কোনো টাকা পরিশোধ না করে ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ফ্ল্যাট দখল করার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী রিজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মো.
বুধবার ঢাকায় তাদের বাসার ঠিকানায় চিঠিগুলো পাঠানো হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের ঢাকার ধানমন্ডি ও গুলশানের বাসায় চিঠি পাঠানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুদকের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মো. আকতারুল ইসলাম এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
চিঠিতে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিকসহ অন্যারা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যরান্ত্র, অসদাচরণ ও বিশ্বাস ভঙ্গ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো টাকা পরিশোধ না করেই অবৈধ পারিতোষিক হিসেবে ইস্টার্ন হাউজিং কোম্পানির কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে রেজিস্ট্রি মূলে ফ্ল্যাটটি দখল করেছেন।
ঢাকার গুলশান-২-এর ৭১ নম্বর রোডের ৫-এ ও ৫বি (পুরাতন), বর্তমানে- ১১এ, ১১বি (নতুন) প্লটের বি/২০১ নম্বর ফ্ল্যাটটি দখলে নেওয়া হয় ২০০১ সালের ১৯ মে মাসে যখন মায়ের বড় বোন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। একইদিনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও যে দুইজনকে তলব করা হয়েছে। তারা হলেন রাজউকের সাবেক সহকারি আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সরদার মোশারফ হোসেন।
এই অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। বর্তমানে মামলটির তদন্ত চলছে। এই পর্যায়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করা হবে।
দুদক জানায়, অবৈধভাবে ফ্ল্যাটটি নেওয়ার প্রমাণ রয়েছে। বলা হয়, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের এক পত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, রিজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপ বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নিয়েছেন। বেআইনিভাবে প্রভাবিত করা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ হিসেবে বলা হয়, ইস্টার্ন হাউজিং থেকে রাজউকে পাঠানো ফ্ল্যাট মালিকদের তালিকায় রাজউকের এ সংক্রান্ত নোট শিটের ৫ নম্বর ক্রমিকে রিজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপের নাম রয়েছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার ২০০১ সালের ১৯ মে থেকে রিজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপের দখলে ওই ফ্ল্যাটটি রয়েছে মর্মে ঢাকা সিটি করপোরেশনে চিঠি দিয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং। তিনি ২০০১ সালের ১৯ মে ফ্ল্যাটটির হস্তান্তরপত্র গ্রহণ করে ওই তারিখ থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করে আসছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ট উল প ট উল প স দ দ ক স দ দ ক ট উল প র জওয় ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হত্যায় দুজন গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ শুক্রবার দুপুরে র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এ ছাড়া চট্টগ্রামের রাউজানে গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন এবং বায়েজিদে এক অটোরিকশাচালককে গুলি করার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
সরোয়ার হত্যায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন হেলাল হোসেন ওরফে মাছ হেলাল ও আলা উদ্দিন। গ্রেপ্তার দুজনই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বায়েজিদের হাজিরপুল এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান বলেন, সরোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুজন র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন। তবে সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীসহ মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে চলাফেরা রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য জানতে রিমান্ডের প্রয়োজন রয়েছে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের চালিতাতলী এলাকায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগে গুলি করে হত্যা করা হয় সরোয়ারকে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের করা সন্ত্রাসীদের তালিকায় সরোয়ারের নাম রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে অস্ত্র-চাঁদাবাজির ১৫টি মামলা। একই ঘটনায় সরোয়ার ছাড়াও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহও রয়েছেন।
র্যাব জানায়, সরোয়ারকে গুলি করার পরদিন চালিতাতলী এলাকায় ইদ্রিস নামে এক অটোরিকশাচালককে গুলি করা হয়। এ ঘটনায় আরমান আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গুলি করার সঙ্গে ‘সন্ত্রাসী’ শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যা ও মিজান জড়িত।
এদিকে গত বুধবার রাতে রাউজানের বাগোওয়ান এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের গোলাগুলিতে পাঁচজন আহত হন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইশতিয়াক চৌধুরী অভি, মোহাম্মদ জেকি ও মো. জনি নামে তিনজনকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় র্যাব।
সংসদ নির্বাচনের আগে গোলাগুলির ঘটনা রোধে র্যাব তৎপর রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে জনসংযোগ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারসহ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে র্যাব।