আইপিএলের জন্য এখনও ছাড়পত্র চাননি মুস্তাফিজ
Published: 14th, May 2025 GMT
শেষ মুহূর্তে দিল্লি ক্যাপিটালসের স্কোয়াডে নাম ওঠার খবর ছড়িয়ে পড়লেও এখনো নিশ্চিত নয় মুস্তাফিজুর রহমানের আইপিএল খেলা। কারণ, আইপিএল, দিল্লি ক্যাপিটালস কিংবা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)—কেউই এখনো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে আনুষ্ঠানিক কোনো ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন আসেনি।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে নিতে হলে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেট বোর্ডের কাছে ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন করতে হয় ফ্রাঞ্চাইজিকে । সেই প্রক্রিয়া এখনো শুরু না হওয়ায় মুস্তাফিজের এবারের আসরে খেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। বিসিবি ক্রিকেট অপারেশন্স ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিস জানিয়েছেন, ছাড়পত্রের আবেদন পেলে সেটি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
দিল্লি ক্যাপিটালস ৬ কোটি রুপিতে মুস্তাফিজকে দলে নেওয়ার কথা জানালেও তার আইপিএলে খেলার জন্য বোর্ড ছাড়পত্র পাওয়া এখনো বাকি। ফলে বলা যায়, ‘দ্য ফিজ’-এর এবারের আইপিএল ভাগ্য এখনো ঝুলে আছে।
এদিকে, চলতি মাসের ১৭ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে আইপিএলের বাকি অংশ। দিল্লি তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ১৮ মে, প্রতিপক্ষ গুজরাট টাইটানস। তবে এর আগের দিনই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ওই সিরিজের স্কোয়াডে রয়েছেন মুস্তাফিজও। তাই বলা যায়, আরব আমিরাত সিরিজ শেষ করার আগে আইপিএলে যাওয়া হচ্ছে না মুস্তাফিজের। ছাড়পত্র পেলে পাকিস্তান সিরিজেও থাকা হবে না বাঁহাতি এই পেসারের।
এর আগে, চলমান আইপিএলের জন্য ব্যক্তিগত কারণে সরে দাঁড়ানো জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের জায়গায় বিকল্প হিসেবে মুস্তাফিজকে দলে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস। যদিও এই চুক্তি শুধুই চলতি আসরের বাকি অংশের জন্য, পরের মৌসুমে তাকে ধরে রাখতে পারবে না দলটি।
মুস্তাফিজের আইপিএল ক্যারিয়ারও বেশ সমৃদ্ধ। ২০১৬ সালে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে অভিষেকের পর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস, দিল্লি ক্যাপিটালস এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছেন তিনি।
৫৭টি ম্যাচে ৬১ উইকেট শিকার করা এই বাঁহাতি পেসার আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতেও সফল। বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন ১০৬ ম্যাচ, নিয়েছেন ১৩২ উইকেট।
সব মিলিয়ে বড় অঙ্কের আর্থিক চুক্তিতে আইপিএলে নাম লেখালেও মাঠে নামার আগে শেষ কথা বলবে বিসিবি। এখন দেখার বিষয়, শেষ পর্যন্ত ছাড়পত্র আসে কি না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ ল ল ক য প ট লস ম স ত ফ জ র রহম ন ক য প ট লস ছ ড়পত র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
যুগোপযোগী করা হচ্ছে মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম, আগামী বছরই চালু
মাধ্যমিক স্তরের চলমান শিক্ষাক্রম আরও যুগোপযোগী করে আগামী বছর থেকে নতুনভাবে চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এ শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর ও বাস্তবসম্মত পাঠদান হবে। মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথমে এটি চালু হবে। পরে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ২৫ জুন এ নিয়ে এনসিটিবিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে– এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বা কোন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে, তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নতুন কারিকুলাম তৈরি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলমান। চলতি মাসে কারিকুলাম বিষয়ে কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল। সেটি পিছিয়ে আগামী জুলাইয়ে করা হবে বলেও জানান এনসিটিবি কর্মকর্তারা।
এনসিটিবির সচিব সাহতাব উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম যাচাই-বাছাই করে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকেই। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও পরে ক্রম অনুসারে অন্য শ্রেণিতে তা চালু করা হবে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাতবার শিক্ষাক্রম বা শিক্ষাপদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার। প্রথম পাঁচবার শিক্ষাক্রমের মূল থিম ঠিক রেখে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে বড়সড়ো পরিবর্তন আনা হয়। সে বারের শিক্ষাক্রমটি ‘সৃজনশীল পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। এ পদ্ধতি প্রণয়নের ৯ বছরের মাথায় ২০২১ সালে আবারও নতুন একটি শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন করা হয়।
সেই রূপরেখা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিখনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এ শিক্ষাক্রম। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে হাতে-কলমে শেখানো হবে।
অভিভাবকরা সেই শিক্ষাক্রম স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করতে পারেননি। তাদের অভিযোগ ছিল, এমন শিক্ষাক্রমের কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শিক্ষাক্রম বাতিলে টানা আন্দোলনও হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতন হলে একই মাসের শেষ দিকে বাতিল করা হয় সেই শিক্ষাক্রম। ফিরিয়ে আনা হয় ২০১২ সালে প্রণীত আলোচিত সৃজনশীল শিক্ষাক্রম।
এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কিছু বিষয় ছিল, যা ছিল সময়োপযোগী। নতুন যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে, সেখানে ২০২৩ ও ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের অনেক বিষয় থাকবে। ২০২৭ সালে চালু হওয়া শিক্ষাক্রম কেমন হবে, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাজনৈতিক সরকারের প্রত্যাশার ওপর।