বাংলাদেশে ‘পাকিস্তান পন্থা’ বলে কিছু নেই: হেফাজতে ইসলাম
Published: 13th, May 2025 GMT
ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতাকে ‘পাকিস্তানপন্থী’ বলে চিত্রিত করা হচ্ছে অভিযোগ করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে ভিন্নমতাবলম্বীদের ‘পাকিস্তানপন্থী’ ট্যাগ দেওয়ার মানে ভারতীয় বয়ান এ দেশে পুনরুজ্জীবিত করার নামান্তর। এ দেশে ‘পাকিস্তান পন্থা’ বলে কিছু নেই।
আজ মঙ্গলবার হেফাজতে ইসলামের দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ গণমাধ্যমে আজিজুল হক ইসলামাবাদীর এই বিবৃতি পাঠান।
বিবৃতিতে আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যম হরহামেশা বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতাকে “পাকিস্তানপন্থী” বলে চিত্রিত করে। এই মুহূর্তে ভিন্নমতাবলম্বীদের “পাকিস্তানপন্থী” ট্যাগ দেওয়ার মানে ভারতীয় বয়ান এ দেশে পুনরুজ্জীবিত করার নামান্তর। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে এ ধরনের ইন্ডিয়ান রেটোরিক (ভারতীয় বাগাড়ম্বর পূর্ণ বক্তব্য) ঢালাও ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে দমন ও হত্যা করতে আমরা দেখেছি। আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ-উত্তর বাংলাদেশে আবারও সেই আত্মঘাতী পশ্চাদমুখী রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আমরা ফিরতে চাই না। এখন যেকোনো ইন্ডিয়ান রেটোরিকের চর্চা জুলাই ঐক্যে নতুন বিভেদ উসকে দিয়ে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে সুযোগ করে দিতে পারে। আমরা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান করছি।’
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী আরও বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এ দেশের আলেম-ওলামা ও মুসলমান সব সময়ই জুলুম ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বঞ্চিত মুসলমানের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও অধিকার রক্ষার্থে সাতচল্লিশ ঘটেছিল। এরপর পাকিস্তানি সামরিক জান্তার জুলুম ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে একাত্তরের জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। সেই ধারাবাহিকতায় চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে এ দেশে ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের পতন ঘটে। সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশ—প্রতিটি আমাদের সংগ্রামী ইতিহাস ও জাতীয় আত্মপরিচয় নির্মাণের অনিবার্য ভিত্তি। এর প্রতিটি নিয়েই ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী বয়ান রয়েছে, যা আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। কোনোটিকে অস্বীকার নয়, বরং ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের ইতিহাস ও রাষ্ট্র পুনর্নির্মাণে প্রতিটিকে ধারণ করতে হবে।’
হেফাজতের এই নেতা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আমলে ভারতীয় বয়ান ব্যবহার করে এ দেশের শীর্ষ ইসলামপন্থীদের ওপর বিচারিক হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। এর পুনরাবৃত্তি আর কখনো হতে দেওয়া যাবে না। এ দেশে পাকিস্তান পন্থা বলে কিছু আছে বলে আমরা মনে করি না। বাংলাদেশপন্থী শক্তিশালী রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশ প্রশ্নে একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ক স ত নপন থ
এছাড়াও পড়ুন:
হামলা মামলায় তিন ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার
সাবেক সেনা কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগে পলাশে ছাত্রদলের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে কক্সবাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নরসিংদী র্যাব-১১ এর কমান্ডার সাদমান ইবনে আলম।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান পাপন, ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম আরিফ।
এর আগে ১০ এপ্রিল পলাশ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট মোজাম্মেল হক। তিনি পলাশ উপজেলার বালিয়া গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়ার ছেলে।
নরসিংদীর র্যাব-১১ এর কমান্ডার সাদমান ইবনে আলম বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় তিনজনকে সোমবার রাতে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় কী, সেটা মুখ্য নয়; অপরাধী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে ছাত্রদলের তিন নেতা গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের নেতাকর্মী। বিক্ষোভ মিছিল শেষে ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সিয়াম হোসাইন জানান, প্রতিহিংসামূলক মিথ্যা মামলায় ছাত্রদলের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান তিনি।