তৈরি পোশাক খাতের নিট ক্যাটেগরির পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএকে সদস্য কারখানা এবং শ্রমিকদের জন্য একটি কল্যাণকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দাঁড় করাতে চায় সংগঠনটির নির্বাচনী প্যানেল প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স।

রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট নীতি প্রণেতাদের সঙ্গে আলোচনা এবং পণ্য ও বাজারে বৈচিত্র্য আনার মাধ্যমে ঝুঁকি কমানোসহ ১৫ দফা প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করা হয়েছে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। 

গতকাল বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার পড়ে শোনান প্যানেল লিডার এবং বিকেএমইএর বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। ১৪ বছর পর আগামী ১০ মে বিকেএমইএর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ৩৫টি পরিচালক পদে প্রার্থী ৩৮ জন। এর মধ্যে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স প্যানেলের প্রার্থী ৩৫। এই নির্বাচনে মাত্র তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। 

প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্সের ইশতেহারে রয়েছে–কাস্টমস ও বন্ড জটিলতা নিরসনে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া, আমদানি ও রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজ করা, কম্পোজিট ইউনিটের ক্ষেত্রে আমদানি ও ব্যবহারের স্বচ্ছ নিয়ম প্রণয়ন, বন্ডেড থেকে নন-বন্ডেড প্রতিষ্ঠানে কাঁচামাল সরবরাহের বাধা দূর করাসহ বন্ড কমিশনারেটের অনিয়ম-জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া নন-বন্ডেড প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোর করে বন্ড লাইসেন্স করানোর চাপ এবং এ-সংক্রান্ত জটিতলা নিরসনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রগ্রেসিভ নিট অ্যালায়েন্স।

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বর্তমান শুল্ক কাঠামো বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব নয়। কাঠামো সংস্কারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন তারা। গতিশীল উৎপাদন ব্যবস্থা ও লিড টাইম নিশ্চিতকরণে স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় সুতা আমদানি চালু করার লক্ষ্যে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌক্তিক আলোচনার পরিবেশ তৈরি করা হবে। ব্যাংক খাতের নানা প্রকার জটিলতা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া এবং রপ্তানিবান্ধব নীতি প্রণয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখা হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, তাঁকে কেউ কেউ ফ্যাসিবাদের দোসর বলে অভিযোগ করে থাকেন। অনুমানের ভিত্তিতে এটি করে থাকেন তারা। প্রকৃতপক্ষে তিনি বিগত দিনে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এখনও নেই। আগামীতে কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করার ইচ্ছা তাঁর নেই। শিল্পের স্বার্থে সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কাজ করছেন তারা। 

সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ হাতেম ছাড়াও অন্য প্রার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনসুর আহমেদ প্রমুখ। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে বাংলাদেশের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, তৈরি পোশাক উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের একটা বড় অংশ আসে ভারত থেকে। পাকিস্তান থেকেও কিছু কাঁচামাল আসে। দেশ দুটির মধ্যকার যুদ্ধের কারণে তাদের উৎপাদন ব্যাহত হবে। এতে কাঁচামালপ্রাপ্তি সমস্যায় পড়বে। আবার সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হবে। তিনি আশা করেন, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক মহল এ যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রগ র স ভ ন ট অ য ল য় ন স হ ম মদ হ ত ম আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে ১০১ কেজি গাঁজা ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, ৬ ডাকাত গ্রেপ্তার  

সোনারগাঁয়ে র‌্যাব-১১-এর পৃথক দুটি অভিযানে ১০১ কেজি গাঁজা উদ্ধার ও বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্রসহ ছয়জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৫টি চাপাতি, ২টি চাইনিজ কুড়াল, ৫টি ছুরি, একটি সুইচ গিয়ার ও একটি বড় দা।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা হলো- মফিজুল ইসলাম ওরফে জামিল বাবু (২৮), সাইফুল ইসলাম সাকিব (২৫), মো. মানিক (৩১), সাদ্দাম (৩২), সহিদ (৩৭) এবং মনির হোসেন (৫৭)। তারা সকলেই সোনারগায়ের বাসিন্দা। এ সময় গাঁজা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি মিনি ট্রাক জব্দ করা হয়। 

সোমবার (১১ আগষ্ট) দুপুরে র‌্যাব-১১ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন এ তথ্য জানান। এরআগে ভোর ৫টায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগায়ে পাচকানিরকান্দি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওই ডাকাতদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মেঘনা-টু-বটতলা সড়ক থেকে ১০১ কেজি গাঁজাসহ একটি মিনি ট্রাক জব্দ করা হয়।

র‌্যাব-১১’র অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা এলাকায় যানযটের সময় এবং নিজেরা গাছের গুড়ি ফেলে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে যাত্রীবাহী বাসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি করে সাধারণ মানুষের সর্বস্ব লুটে নিতো। তারা অনলাইন মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বিদেশগামী যাত্রীদের বেশি টার্গেট করে ডাকাতি করে। 

গ্রেপ্তারকৃত মফিজুল ইসলাম ওরফে জামিল বাবুর নামে হত্যা সহ ৪টি, সাইফুল ইসলাম সাকিবের নামে হত্যা-নাশকতা-মাদক সহ ৪টি, মানিকের নামে হত্যা সহ ৩টি, সাদ্দামের নামে ডাকাতি-হত্যা-মাদক-অস্ত্র-চুরি সহ ১৮টি, সহিদের নামে হত্যা এবং মনিরের নামে চুরি-মাদক সহ ৫টি মামলা রয়েছে। এই চক্রের অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা। 

তিনি আরও বলেন, চক্রের অবশিষ্ট সদস্যদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন এবং উদ্ধারকৃত মাদক সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম চলছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ