বেঁচে আছে বজ্রপাতে আহত স্কুলছাত্রী বর্ষা
Published: 7th, May 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরটেকীর নামাপাড়া এলাকায় মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে বজ্রপাতে তিন স্কুলছাত্রী নিহত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
খবরটি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিলেন চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আমিনুল হক।
তিনি জানিয়েছিলেন পাকুন্দিয়া উপজেলার চরটেকী গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে ইরিনা (১৫), বাদল মিয়ার মেয়ে প্রিয়া (১৫) এবং বোরহান উদ্দিনের মেয়ে বর্ষা (১৫) বজ্রপাতে নিহত হয়েছে।
তবে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়- তিন জন নয়, নিহত হয়েছে দুজন। তারা হলো- ইরিনা ও প্রিয়া। বর্ষা গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে বর্ষা কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ষষ্ট তলায় মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বর্ষার স্বজনরা জানান, তিনজন একসাথে স্কুল থেকে আসার পথে বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়। পরে, স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইরিনা ও প্রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্ষাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
হাসপাতালে নেওয়ার সময় বর্ষা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিল। তার অবস্থা দেখে স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে মৃত মনে করেন। এসময় স্বজনরা বর্ষাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি শুরু করে। তবে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাকে জীবিত দেখতে পান। এর আগেই বর্ষার মৃত্যু সংবাদ গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটায় কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক ডা.
ঢাকা/রুমন/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাঁধ রক্ষা পাইলিংয়ে নিম্নমানের সামগ্রী, তথ্য দিতে নারাজ পাউবো
বিষখালী নদী তীরবর্তী ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় বেড়িবাঁধ রক্ষার পাইলিংয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেলে মাটির ধসে পড়া বেড়িবাঁধ রক্ষায় পাইলিংয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে পুরাতন গাছ ও শুকনো চিকন বাঁশ। তাও আবার কোনো রকমে বসিয়ে পাইলিং করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে বেড়িবাঁধ ও পাইলিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কোন তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, কাঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদী তীরবর্তী লঞ্চঘাট এলাকায় বেলে মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি উপকূলীয় এলাকায় বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড় ‘শক্তি’র প্রভাবে সেই মাটির বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। ধস ঠেকাতে জরুরি মেরামত প্রকল্পে বেড়িবাঁধের প্রাক্কলন তৈরি করে ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বরিশালের জনৈক কালাম হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে এই কাজের ঠিকাদারী দেওয়া হয়। বালু মাটির বাঁধ উভয় পাশেই ধসে পড়ছে। নদী তীরবর্তী পাড়ে ধসে পড়া বেড়িবাঁধ রক্ষায় উদ্যোগ না নিয়ে ভিতরের দিকে পাইলিং বসানোর কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। বেড়িবাঁধ থেকে অন্তত তিন ফুট দূরে পাইলিং দেওয়া হচ্ছে।
পাইলিংয়ের খুঁটি হিসেবে পুরাতন গাছ, শুকনো ও চিকন বাঁশ এবড়োথেবড়োভাবে বসানো হয়েছে। খুঁটি বসানোর কাজ প্রায় শেষ। খুঁটির সাথে দেওয়া হয়েছে মরিচা ধরা ড্রামশিট।
ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত মূল্যে এ কাজ করানো হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনায় টেকসই মানের কাজের নির্দেশ থাকলেও দায়সারাভাবে এ কাজ করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী নাসির উদ্দিন, মাসুদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজনে জানান, ভেকু মেশিন দিয়ে নদীর চরের বালু মাটি কেটে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে ঢেউ লাগলেই মাটি গলে পড়ছে। এ কারণে বেড়িবাঁধ স্থায়ী হচ্ছে না। বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাস দেখা দিলেই বেড়িবাঁধে ধস দেখা দিচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধের ধস ঠেকাতে পাইলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। সেই পাইলিংয়েও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। পুরানো গাছ, শুকনো ও চিকন বাঁশ এবং মরিচা ধরা ড্রামশিট ব্যবহার করা হচ্ছে। যা একবছরও টিকবে না। মূল ডিজাইন ও পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজটি বাস্তবায়ন করার দাবি তাদের।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শাহরিয়ার তানভীর বলেন, “ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র প্রভাবে পানি বেড়ে যাওয়ায় বেড়িবাঁধে ধস দেখা দেয়। বেড়িবাঁধ রক্ষার্থে জরুরি সংস্কার প্রকল্পে ডিজাইন ও পরিকল্পনা করে প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে পাইলিংয়ের কাজ শুরু করা হয়। কাজ এখনও চলমান রয়েছে। জিও ব্যাগ ফেলাসহ আরো অনেক কাজ বাকি আছে। কাজের শেষে মূল্যায়ন কমিটি পরিদর্শন করে মতামত দিলে সেভাবেই বিল পাশ করা হবে।”
তবে কাজের দৈর্ঘ্য এবং বরাদ্দের বিষয়টি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, “কাঠালিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় বেড়িবাঁধে ধস দেখা দিলে আমরা জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করি। পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই প্রকল্পে আছেন। তিনি জিও ব্যাগ তৈরির পরে তা গণনা করবেন। কাজের মান যাচাই করবেন। তার দেওয়া মন্তব্যের ভিত্তিতে বিল প্রদান করা হবে।”
তবে জরুরি সংস্কার কাজের দৈর্ঘ্য এবং বরাদ্দের পরিমাণ জানাতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তাও। পাইলিংয়ে ব্যবহৃত নিম্নমানের সামগ্রী নিয়েও কোনো কথা বলেননি কর্মকর্তাদের কেউ।
ঢাকা/অলোক/এস