তুরস্কে আয়োজিত রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনায় কে বা কারা রাশিয়ার পক্ষ থেকে অংশ নেবেন– সেই প্রশ্নের উত্তর গতকাল বুধবারও এড়িয়ে গেছে ক্রেমলিন। মস্কো থেকে এএফপি জানায়, চলমান যুদ্ধের শুরুর দিকে দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে সংক্ষিপ্ত কয়েকটি সাক্ষাৎ হলেও এটি হবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সংঘাতের পর প্রথম সরাসরি আলোচনা। গত সপ্তাহে পুতিন নিজেই এ আলোচনার ডাক দেন।

তবে এ আলোচনায় পুতিন অংশ নেবেন কিনা, কিংবা রাশিয়ার প্রতিনিধি দলে কে কে থাকবেন, সে সম্পর্কে এখনও কিছু জানায়নি মস্কো। বুধবার ক্রেমলিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এএফপির প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিধি দল ১৫ মে ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের অপেক্ষায় থাকবে।’ তবে সেই দলে কারা থাকবেন– জানতে চাইলে পেসকভ বলেন, ‘এখনও প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা আসেনি।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এর আগে ঘোষণা দেন, তিনি তুরস্ক সফরে যাচ্ছেন এবং সেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনা করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচনায় উপস্থিত থাকলে পুতিনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে বলে ধারণা তাঁর। তুরস্কে যাওয়ার প্রস্তাব ভেবে দেখছেন বলেও জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে সিনেটর মার্কো রুবিও উপস্থিত থাকবেন। তিনি শুক্রবার ইস্তাম্বুলে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।  ফলে আলোচনা শুরুর দিন নিয়েও কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

এদিকে গতকাল থেকেই তুরস্কের উপকূলীয় শহর আনতালিয়ায় এক বৈঠকে বসছেন ন্যাটো দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এ আলোচনায় সামরিক ব্যয় বাড়ানোর বিষয় উঠে আসবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন। এই বৈঠক শেষ হওয়ার পরই রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইতোমধ্যে তারা ১৭তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে। এতে রাশিয়ার ‘ছায়া জাহাজ বহর’ এবং যুদ্ধ চালাতে সহায়তাকারী  ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ ছাড়া, চলমান আলোচনার প্রস্তুতির মধ্যেই ইউক্রেনের খারকিভ শহরে রাশিয়ার বিমান হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।

সিএনএন জানায়, জার্মানির কোলন ও কনস্টান্স শহর এবং সুইজারল্যান্ডের থুরগাউ অঞ্চল থেকে তিন ইউক্রেনীয়কে আটক করেছে পুলিশ, যাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে জার্মানিতে পণ্যবাহী পরিবহনে আগুন লাগানোর পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যেই ইউক্রেনের ওপর নির্মিত তিনটি তথ্যচিত্র দিয়ে শুরু হয়েছে কান চলচ্চিত্র উৎসব। আয়োজকরা বলছেন, ইউরোপের এই যুদ্ধ নিয়ে শিল্পীদের দায়বদ্ধতা তুলে ধরতেই এই আয়োজন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন ত রস ক

এছাড়াও পড়ুন:

কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে ইরান: আইএইএ প্রধান

ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই আবারও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে। তাতেই পারমাণবিক বোমা তৈরির সক্ষমতা অর্জন সম্ভব বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি।

গতকাল শনিবার সিবিএস নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

রাফায়েল গ্রোসি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালালেও সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি এসব স্থাপনা। তিনি বলেন, খোলাখুলি বললে, কেউ বলতে পারে না যে সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এখনও কিছু রয়েছে।

যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি– ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

গত ১৩ জুন ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলের দাবি— ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রও হামলায় যোগ দেয় এবং ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে বোমা ফেলে। কিন্তু এই হামলায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।

সিবিএস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন, তেহরান কয়েক মাসের মধ্যেই সেন্ট্রিফিউজ ঘুরিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারে। তাদের এখনো শিল্প ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা রয়েছে। সুতরাং, যদি তারা চায়, তবে আবারও এটি শুরু করতে পারবে।

এর আগে পেন্টাগনের একটি গোয়েন্দা মূল্যায়নেও বলা হয়, মার্কিন হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিতে পেরেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। একইসঙ্গে তিনি মিডিয়ার বিরুদ্ধে ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক অভিযানে অবমূল্যায়নের অপচেষ্টা করার অভিযোগ তোলেন।

ট্রাম্প ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ আবারও শুরু হলে তিনি ইরানে আবারও বোমা হামলা করবেন। যদিও এই মুহূর্তে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।

অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ‘গুরুতর’। তবে এ সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

আইএইএ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পক্ষ অবলম্বন করছে এমন অভিযোগ তোলে গত সপ্তাহে ইরানের পার্লামেন্ট সংস্থাটির সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের পদক্ষেপ নেয়।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা গত মাসে জানায়, ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধবিষয়ক চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তবে ইরান দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ১৫ বছর পর্যন্ত ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না এবং ফোরদো স্থাপনায় কোনো সমৃদ্ধকরণ চলবে না। তবে ট্রাম্প ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন এবং পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এরপর ইরান ওই আরোপিত সীমাবদ্ধতা লঙ্ঘন করতে থাকে। ২০২১ সালে ফোরদোতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ আবারও শুরু করে ইরান।

আইএইএর তথ্য অনুযায়ী, ইরান ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এত পরিমাণে মজুত করেছে যা দিয়ে নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গুরু-শিষ্যের লড়াইয়ে আজ মায়ামি বনাম পিএসজি
  • চার বছরের অপেক্ষার অবসান: বার্সার কাছ থেকে বকেয়া পাচ্ছেন মেসি
  • প্রথমবার চঞ্চলের সঙ্গে জুটি হচ্ছেন ঋতুপর্ণা
  • চঞ্চল চৌধুরী বললেন, কথা চলছে কিন্তু চূড়ান্ত হয়নি
  • কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে ইরান: আইএইএ প্রধান
  • ‘রিভার্স ব্রেইন ড্রেন’ কি আর ঘটবে?
  • যৌনপল্লি থেকে নারীর ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প
  • ফিলিপাইনে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প
  • অর্থনীতির প্রাণ ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ
  • আমরা আরও প্রযুক্তিনির্ভর ঋণ প্রক্রিয়া চালু করব