষ্ট (ঝুট) মজুতের গুদাম থেকে সৃষ্ট আগুনে গাজীপুরে পুড়েছে ১০-১২টি গুদাম ও একটি সুতা তৈরির কারখানার অংশ। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে মহানগরের কোনাবাড়ী থানাধীন দেওলিয়াবাড়ী গ্রামের বেলতলা এলাকায় এই আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিটের কর্মীরা ৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দুপুর ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে প্রায় আট কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ঝুট গুদামের মালিকরা।
এলাকাবাসী জানান, শুরুতে আসাদুল ইসলামের মালিকানাধীন গুদামে আগুন লাগে। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে রুস্তম আলী, তানভীর হাসান, ইসমাইল হোসেনসহ ১২ জনের ভিন্ন ভিন্ন গুদামে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের সুতা তৈরির কারখানা বায়জান লিমিটেডের দ্বিতীয় তলায়। সেখানে রাখা ঝুট, সুতা ও অন্যান্য পণ্যও পুড়ে যায়।
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আগুন দেখে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পুরো এলাকা। অনেকে বাসাবাড়ি থেকে মালপত্র সরিয়ে নেওয়াও শুরু করেন। দুপুর দেড়টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে আগুনের তীব্রতা কমতে থাকে। এ সময় আগুন নেভানোর জন্য স্থানীয় লোকজনও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন।
ক্ষতির শিকার ঝুট ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম ও রুস্তম আলীর ভাষ্য, তাদের সবগুলো গুদামে মজুত ছিল অন্তত আট কোটির টাকার পণ্য। অনেকেই ব্যাংকঋণ নিয়ে ব্যবসা করছিলেন। আগুনে সব পুড়ে গেছে। এখন আর কিছুই নেই তাদের।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সংবাদ পেয়ে শুরুতে ঘটনাস্থলে আসেন কোনাবাড়ী মর্ডান ফায়ার সার্ভিস, কাশিমপুর ডিবিএল ফায়ার সার্ভিসসহ তিনটি ইউনিটের সদস্যরা। আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় গাজীপুর থেকে আরও তিনটি ইউনিটের কর্মীরা যোগ দেন। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় দুপুর ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে প্রায় আট কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করছেন তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন আগ ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিকাশ অ্যাপে এখন পাওয়া যাচ্ছে রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ব্যবস্থাপনা আরও সহজ ও স্বচ্ছ করতে বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হয়েছে নতুন ‘রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট’ সেবা। এই সুবিধার মাধ্যমে গ্রাহকেরা যেকোনো সময় তাঁদের অ্যাকাউন্ট বা হিসাবে গ্রহণ করা রেমিট্যান্সের বিস্তারিত বিবরণ বা স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করতে পারবেন। এতে তাঁদের আর্থিক হিসাব রাখা সহজ, দ্রুত ও সুশৃঙ্খল হবে।

এই স্টেটমেন্ট তথা রেমিট্যান্স হিসাবের বিস্তারিত বিবরণ শুধু ব্যয় পরিকল্পনার জন্যই নয়, আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে কাজ করবে। প্রবাসীদের প্রিয়জনদের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে বিকাশ এই সেবা চালু করেছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। এতে বলা হয়, গ্রাহকবান্ধব এই নতুন ফিচারটি বিকাশ অ্যাপের ‘রেমিট্যান্স’ আইকনের অধীন পাওয়া যাবে, যেখানে তিনটি আলাদা ট্যাব রয়েছে—দেশ অনুযায়ী অপারেটর, রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট ও রিসিট। এর মধ্যে রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট ট্যাবে ট্যাপ (ক্লিক) করে গ্রাহকেরা খুব সহজেই রেমিট্যান্সের বিস্তারিত বিবরণ (স্টেটমেন্ট) জানতে পারবেন।

স্টেটমেন্টের সময়সীমা নির্বাচনেও রয়েছে নমনীয়তা। ব্যবহারকারী চাইলে সর্বশেষ ৩০ দিন, ১৮০ দিন এবং সম্পূর্ণ কর-বছর অথবা নিজের পছন্দ অনুযায়ী দেওয়া তারিখের ভিত্তিতে রেমিট্যান্স স্টেটমেন্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ দুবার এবং মাসে সর্বোচ্চ পাঁচবার স্টেটমেন্ট রিকোয়েস্ট করতে পারবেন। রিকোয়েস্ট করার পর সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অ্যাপে নোটিফিকেশন চলে আসবে। তখন স্টেটমেন্টটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে। গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্টেটমেন্টটি পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। আর এই পুরো সেবাটি গ্রাহকেরা একেবারেই বিনামূল্যে পাবেন।

স্টেটমেন্টের ওপরের অংশে থাকবে গ্রহীতার নাম, বিকাশ নম্বর, গ্রহীতার ধরন, স্টেটমেন্টের সময়সীমা ও ইস্যুর তারিখ। নিচের অংশে দেখা যাবে মোট কতটি রেমিট্যান্স লেনদেন হয়েছে এবং সে অনুযায়ী মোট কত ডলার গ্রহণ করা হয়েছে।

এই স্টেটমেন্টে শুধু রেমিট্যান্সের মোট পরিমাণ ছাড়াও প্রতিটি লেনদেনের বিস্তারিত তথ্যও অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে থাকছে। অর্থাৎ অন্যান্য আর্থিক লেনদেনের মতো রেমিট্যান্স গ্রহণের তারিখ ও সময়, পাঠানোর দেশ, সংশ্লিষ্ট সেটেলমেন্ট ব্যাংকের নাম, মানি ট্রান্সফার অপারেটরের (এমটিও) নাম এবং পাঠানো রেমিট্যান্সের বাংলাদেশি টাকায় সমপরিমাণ মূল্য স্পষ্টভাবে দেখানো হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসা সব রেমিট্যান্সেরই বিস্তারিত তারিখ অনুসারে স্টেটমেন্টে যুক্ত থাকবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিকাশ জানায়, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সকে সহজ, সুরক্ষিত ও কার্যকরভাবে প্রিয়জনের হাতে পৌঁছে দিতে বিকাশ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। প্রবাসীর পাঠানো রেমিট্যান্স সবচেয়ে সহজে তাঁর প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে দিতে ধারাবাহিকভাবে নানা সুবিধা যুক্ত করে চলেছে বিকাশ। দেশে থাকা পরিবারের জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো এই রেমিট্যান্স বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করে দেশের অর্থনীতিকেও গতিশীল করছে।

বিকাশ জানায়, এখন পর্যন্ত দেশে থাকা প্রিয়জনদের ৪০ লাখের বেশি বিকাশ অ্যাকাউন্টে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমানে বিশ্বের ১৪০টির বেশি দেশ থেকে ১১০টি আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরের (এমটিও) মাধ্যমে বাংলাদেশের ২৫টি শীর্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংকে রেমিট্যান্স সেটেলমেন্ট হয়ে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে প্রাপকের বিকাশ অ্যাকাউন্টে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ