রোনালদো বললেন, পর্তুগালের হয়ে শিরোপা ক্লাবে জেতা সব ট্রফির চেয়ে বড়
Published: 9th, June 2025 GMT
২০১৯ সালের পর ২০২৫—দ্বিতীয়বারের মতো উয়েফা নেশনস লিগ জিতেছে পর্তুগাল, সেই সঙ্গে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও। মহাদেশীয় প্রতিযোগিতাটিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর রোনালদো বলেছেন, পর্তুগালের হয়ে শিরোপা জয় তাঁর ক্লাব ক্যারিয়ারে জেতা সব ট্রফির চেয়ে বড়।
৪০ বছর বয়সী রোনালদো ২৩ বছরের ক্লাব ফুটবল ক্যারিয়ারে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩২টি ট্রফি জিতেছেন। আর পর্তুগালের হয়ে জিতলেন এবারসহ তৃতীয়বার। জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথমবার ট্রফির স্বাদ পেয়েছিলেন ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে।
গতকাল রাতে মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় নেশনস লিগের ফাইনালে পর্তুগাল টাইব্রেকারে ৫-৩ গোলে হারায় স্পেনকে। ম্যাচ টাইব্রেকারে যাওয়ার আগে দুই দলের ১২০ মিনিটের খেলা ২-২ সমতায় ছিল। ম্যাচে দুবার পিছিয়ে পড়েছিল পর্তুগাল। প্রথমবার সমতা ফেরান নুনো মেন্দেজ, দ্বিতীয়বার রোনালদো।
নিজের ১৩৮তম আন্তর্জাতিক গোলের ম্যাচে দল শিরোপা জেতার পর আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন রোনালদো। তাঁর চোখে জল দেখা গেছে। পরে স্পোর্ট টিভিকে ৫ বারের ব্যালন ডি’অরজয়ী এই তারকা বলেন, ‘কী যে আনন্দ লাগছে! প্রথমত, এই প্রজন্মের জন্য। যারা এমন একটি বড় শিরোপার যোগ্য ছিল। আমাদের পরিবারগুলোর জন্যও—এখানে আমার সন্তানরা এসেছে, আমার স্ত্রী, ভাই এবং বন্ধুরাও এসেছে।’
পর্তুগালের জার্সিতে নেশনস লিগ জয়কে কতটা বড় করে দেখছেন, সেটি বোঝাতে গিয়ে রোনালদো বলেন, ‘পর্তুগালের হয়ে জেতাটা সব সময়ই বিশেষ কিছু। আমার ক্লাবের হয়ে অনেক ট্রফি আছে। কিন্তু পর্তুগালের হয়ে জয় পাওয়ার চেয়ে বড় কিছুই নেই। এই যে চোখে জল আসা, কর্তব্য পালন করা.
২০০৩ সাল থেকে পর্তুগাল জাতীয় দলে খেলে আসছেন রোনালদো। সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসর খেলা তারকা এখনো দেশের হয়ে খেলতে নামলে বিশেষ কিছু অনুভব করেন, ‘পর্তুগালের হয়ে কথা বলতে গেলে একটা বিশেষ অনুভূতি হয়। এই প্রজন্মের অধিনায়ক হওয়াটাও গর্বের বিষয়। জাতীয় দলের হয়ে একটি শিরোপা জেতা সব সময়ই সর্বোচ্চ সাফল্য।’
২০১৬ সালে পর্তুগালের হয়ে প্রথম শিরোপা জয়ের ম্যাচে চোটের কারণে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারেননি রোনালদো। জয়ের মুহূর্তে ছিলেন টাচলাইনের বাইরেও। গতকাল স্পেনের বিপক্ষে ফাইনালেও চোটের কারণে আগেভাগে মাঠ ছেড়ে যেতে হয়েছে তাঁকে, টাইব্রেকারে ছিলেন ডাগআউটে।
এ বিষয়ে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও জুভেন্টাস তারকা বলেন, ‘ম্যাচের আগে গা গরমের সময়ই কিছুটা অস্বস্তি ছিল। কিছুটা সময় খারাপ লাগছিল। তবে এটা জাতীয় দলের ম্যাচ। খেলার জন্য আমার পা ভাঙতে হলে ভাঙুক। আমাকে ট্রফি জিততে হবে, খেলতে হবে, নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিতে হবে। কারণ এটা আমার দেশের জন্য। আমরা মানুষ অল্প, কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষা অনেক বড়।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ত গ ল র হয় জ ত য় দল র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সব মাধ্যমে কাজ করতে চান জৌপারী
২০১০ সালে ঢাকায় এসেছেন বান্দরবানের মেয়ে জৌপারী লুসাই। পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন, ঘুণাক্ষরেও অভিনয়ে আসার কথা ভাবেননি। ২০১২ সালে এনটিভির টেলিফিল্ম শেষ বলে কিছু নেই দিয়ে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান জৌপারী। তখন বিএএফ শাহীন কলেজে পড়তেন। এক বন্ধুর কাছে শুনলেন টেলিফিল্মে এক কিশোরী চরিত্রের জন্য শিল্পী খুঁজছেন নির্মাতা মেজবাউর রহমান। পরে অডিশন দিয়ে টিকে যান।
নিজেকে প্রথমবার ছোট পর্দায় দেখে রীতিমতো আপ্লুত হয়েছিলেন। সেই সময়ের অনুভূতিকে অনেকটা ‘প্রথম প্রেমে পড়ার’ মতো বললেন এই তরুণ অভিনেত্রী। টেলিফিল্মটি প্রচারের পর পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছিলেন, যেটি তাঁকে অভিনয়ে অনুপ্রাণিত করেছে।
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ থেকে ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের আলোচিত সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর-এ মিমি চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন জৌপারী। এটি ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খেলনাছবির বিজ্ঞাপন করেছিলাম, সেখানে নির্মাতা সাদ ভাইও ছিলেন।’ খেলনাছবির সূত্র ধরেই সিনেমাটিতে কাজের সুযোগ পান তিনি। ২০১৭ সালে সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হন, ২০১৮ সালে শুটিং করেন।
জৌপারী লুসাই বলেন, ‘সিনেমাটি করার আগে অভিনয় নিয়ে খুব একটা বুঝতাম না। সিনেমাটি করার পর অভিনয়কে সিরিয়াসলি নিই। তখন মনে হয়েছিল অভিনয় চালিয়ে যাব। সঙ্গে অভিনয় শিখবও।’
বঙ্গ অরিজিনাল সিরিজ বিএনজি-তে অভিনয় করে তরুণ দর্শকের কাছে পৌঁছেছেন জৌপারী। আরেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সারভাইভ-এও মূল চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘বিএনজি ও সারভাইভ দুটি কাজের জন্যই খুব ভালো রেসপন্স পেয়েছি। দুটি কাজ দেখে অনেকে আমাকে চিনেছেন।’
প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে কোন কাজটিকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বলবেন? জৌপারী বলেন, ‘আসলে এটা আমার পক্ষে বলা কঠিন। প্রতিটা কাজই মন থেকেই করি। আমি কাজ করে যেতে চাই, কাজটাকে ভালোবাসি।’
এর মাঝে অভিনয়ে নিজেকে শাণিত করতে নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদের কর্মশালায় অংশ নেন জৌপারী। জামিল আহমেদ নির্দেশিত আমি বীরাঙ্গনা বলছি-এ একজন নির্যাতিতা পাহাড়ি নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি।
‘পারফেক্ট ওয়াইফ’ ইরা
২২ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া চরকির ফ্ল্যাশ ফিকশন পারফেক্ট ওয়াইফ-এ একজন জাপানি তরুণী ইরার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জৌপারী। ফিকশনটি পরিচালনা করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। ফিকশনটি মুক্তির পর ভালো সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে জৌপারী বলেন, ‘আমার পরিচিতদের মধ্যে যাঁরা কাজটা দেখেছেন, তাঁরা সবাই চরিত্রটা পছন্দ করেছেন। অনেকে বলেছেন, তুমি রোবট না মানুষ।’
সেলিমের পরিচালনায় এবারই প্রথম কাজ করেছেন তিনি। কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো। কারণ, উনি আসলে অ্যাক্টিংটাকে দারুণভাবে ডিল করেন। খুবই আরাম করে আমি কাজ করেছি। অভিনয়ের ক্ষেত্রে পরিচালক অনেক ম্যাটার করে। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ যে রকম আমাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন, যেভাবে ইচ্ছা তুমি করো, ঠিক একইভাবে আমি বলব যে এই চরিত্রটা (ইরা) করতে গিয়ে আমি আমার মনে হয়েছে যে আমি আরও বেশি এনজয় করেছি।’
সব মাধ্যমে কাজ করতে চান
ওটিটি, প্রেক্ষাগৃহের সিনেমা থেকে টিভি নাটক—সব মাধ্যমেই কাজ করেছেন জৌপারী। তিনি বলেন, ‘টিভি হোক, ওটিটি হোক কিংবা সিনেমা—সব মাধ্যমেই অভিনয় করতে চাই।’
ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর-এর পর আর কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি। মাঝে এনামুল করিম নির্ঝরের একটি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন, তবে সিনেমাটি এখনো মুক্তি পায়নি।
অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে চান জানিয়ে জৌপারী বলেন, ‘আমি অভিনয়ের কোন স্টেজে আছি, জানি না। তবে অভিনয়টা আমার প্রফেশন। আমার প্যাশনের জায়গাও। আমি এটা সারা জীবন করে যেতে চাই।’
সামনে কী করছেন? তিনি বলেন, এখনো কোনো কাজ চূড়ান্ত হয়নি, তবে কিছু কাজের কথাবার্তা চলছে। যদি সবকিছু কনফার্ম হয়, তাহলে তো সামনের বছর দেখা যেতে পারে।
জৌপারী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিডিয়া স্টাডিজ ও জার্নালিজমে পড়াশোনা করেছেন।