দুর্গন্ধ পেয়ে বসতঘরের দরজা খুলে লাশ পেলেন প্রতিবেশীরা
Published: 4th, May 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় দুর্গন্ধ পেয়ে বসতঘর থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার দেবগ্রামের মধ্যপাড়া নিজ বসতঘর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মৃত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল মিয়া (৩৮)। তিনি উপজেলার পৌরসভার দেবগ্রামের বাসিন্দা মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। তাঁর স্ত্রী চট্টগ্রামে থাকেন। তাঁদের আট বছরের একটি মেয়েসন্তান রয়েছে। তোফাজ্জল দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে দেবগ্রামের মধ্যপাড়ার কাদির মোল্লার বাড়ির পাশে তোফাজ্জলের বসতঘর থেকে দুর্গন্ধ হচ্ছিল। এতে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। পরে তাঁরা দরজা খুলে বসতঘরের মেঝেতে তোফাজ্জলের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে আখাউড়া থানা–পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। তোফাজ্জল নিজের বসতঘরে একাই থাকতেন। কারও সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না। সব সময় একই পোশাক পরতেন ও অস্বাভাবিক আচরণ করতেন।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে হত্যার পর নিহত নারীর জানাজায় অংশ নিয়েছিলেন খুনি
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বসতঘরের ভেতর বৃদ্ধ নারী সেতারা বেগমকে (৭০) গলা কেটে হত্যার পর তাঁর জানাজায়ও অংশ নিয়েছিলেন খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. মাহফুজুন নবী (৩৩)। সেতারা বেগম হত্যা মামলার দুই আসামি মাহফুজ ও মোরশেদ আলমকে (৩২) গ্রেপ্তারের পর ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারে পুলিশ।
স্থানীয় লোকজনের তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে সেতারা বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় ওই নারী বাড়িতে একা ছিলেন। লাশ উদ্ধারের সময় নারীর বসতঘরের এক পাশে সিঁধ কাটা দেখা যায়। যার ভিত্তিতে পুলিশের ধারণা ছিল, চুরি করতে আসা ব্যক্তিদের চিনে ফেলায় ওই নারীকে হত্যা করা হতে পারে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত নারীর ছেলে মো. রুমন বাদী হয়ে মাহফুজ ও মোরশেদকে আসামি করে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
সেতারা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মাহফুজের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার বিনয়নগর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম নুর নবী খোকন। মাহফুজ নিহত সেতারা বেগমের আত্মীয় ছিলেন। অপর আসামি মোরশেদ আলম মাহফুজের বন্ধু। তিনি বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আজ শনিবার ভোর সোয়া চারটার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর এলাকা থেকে প্রথমে মোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা বাজার থেকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম সেতারা বেগম হত্যার ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। বিকেলে তাঁরা নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দোষ স্বীকার করে দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে ওসি মোরশেদ আলম জানান, আসামি মাহফুজুন নবীর বোনকে বিয়ে করেছিলেন সেতারা বেগমের ছেলে। বেশ কয়েক বছর আগে তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। মাহফুজ কিছুটা অর্থের কষ্টের মধ্যে পড়েন। যার কারণে তিনি সেতারার বাড়িতে চুরি করার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাহফুজ তাঁর বন্ধু মোরশেদ আলমসহ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সোনাইমুড়ীর সোনাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে সেতারা বেগমের বাড়িতে যান। দুই আসামি ঘরের সিঁধ কেটে ভেতরে ঢোকেন। এরপর ঘরের মালামাল চুরির সময় সেতারা বেগমের ঘুম ভেঙে যায়। তিনি চিৎকার দিতে চাইলে মাহফুজ তাঁকে ঘটনাটি কাউকে না জানাতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সেতারা তাতে রাজি হননি। একপর্যায়ে মাহফুজ ও মোরশেদ ঘর থেকে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর তাঁরা আবার ঘরে ঢুকে সেতারাকে হত্যা করেন।
ওসি মোরশেদ আলম জানান, আসামি মাহফুজ হত্যাকাণ্ডের পর সোনাইমুড়ী এলাকাতেই ঘোরাফেরা করেছিলেন। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার রাতে বাড়িতে অনুষ্ঠিত জানাজায়ও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ঘটনার সময় খোয়া যাওয়া সেতারা বেগমের মুঠোফোনের সূত্র ধরে প্রথমে মোরশেদ আলমকে, পরে মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মোরশেদ আলমের বাড়ি থেকে চুরি করে নেওয়া মুঠোফোন, কয়েকটি শাড়ি, জামাকাপড় ও একটি সাউন্ড বক্স উদ্ধার করা হয়।