‘মাথায়’ সমস্যা, সমাধানে সংস্কৃতি বদলের পুরোনো সুর
Published: 11th, May 2025 GMT
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টপ তিন স্কোরার যথাক্রমে এনামুল হক বিজয়, পারভেজ হোসেন ইমন ও নাঈম শেখ। রানের পসরা সাজিয়ে দেন দেশের একমাত্র পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট প্রতিযোগিতায়। এনমুল ৮৭৪, পারভেজ ৭৯৮ ও নাঈম ৬১৮ রান করেন। দ্যুতিময় পারফরম্যান্সে তিনজনই জায়গা করে নেন নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ‘এ’ দলে।
এবার ‘এ’ দলের জার্সিতে তাদের পারফরম্যান্সটা দেখুন। এনামুল ৩ ম্যাচে ৭৯, পারভেজ ২ ম্যাচে ৩২, নাঈম ৩ ম্যাচে ৬২। ঢাকা লিগের গড় রানটাও নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিলেটে করতে পারেননি তারা। তাই তো সাবেক সফল এক অধিনায়কের কড়া বক্তব্য, ‘‘ঘরোয়া ক্রিকেটে মুখস্থ বল খেলতে খেলতে রান করে। একটু বল এদিক-সেদিক হলেই আর পারে না।’’
জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন মিরপুরে আজ সেই কথাটাই বোঝাতে চাইলেন, ‘‘খেলাটা তো আসলে মাথায়। আমাদের সমস্যাটাও আসলে মাথায়।’’
আরো পড়ুন:
মিচেলের পাকিস্তানে না যাওয়ার বক্তব্য নিয়ে ব্যাখা দিলেন রিশাদ
যুদ্ধবিরতির পর ফের মাঠে ফিরছে আইপিএল ও পিএসএল
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানোর আগে খেলোয়াড়দের নিয়ে এই অভিযোগ আগেও করেছেন সালাহউদ্দিন। ঘরোয়া ক্রিকেটে লম্বা সময় ধরে কাজ করেছেন তিনি। রুট লেভেলেও কাজ করেছেন। একাধিক ক্লাবে পেয়েছেন জাতীয় দলের সব ক্রিকেটারদের। সাকিব, তামিমের মতো ক্রিকেটাররা সমস্যায় পড়লেই ছুটেছেন তার কাছে। ছেলেদের এই ‘মাথার সমস্যা’ শুধরাতে না পারার দায় কোচদের কতটা প্রশ্নটাও উঠছে?
কিন্তু সেদিকে না গিয়ে সালাউদ্দিন হাঁটলেন সহজ পথে। যেখানে কাউকেই দায় দেওয়ার সুযোগ দেখেন না তিনি, ‘‘ছেলেদের স্কিলের উন্নতি নিয়ে কাজ করার খুব বেশি সময় পাই না আমরা। টানা এত সিরিজ থাকে। একটা থেকে আরেকটা সিরিজে যাওয়ার মতো বা স্কিল বাড়ানোর কাজ করার সুযোগ থাকে না।’’
তবে আশার কথাও শোনালেন তিনি, ‘‘এটা কীভাবে উন্নতি করা যায়.
যে সংস্কৃতি বদলের কথা সালাউদ্দিন বলছেন তা দেশের ক্রিকেটের আদি চাওয়া। সেই পুরোনো সুরটাই নতুন করে ধরলেন তিনি, ‘‘এটা (দল গড়ে তোলা) একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। জাতীয় দলের ওপরেই সব কিছু নির্ভর করে না। যারা ‘এ’ দলে খেলছে, এইচপিতে আছে, টাইগার্সে অনুশীলন করবে, এর সঙ্গে আমাদের কাঠামো কতটা উন্নত হচ্ছে, সংস্কৃতি কত উন্নত হচ্ছে- সব কিছু মিলিয়েই কিন্তু বোঝা যাবে আমরা কোথায় যাচ্ছি। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা তাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা নিজেদের উন্নতি চাচ্ছে। তবে একটা দেশের ক্রিকেট শুধু এই গুটিকয়েক ক্রিকেটারের ওপর নির্ভর করে না। এর জন্য ভালো কাঠামো প্রয়োজন। ছেলেরা নিজ থেকে কীভাবে তৈরি হয়ে আসবে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। এটা সবাই মিলেই করতে হবে। প্রতিটি বিভাগের এক হয়ে কাজ করতে হবে। সব কিছু মিলে একটা দেশের ক্রিকেট এগোবে।”
“এটা কোনো নির্দিষ্ট ক্রিকেটারের ওপর নির্ভর করে না। সমষ্টিগতভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। চারটা বিভাগ- গেম ডেভেলপমেন্ট, এইচপি, টাইগার্স, জাতীয় দল এবং এসব জায়গায় যারা কাজ করছে, তাদের সবার লক্ষ্য একই হতে হবে। পরিকল্পনা তাই ভালোভাবে করতে হবে এবং বাস্তবায়ন যদি ভালোভাবে না হয়, সবসময় একই জায়গায় থেকে যাব।” – যোগ করেন তিনি।
সঙ্গে কড়া বার্তাও দিয়ে রাখলেন, ‘‘আমরা একটা সংস্কৃতি তৈরির চেষ্টা করছি, এটা কারও নিজের দল না, কারও একার সম্পত্তি নয়। এটা দেশের সম্পত্তি। আপনাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, যদি ভালো নাও লাগে, পালন করতে হবে। আপনার ভালো না লাগলে এখানে খেলার দরকার নেই। কৌশলগত জায়গা থেকে ম্যাচের আগে আমরা ঠিক করব কে কখন খেলবে।”
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় দল র ক জ কর সমস য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাজিলের ৪টি ক্লাবই নকআউটে, আর্জেন্টিনার সব ক্লাবই গ্রুপপর্বে বি
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ-২০২৫ এ দক্ষিণ আমেরিকার দুই ফুটবল পরাশক্তি ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্স যেন দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে। যেখানে ব্রাজিলের চারটি ক্লাব— ফ্ল্যামেঙ্গো, পালমেইরাস, বোতাফোগো ও ফ্লুমিনেন্স; দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে। সেখানে আর্জেন্টিনার দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব বোকা জুনিয়র্স ও রিভার প্লেট গ্রুপপর্বেই বিদায় নিয়েছে।
শেষ ষোলোতে পালমেইরাস ও বোতাফোগো মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে অন্তত একটি ব্রাজিলিয়ান ক্লাব কোয়ার্টার ফাইনালে নিশ্চিত। অন্যদিকে ফ্ল্যামেঙ্গো খেলবে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে। আর ফ্লুমিনেন্স লড়বে ইন্টার মিলানের সঙ্গে।
চলুন ক্লাবগুলোর গ্রুপ পর্বের পারফরম্যান্সে চোখ বুলানো যাক—
আরো পড়ুন:
শেষ নয়, আল-নাসরে নতুন অধ্যায়ের শুরু রোনালদোর
কষ্টের জয়ে শেষ ষোলোতে ইন্টার, বরুসিয়াও নকআউট পর্বে
ব্রাজিলের চার ক্লাব: দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা
১. ফ্ল্যামেঙ্গো (গ্রুপ ডি):
ম্যাচ ১: ফ্ল্যামেঙ্গো ৩–১ চেলসি।
ম্যাচ ২: ফ্ল্যামেঙ্গো ২–০ এস্পেরঁস (তিউনিসিয়া)।
ম্যাচ ৩: ফ্ল্যামেঙ্গো ১–১ এলএএফসি।
পয়েন্ট টেবিল: ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।
দলের উল্লেখযোগ্য পারফরমার: জর্জিয়ান ডি আরাস্কায়েতা (২টি ম্যাচে ম্যাচসেরা)।
২. পালমেইরাস (গ্রুপ এ):
ম্যাচ ১: পালমেইরাস ০–০ পোর্তো।
ম্যাচ ২: পালমেইরাস ২–০ আল আহলি।
ম্যাচ ৩: পালমেইরাস ২–২ ইন্টার মায়ামি।
পয়েন্ট টেবিল: ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।
দলের উল্লেখযোগ্য পারফরমার: “মেসিনহো” নামে পরিচিত তরুণ এস্তেভাও উইলিয়ান (১টি ম্যাচে ম্যাচসেরা)।
৩. বোতাফোগো (গ্রুপ বি):
ম্যাচ ১: বোতাফোগো ২–১ সিয়াটল সাউন্ডার্স।
ম্যাচ ২: বোতাফোগো ১–০ পিএসজি।
ম্যাচ ৩: বোতাফোগো ০–১ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
পয়েন্ট টেবিল: ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার-আপ।
দলের উল্লেখযোগ্য পারফরমার: ইগর জেসুস (২টি ম্যাচে ম্যাচসেরা)।
৪. ফ্লুমিনেন্স (গ্রুপ এফ):
ম্যাচ ১: ফ্লুমিনেন্স ১–১ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
ম্যাচ ২: ফ্লুমিনেন্স ২–০ উলসান এইচডি।
ম্যাচ ৩: ফ্লুমিনেন্স ১–০ মামেলোডি সানডাউন্স।
পয়েন্ট টেবিল: ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন।
দলের উল্লেখযোগ্য পারফরমার: জন আরিয়াস (ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ম্যাচসেরা)।
আর্জেন্টিনার দুই ক্লাব: হতাশাজনক বিদায়
১. রিভার প্লেট (গ্রুপ ই):
ম্যাচ ১: রিভার প্লেট ১–১ উরাওয়া রেড ডায়মন্ডস।
ম্যাচ ২: রিভার প্লেট ০–২ মন্টেররে।
ম্যাচ ৩: রিভার প্লেট ০–২ ইন্টার মিলান।
পয়েন্ট টেবিল: ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে চতুর্থ।
২. বোকা জুনিয়র্স (গ্রুপ সি):
ম্যাচ ১: বোকা জুনিয়র্স ০–৩ বায়ার্ন মিউনিখ।
ম্যাচ ২: বোকা জুনিয়র্স ১–১ বেনফিকা।
ম্যাচ ৩: বোকা জুনিয়র্স ০–১ অকল্যান্ড সিটি।
পয়েন্ট টেবিল: ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে তৃতীয়।
ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো সম্মিলিতভাবে ১৪ গোল করেছে, খেয়েছে মাত্র ৪টি এবং কেউই হারেনি গ্রুপপর্বে। আর্জেন্টিনার ক্লাবগুলো মাত্র ২ গোল করেছে, খেয়েছে ৭টি এবং কেউ-ই জয় পায়নি। এই পারফরম্যান্স প্রমাণ করে, দক্ষিণ আমেরিকার ক্লাব ফুটবলে ব্রাজিলের আধিপত্য এখনো অটুট এবং তারা ইউরোপীয় জায়ান্টদের জন্যও বড় হুমকি হয়ে উঠছে।
ক্লাব বিশ্বকাপে ভালো করার পেছনের কারণ:
ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো তাদের মিড-সিজন ফর্ম ও উচ্চ তাপমাত্রায় খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে। যেখানে ইউরোপীয় ও আর্জেন্টাইন ক্লাবগুলো ছিল অফ-সিজনে। এখন দেখার বিষয় নকআউটপর্বে তারা কেমন কী করে।
ঢাকা/আমিনুল