তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সরকার সংবাদপত্রের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে চায়। এখনো সংবাদপত্রশিল্পে বেশ কিছু নেতিবাচক চর্চা রয়েছে। এসব নেতিবাচক চর্চা বন্ধ করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তথ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

গণমাধ্যমের সংস্কার প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম বলেন, সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তিনি গণমাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

সভায় নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, গত ১২-১৩ বছরে ছাপা পত্রিকার প্রচারসংখ্যা ও বিজ্ঞাপন বাজার উভয়ই সংকুচিত হয়েছে। সংবাদপত্র সেবাধর্মী শিল্প হওয়া সত্ত্বেও এর করপোরেট কর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি সংবাদপত্রের করপোরেট কর ১০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। তিনি আরও বলেন, ওয়েজবোর্ড ঢেলে সাজানো দরকার। তিনি সার্চ কমিটির মাধ্যমে ওয়েজবোর্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

সভায় নোয়াবের পক্ষ থেকে স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়।

মতবিনিময় সভায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক আলতামাশ কবির, দ্য ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ ও দৈনিক করতোয়ার সম্পাদক মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব দপত র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএসএআইডির তহবিল হ্রাসে বাংলাদেশে চাকরি হারিয়েছেন ‘২০ হাজার মানুষ’

যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির তহবিল কমার কারণে এ সংস্থার অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশের ২০ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। কমে যাওয়া তহবিলের পরিমাণ ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের প্রতিবছর পাওয়া বৈদেশিক সহায়তার ১৮ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘স্ট্রেনদেনিং কমিউনিটি সাপোর্ট এমিড চেঞ্জিং ফান্ডিং ল্যান্ডস্কেপ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। বৈদেশিক সহায়তা কমার প্রেক্ষাপটে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে বিকল্প পথ খোঁজার উপায় নিয়ে এ গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়।

সেখানে একটি উপস্থাপনায় বলা হয়, বাংলাদেশ প্রতিবছর নানা উৎস থেকে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন (১১০ কোটি) মার্কিন ডলার তহবিল পায়। ইউএসএআইডির তহবিল কমার কারণে বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে ৮ হাজার আর পরোক্ষভাবে আরও ১২ হাজার মানুষ চাকরি হারিয়েছেন।

সেখানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সামনে আরও তহবিল কমবে। আন্তর্জাতিক কর্মসূচিগুলোতে সহায়তা কমে আসবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে আগে যে ফাউন্ডেশনগুলো সহায়তা দিত, সেগুলোকে কর অব্যাহতি দেয়া হতো। এখন সে কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার আলোচনা হচ্ছে।

অন্যদিকে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ হলে সিভিল সোসাইটি সংগঠনগুলোর সহায়তা কমতে থাকবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের নির্বাহী পরিচালক এম জাকির হোসাইন খান বলেন, ‘আমাদের এ বাস্তবতা মেনে নিতে হবে যে হানিমুন পিরিয়ড ইজ ওভার। বিশ্বব্যাপী নানা বাস্তবতায় বৈদেশিক সহায়তা কমে আসছে। আমাদের টিকে থাকতে হলে নতুন মডেল, নতুন কাঠামোতে সবকিছু পুনর্বিন্যাস করতে হবে।’

আগামী দিনে ‘প্রকৃতিনির্ভর সমাধান’, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও ইনস্যুরেন্স খাতে সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। স্থানীয় সরকারের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে নদীনালা, খালবিল, বন সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনায়ও কাজ করা যায় বলে উল্লেখ করেন জাকির হোসাইন খান।

বক্তারা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে নতুন নেতৃত্ব, নতুন ভবিষ্যৎ ও সহায়তার নতুন নতুন উৎস খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শারমিন নিলোর্মী বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ