বগুড়ার শেরপুরে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে ছাত্রঅধিকার পরিষদের এক নেতা থানায় হাজির হন। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা থানায় হাজির হলে তিনি চলে যান। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত মিজানুর রহমান পলাশ ছাত্রঅধিকার পরিষদের বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

গত বছরের ১৭ জুলাই শেরপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ভাঙচুর ও সহিংসতার অভিযোগে থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সীমাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা আবু সাদাত মোহাম্মদ ছাইয়ুম ও কুসুম্বি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ খবর পেয়ে ছাত্রঅধিকারের নেতা মিজানুর রাত সাড়ে ৯টার দিকে শেরপুর থানায় হাজির হন। তিনি সাইফুলকে নিরপরাধ উল্লেখ করে ছেড়ে দিতে বলেন। পুলিশ সাইফুলের বিরুদ্ধে তদন্তে প্রাপ্ত প্রমাণ দেখালেও মিজানুর তাকে ছেড়ে দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা থানায় উপস্থিত হলে রাত ১১টার দিকে তিনি চলে যান।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে মিজানুর বলেন, ‘সাইফুল ইসলাম আমাদের এক ছাত্রনেতার আত্মীয়। আমাকে বলা হয়েছিল, তিনি নির্দোষ। বিষয়টি জানার জন্য থানায় গিয়েছিলাম। পুলিশের কাছে প্রমাণ দেখার পর বুঝেছি, তিনি আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর।’

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, মিজানুর রহমান পলাশ অনেকক্ষণ ধরে আসামিকে ছেড়ে দিতে বলেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। সোমবার সকালে আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

চিকিৎসকদের নিয়ে আইন উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাল ড্যাব

চিকিৎসকদের উদ্দেশ করে আজ শনিবার এক অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। তারা উপদেষ্টার বক্তব্যকে চিকিৎসকদের জন্য ‘অবমাননাকর’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

প্রসঙ্গত, আজ সকালে রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে বিপিএইচসিডিওএ আয়োজিত অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল চিকিৎসকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘পৃথিবীতে কোন জায়গায় হসপিটালে, প্রাইভেট ক্লিনিকে সব সময় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির জন্য নির্দিষ্ট টাইম থাকে ডাক্তারের?...আপনারা ওষুধ কোম্পানির দালাল? এ দেশে বড় বড় হসপিটালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির মধ্যস্বত্বভোগী? কোন জায়গায় নামান আপনারা নিজেদের?।’

ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুন আল রশীদ এবং মহাসচিব ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আইন উপদেষ্টাকে জনস্বার্থে তাঁর বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করার অনুরোধ জানানো হয়।

বিবৃতিতে ড্যাবের নেতারা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হয়েও চিকিৎসকদের নিয়ে এমন অবমাননাকর বক্তব্য চিকিৎসকদের নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগকে হেয়প্রতিপন্ন করেছে। এমন বক্তব্য স্বাস্থ্যসেবার প্রতি জনসাধারণের আস্থাকে সংকুচিত করে। ন্যায্য বেতন-ভাতা না পাওয়া সত্ত্বেও প্রত্যন্ত গ্রামীণ ক্লিনিক থেকে শহরের ব্যস্ততম হাসপাতালসমূহে বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা নিরলসভাবে চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছেন। কোভিড-১৯ মহামারি থেকে শুরু করে ডেঙ্গুর প্রকোপ পর্যন্ত নানা স্বাস্থ্য সংকটে বহু চিকিৎসক জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। কেউ কেউ প্রাণও হারিয়েছেন। তবুও চিকিৎসকরা তাঁদের সেবা ও মানবিকতার পথ থেকে পিছপা হননি।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে চিকিৎসকেরা আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। গণ-অভ্যুত্থানে চিকিৎসকদের এক বিশাল অবদান থাকার পরও সরকারের একজন উপদেষ্টা কর্তৃক চিকিৎসকদেরকে ‘অপমান করা এক বিরাট অন্যায়।’

গঠনমূলক সমালোচনা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সৌন্দর্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে ড্যাব নেতারা বলেন, ‘তবে সেটি হতে হবে তথ্যনির্ভর ও সম্মানজনক। পুরো চিকিৎসক সমাজকে নিয়ে অযথা বদনাম করা হাজারো সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসকের আত্মত্যাগকে অপমানিত করে, চিকিৎসক-রোগীর সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সর্বোপরি, মেধাবী তরুণদেরকে চিকিৎসাসেবার মতো মহান পেশায় আসার আগ্রহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।’

এ বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা জনাব আসিফ নজরুলকে তাঁর বক্তব্য পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই এবং জনস্বার্থে একটি ব্যাখ্যা বা দুঃখ প্রকাশ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ