ঈদুল আজহা: ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে সিএনজি স্টেশন
Published: 12th, May 2025 GMT
আসন্ন ঈদুল আজহার আগে ও পরে ১৩ দিন ২৪ ঘণ্টা সিএনজি ফিলিং স্টেশন খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঈদের দিনসহ আগের ৭দিন ও পরের ৫দিন সার্বক্ষণিক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১২ মে) রাজধানীর ঈদযাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত অংশীজন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে যাত্রী সাধারণের পারাপারে পর্যাপ্ত ফেরির ব্যবস্থা রাখা, কমলাপুর এলাকার টিটিপাড়া আন্ডারপাসসহ সড়কটি আগামী ২০ মে’র মধ্যে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
এলএনজি আমদানি বাড়ছে, ভর্তুকি দিতে হবে ১৬ হাজার কোটি টাকা
এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
ঈদের এক সপ্তাহ আগে এমআরটি, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণসহ ওয়াসা, ডেসকো, ডিইএসএ বা ডিপিডিসি, তিতাস, টেলিফোন ইত্যাদির জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ বন্ধ রাখতে হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঈদের আগে ও পরে সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী ও ফুলবাড়ীয়া বাস টার্মিনালসহ দেশের সব বাস টার্মিনালে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত মালামাল বা যাত্রী পরিবহন না করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এবং এ লক্ষ্যে বিআরটিএ, ডিএমপি, সিটি করপোরেশন এবং মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে পৃথক ভিজিলেন্স টিম এবং মনিটরিং টিম গঠন করতে বলা হয়েছে।
ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা রোধকল্পে ‘মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা, ২০২৪’-এ উল্লিখিত নির্ধারিত গতিসীমা অনুযায়ী বিভিন্ন মোটরযানের চলাচল নিশ্চিত করতে বলা হয়। সওজের আওতাধীন নয়টি সেতু ও মহাসড়কে যথাক্রমে কর্ণফুলী সেতু, মেঘনা সেতু, গোমতী সেতু, পায়রা সেতু, খান জাহান আলী (রূপসা) সেতু, চরসিন্দুর সেতু, শহীদ ময়েজউদ্দিন সেতু, আত্রাই টোলপ্লাজা, নাটোর, লালন শাহ সেতু, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ইটিসি বুথ চালুর মাধ্যমে সার্বক্ষণিক টোল আদায় অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একইভাবে সেতু বিভাগের আওতাধীন পদ্মা সেতু, যমুনা সেতু ও কর্ণফুলী টানেলে ইটিসি বুথ সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। সম্ভব হলে বিভিন্ন সেতু পারাপারের জন্য (ঈদের আগে ওপরে ছুটির সময়ে) অগ্রিম টোল টিকিট বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া ভাংতি টাকায় টোল পরিশোধের জন্য ব্যাপক প্রচার করতে হবে। টোল প্লাজাগুলো পশুবাহী গাড়ির জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা করতে হবে।
‘উপজেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি’, ‘জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি’, ‘মেট্রোপলিটন সড়ক নিরাপত্তা কমিটি’ সড়ক বা মহাসড়কে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার জন্য ঈদের আগে সভা করে সড়ক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিতে হবে। সভার কার্যবিবরণী ই-মেইলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠাতে হবে। ঈদ উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী থেকে বিভিন্ন জেলা শহর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্পেশাল ঈদ সার্ভিস পরিচালনা করবে বিআরটিসি এবং বিষয়টি বিজ্ঞপ্তি দ্বারা জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে। স্পেশাল সার্ভিসের জন্য বিআরটিসির স্ট্যান্ডবাই বাস প্রস্তুত রাখতে হবে।
এছাড়া ঢাকা শহরে ট্রাফিক জ্যাম কমানোর জন্য ঢাকা মেট্রো এলাকার বিআরটিসি বাস ডিপোসগুলোর বাস ঢাকা শহর অতিক্রম না করা (যেমন গাবতলী, কল্যাণপুর ডিপোর বাস রাজশাহী, রংপুর বিভাগ এবং মতিঝিল ও ফুলবাড়িয়া ডিপোর বাস চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগে চলাচলের ব্যবস্থা নিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো.
ঢাকা/হাসান/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব যবস থ র জন য ব আরট
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতি ডিমে লস দুই থেকে আড়াই টাকা, দিশেহারা খামারিরা
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর দেউপুর গ্রামের পোল্ট্রি খামির মো. জিন্নাহ। পৈত্রিক সম্পতি দেখিয়ে লোন করে ও নিজের জমানো টাকা থেকে এ বছর প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করে তিন হাজার লেয়ার মুরগি লালন পালন করছেন। প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার ডিম উৎপাদন হলেও ক্ষতি হচ্ছে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা।
মো. জিন্নাহ বলেন, “জানুয়ারি মাস থেকে প্রতি ডিমে দুই থেকে আড়াই টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হচ্ছে। প্রতি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ২০ পয়সা। সেখানে সাত টাকা ৫০ পয়সা ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে। ক্ষতি যাওয়ায় আমাদের গ্রামের অনেক খামারি নিঃস্ব হয়েছে। আবার অনেকেই দেউলিয়া হয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছে।”
শুধু জিন্নাহ নয়, তার মতো ভূঞাপুর, ঘাটাইল, সখীপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
খামারিদের দাবি, ডিমের দাম কমলেও খাদ্য, মেডিসিনসহ উৎপাদন খরচ কমছে না। এতে ঋণ, সুদ ও জমি বিক্রি করে যারা খামার পরিচালনা করছিলেন। তারাই অনেকেই দেউলিয়া হয়েছেন। বর্তমান বেশিভাগ খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন।
এদিকে ডিমের দাম কমলেও তেমন বিক্রি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি, ডিমের চাহিদা কমায় আগের চেয়ে ডিম বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে।
জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় ও ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, এক যুগ আগে টাঙ্গাইলে প্রতিদিন তিন কোটি পিস ডিম উৎপাদন হলেও বর্তমানে প্রতি দিন প্রায় ৩২ লাখ পিস ডিম উৎপাদন হচ্ছে। আগে টাঙ্গাইলে ২০ হাজারের অধিক খামারি থাকলেও বর্তমানে খামারি আছে প্রায় আড়াই হাজার।
দেউপুর গ্রামের খামারি সুজন মিয়া বলেন, “ডিমের দাম কমায় প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এভাবে চলমান থাকলে আমাকেও দেউলিয়া হতে হবে।”
অপর খামারি হাসমত আলী বলেন, “ডিমের দাম একটু বাড়লে প্রশাসনসহ ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা জরিমানা করেন। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ডিম আমদানি করেন। এখন তো ডিমের দাম কমছে, তাহলে যদি পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ডিম রপ্তানি করে তাহলে লাভ না হলেও ডিমের উৎপাদন খরচটা উঠতো। প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এছাড়াও প্রান্তিক খামারিরা না থাকলে বহুজাতিক কোম্পানি থেকে প্রতিটি ডিম আগামীতে ২০ থেকে ২৫ টাকায় কিনতে হবে।”
টাঙ্গাইল পার্ক বাজারের ব্যবসায়ী আমজাদ মিয়া বলেন, “ডিমের দাম কমায় একদিকে যেমন খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অপর দিকে আমরা তেমন ডিম বিক্রি করতে পারছি না। শুক্রবার (২৭ জুন) ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা হালি ডিম বিক্রি করছি। তাও স্বাভাবিক সময়ের মতো বিক্রি হচ্ছে না। আগে এক দিনে ১২/১৩ হাজার ডিম বিক্রি করলেও এখন সাত হাজার ডিম বিক্রি করতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে। অনেকের ডিম আড়তে থেকে ভেঙে ও পঁচে নষ্ট হচ্ছে।”
অপর ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া বলেন, ‘গত ঈদে ১০ দিনের ছুটি ছিলো। সেই ছুটিতে যে ডিমের চাহিদা কমেছে, তা আর বাড়েনি। সেই ১০ দিনে ডিম জমে যাওয়ায় ডিমের সরবরাহ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। তবে তেমন চাহিদা না থাকায় ডিমের দাম কমেছে। খামারিদের পাশাপাশি আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “গত নভেম্বর মাসে সরকারের পক্ষ থেকে ডিমের দাম ১০ টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থে এই দামটি যাতে প্রতি মাসে নির্ধারণ করা হয়, সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। এছাড়াও ডিমের উৎপাদন খরচ কমাতে বায়োসিকিউরিটি মেনে চলতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে খামারিদের।”
ঢাকা/কাওছার/এস