গলায় ইট-বালুর বস্তা বাঁধা মরদেহ ভাসছিল নদীতে
Published: 16th, May 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাগলা নদী থেকে গলায় ইট ও বালুর বস্তা বাঁধা এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৬ মে) সকালে উপজেলার তর্তিপুর শ্মশান ঘাটের কাছ থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়।
পুলিশের ধারণা, প্রায় ৪০ বছর বয়সী ওই বক্তিকে হত্যার পর মরদেহ গুমের জন্য গলায় ইট ও বালুর বস্তা বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে পাগলা নদীর তর্তিপুর শ্মশান ঘাটের কাছাকাছি একটি মরদেহ ভাসতে দেখেন তারা। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি নদী থেকে উদ্ধার করে। মরদেহের গলায় ইট ও বালুর বস্তা বাঁধা ছিল।
আরো পড়ুন:
নিখোঁজের ১৯ ঘণ্টা পর নদীতে ভেসে উঠল শিশুর লাশ
নারীর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিল পোড়া
শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া বলেন, “নদীতে মরদেহ ভাসছে স্থানীয়দের থেকে এমন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। তারা ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “মারা যাওয়া ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। আমরা ধারণা করছি, হত্যার পর মরদেহটি গুম করতে গলায় ইট ও বালুর বস্তা বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ নদ উদ ধ র র মরদ হ বগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে ফের ছাত্রী হেনস্তাসহ নানা অভিযোগ এক শিক্ষকের বিরূদ্ধে
আবারো ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, হেনস্তাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিক্ষক বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলাম।
গত ২২ জুন বিভাগটির অন্তত ডজনখানেক ছাত্রী এসব অভিযোগ উল্লেখ করে বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত দেন। একইসঙ্গে তারা তদন্ত সাপেক্ষে ওই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।
আরো পড়ুন:
হল থেকে উত্তরপত্র নিয়ে পালাল পরীক্ষার্থী
নকল সরবরাহের সময় ছাত্রদলের সভাপতি গ্রেপ্তার
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ জুন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে তাকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয় বিভাগটি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচানোর চেষ্টায় শিক্ষকরা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের ডেকে সমঝোতার চেষ্টা করছেন।
তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষক বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ছাত্রীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে আসছিলেন। তবে এতদিন কেউ মুখ খোলার সাহস করেননি। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গত ২২ জুন বিভাগের সভাপতি বরাবর তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তাকে বিরত রেখেছে বিভাগটি। তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।
অভিযোগে এক ছাত্রী লেখেন, “স্যার আমাকে ইমোতে ভিডিও কল দেন। আমি কল রিসিভ না করায় পরে অডিও কল দেন। তখন তিনি বলেন, ‘অনেকদিন তোমাদের দেখি না, তোমরা মোটা হয়েছো না চিকন হয়েছো দেখার জন্য ভিডিও কল দিচ্ছি।’ তারপর উনি বলেন, ‘তোমার কি কথা বলার লোক আছে?’ আমি বলি, না নেই। তখন তিনি বলেন, ‘এখন বলছো কেউ নাই, কিছুদিন পর তো দেখবো ক্যাম্পাসে কোনো ছেলের হাত ধরে ঘুরছো।’ এছাড়াও দাম্পত্য জীবন, ব্যক্তিগত শারীরিক ও প্রাইভেট পার্ট নিয়েও জিজ্ঞাসা করেন।”
আরেক ছাত্রী লেখেন, “স্যার একদিন আমাকে আলাদাভাবে রুমে ডেকে বলেন, ‘তুমি ভালো বাসা পেলে আমাকেও একদিন রুমে দাওয়াত দিও। তোমাকে বলেছিলাম, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে শারীরিক সম্পর্ক না থাকলে সংসার টিকে না। তুমি আমার কথা শুনো নাই।’ এ সময় তিনি আমাকে বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক ও ফ্রি-মিক্সিং এর উপকারিতা বোঝান।”
অপর এক ছাত্রীকে ওই শিক্ষক বলেন, “এত সুন্দর হয়ে কী লাভ? যদি কোনো বয়ফ্রেন্ডই না থাকে।”
ভুক্তভোগী আরেক ছাত্রী বলেন, “ওই শিক্ষক দ্বারা হেনস্তার শিকার ছাত্রীদের অনেকেই বিবাহিত হওয়ায়, তারা তাদের পরিবারের কথা ভেবে এতদিন মুখ খোলেননি। কেউ কেউ তার যন্ত্রণায় আত্মাহত্যা করতে চেয়েছিল। সাময়িক অব্যাহতি কোনো সমাধান নয়, আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাই।”
শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগ অসত্য দাবি করে অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, “আমি তাদের সঙ্গে যে দৃষ্টিভঙ্গিতে কথা বলেছি, তারা সেটাকে ইতিবাচকভাবে নেয়নি। আমি কোনো শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করিনি। বরং তারা আমার কথা ও কাজকে ভুলভাবে নিয়েছে। আমি মনে করি পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে অসত্য অভিযোগ দিয়েছে। আর কখন কোন পরিস্থিতিতে কি বলেছি, তা আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।”
তিনি বলেন, “বিভাগের বিভিন্ন কাজের সুবাদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেক প্রোগ্রাম ও মিটিং করেছি। আমি তাদের আন্তরিকতা নিয়ে সুন্দর ড্রেস পড়ে আসার কথা বলেছি। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি সবার মেন্টালিটি সমান না। আর অনেক সময় ক্লাসে দেরি করে আসলে তাদের অফিসে ডেকে নিয়ে যদি কথা বলি, এটা কি খারাপ কিছু?”
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরে আমরা নিয়মানুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রাথমিকভাবে আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। আপাতত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।”
গত ৭ অক্টোবর ছাত্রী হেনস্তা, শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ, কথা না শুনলে মার্ক কম দেওয়া ও ছাত্রদের জোরপূর্বক সমকামিতায় বাধ্য করাসহ নানা অভিযোগ ওঠে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত দুইটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী