২০০১ সালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রায় পড়া শুরু করেন। রায় ঘোষণার প্রথম দিনে বিচারিক আদালতের রায়ের অংশবিশেষ এবং রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের বক্তব্যের সারসংক্ষেপ ঘোষণা করা হয়। 

আগামী ১৩ মে সাজাসহ রায়ের অবশিষ্ট অংশবিশেষ ঘোষণা করা হবে। শুরুতেই আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, আমরা আজ রায়ে মামলায় সাক্ষীদের বক্তব্য পাঠ করব। সাজার অংশ পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে। 

আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী। তিনি জানান, সাপ্তাহিক ও সুপ্রিম কোর্টের ছুটির কারণে ৪ দিন উচ্চ আদালত বন্ধ থাকবে। রায়ের পরবর্তী অংশ ১৩ মে জানা যাবে।  

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের ওপর আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ  হয়। মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ ছিল। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এই বোমা হামলা হয়। ঘটনাস্থলেই নয়জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান একজন। 

রাজধানীর নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পর, সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলায় রায় দেন ঢাকার আদালত। রায়ে বিচারিক আদালতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। 

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মুফতি আব্দুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আবদুল হাই ও মাওলানা শফিকুর রহমান। এর মধ্যে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। বিচারিক আদালতের রায়ের পর মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে জেল আপিল হয়। হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হলেও বিস্ফোরক মামলাটি ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এখনও বিচারাধীন। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী: কে কেন কীভাবে

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে মো. আমির হোসেনের। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন তিনি। ভিডিওতে ট্রাইব্যুনাল ও আমির হোসেনের একটি কথোপকথন রয়েছে, তাঁকে হাসতেও দেখা যাচ্ছিল। তা দেখে তাঁর সমালোচনা করেন অনেকে।

আমির হোসেন দাবি করেন, মামলার বিচার কার্যক্রমের একটি অংশকে অসাধু ইউটিউবাররা বাজেভাবে উপস্থাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ (নিয়ন্ত্রিত আদালত) তিনি মনে করেন না এবং এই ট্রাইব্যুনালের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও নিরপেক্ষতা নিয়েও তাঁর মধ্যে কোনো সংশয় নেই, এমনটাও বলেন এই আইনজীবী।

আমির হোসেনকে নিয়ে এই আলোচনা অনেকের মধ্যে কৌতূহল তৈরি করেছে, জুলাই অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে দেশছাড়া শেখ হাসিনার পক্ষে এই আইনজীবী কীভাবে দায়িত্ব পালন করছেন? আসামি শেখ হাসিনা কোন প্রক্রিয়ায় এই আইনি সুবিধা পেলেন? এই আইনজীবীর কাজ কী? তাঁর খরচই–বা কে জোগাচ্ছে?

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিচার চলছে।

তাঁদের মধ্যে গ্রেপ্তার আছেন কেবল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন। তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। নিজের অর্থে যায়েদ বিন আমজাদকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আমির হোসেন। শেখ হাসিনা কিংবা আসাদুজ্জামান তাঁকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেননি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এই দুই পলাতক আসামির পক্ষে তাঁকে ‘ডিফেন্স কাউন্সেল’ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর এটিই একমাত্র মামলা, যেটি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। ১৩ নভেম্বর জানা যাবে এ মামলার রায় কবে হবে। প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের সর্বোচ্চ শাস্তি চাওয়া হয়েছে এবং সাবেক আইজিপি মামুনের বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে খালাস দিতে আবেদন করেন তাঁদের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী আমির।

শেখ হাসিনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রে ৬ বছরের ছাত্রের গুলিতে আহত শিক্ষককে কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
  • আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, মেজবাহউদ্দীন ফরহাদকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান
  • সোনারগাঁয়ে ভূমি অফিসে গ্রাহক হয়রানী, দেড় মাস ধরে বন্ধ নামজারী
  • পদে থেকেও নির্বাচন করা যায়: অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান
  • জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা
  • হাইকোর্টের বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার অপসারিত
  • হজরত আদম (আ.) এবং পৃথিবীতে তাঁর প্রথম আবাস
  • ডেমোক্র্যাটদের জয়, অর্থনৈতিক সমস্যা—ট্রাম্পের রিপাবলিকানদের জন্য বড় ধাক্কা
  • সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি, পদ ১০ হাজার ২১৯, প্রথম ধাপে ৬ বিভাগে
  • ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী: কে কেন কীভাবে