হিজলার মেঘনা তীরে উপদেষ্টা ফাওজুল ও সাখাওয়াত
Published: 9th, May 2025 GMT
বরিশালের হিজলা উপজেলার মেঘনা নদী খনন এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও এম সাখাওয়াত হোসেন।
ফাওজুল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন, সেতু ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। আর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত নৌ পরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।
তারা শুক্রবার মৌলভীরহাট খেয়াঘাট এলাকায় নদী খনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, মেগা প্রকল্পের নামে এতদিন দেশে লুটপাট হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন হয়নি বললেই চলে। এখন সময় এসেছে প্রকৃত উন্নয়ন নিশ্চিত করার।
অন্য প্রশ্নের জবাবে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ জরুরি। তাই জনকল্যাণে অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশের মানুষকে সহযোগিতা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বরিশালের মীরগঞ্জ এলাকায় বহুল প্রতীক্ষিত একটি সেতুর নির্মাণকাজ চলমান। সেতু নির্মাণকাজ শেষ হলে স্থানীয় জনগণ উপকৃত হবেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও উপদেষ্টা উল্লেখ করেন।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ছয়টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দু’জন উপদেষ্টা গতকাল হিজলা সফর করেন। সকাল ১০টায় তারা হিজলার পুরাতন লঞ্চঘাট এবং পরিত্যক্ত মৌলভীরহাট লঞ্চঘাট এলাকা এবং খনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন। একই দিন বিকেল ৩টায় দুই উপদেষ্টা মীরগঞ্জ সেতুর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, উপদেষ্টারা শনিবার সকাল ১০টায় বরিশাল বিভাগের আওতাধীন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নগরীর সার্কিট হাউসে মতবিনিময় করবেন। বিকেল ৪টায় বরিশাল প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অর্থনীতিতে স্বস্তি এসেছে, আত্মতুষ্টির জায়গায় আসেনি: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, খাদের কিনারা থেকে ফিরে এসেছি। অর্থনীতি এখনো নিরাপদ পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছায়নি। স্বস্তি এসেছে অর্থনীতিতে, কিন্তু এখনো তৈরি হয়নি আত্মতুষ্টির জায়গা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের অর্থনীতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশকে একটি সমতাভিত্তিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থনৈতিক খাতের বড় সংস্কারগুলো কিছুটা করে যেতে পারব আমরা। বাকিটা নির্বাচিত সরকার এসে করবে। সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক অবস্থা এখন হতাশাজনক নয়। এমন কিছু আমরা করে যেতে চাই, যাতে পরের সরকার এসে বলতে না পারে আগের সরকারের সব ভুল ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘অর্থনীতিকে আমরা এসে যে অবস্থায় পেয়েছি, এখন তা মোটামুটি সন্তোষজনক পর্যায়ে এসেছে। আমরা এসে দেখেছি অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, সুশাসনের অভাব, মুদ্রা পাচার। আমরা বলি অর্থনীতি খাদের কিনারে ছিল। অনেকেই বলেন আইসিইউতে ছিল।’ আগের সরকারের সময়ে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সেখান থেকে উন্নতি করতে সরকার কাজ করছে। যেমন গত বছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ শতাংশ। এ বছরের জুলাইয়ে তা কমে ৮ শতাংশের ঘরে এসেছে। শিগগিরই তা ৬ শতাংশে নেমে আসবে। দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারা থেকে আইসিইউ হয়ে এখন কেবিনে ফিরছে, এটি কবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি এখনো কেবিনে ফেরার মতো অবস্থায় নেই। আর গরিব দেশের অর্থনীতি কেবিনে ফিরবে না। পেয়িং বেড বা ওয়ার্ডে ফিরবে, তারপর বাড়ি ফিরবে।’ অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী জানুয়ারির মধ্যেই দেশের অর্থনীতি ওয়ার্ডে ফেরার মতো সুস্থ অবস্থায় পৌঁছাবে।’
বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সরকার সব প্রক্রিয়া শেষ করছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এ জন্য গঠিত টাস্কফোর্স কাজ করছে। কারা অর্থ পাচার করেছে, সেটি চিহ্নিত করা হচ্ছে। আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। তবে দেশের মধ্যে দুর্নীতির টাকা ফেরত আনা যত সহজ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা তত সহজ নয়।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক বছরের মধ্যে একের পর এক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, রিজার্ভ সংকট, বৈদেশিক বিনিয়োগের ধীরগতি ইত্যাদি। তবে ধাপে ধাপে বিভিন্ন নীতিমালা করা হয়েছে। সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে ফিরছে।
মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার গত অর্থবছরে ছিল, যেখানে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশের মতো, চলতি অর্থবছর শেষে তা ৫ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হতে পারে বলে মনে করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।