গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ধস, রক্তের জন্য হাহাকার
Published: 19th, June 2025 GMT
ইসরায়েলি হামলা ও অব্যাহত অবরোধের কারণে গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়েছে। বুধবার জাতিসংঘের মানবিকবিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, আহত মানুষের সংখ্যা বাড়ায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের মা ও শিশু ওয়ার্ড খালি করে সেটিকে জরুরি অপারেশন থিয়েটারে রূপান্তর করতে হয়েছে। এখানে আসা আহতদের অনেকেই স্থানীয় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাদ্য সহায়তা আনতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলার শিকার হন।
ওসিএইচএ জানিয়েছে, জীবন বাঁচাতে অনেক ক্ষেত্রেই আহতদের হাত-পায়ের মতো অঙ্গ কেটে ফেলতে হয়েছে চিকিৎসকদের। প্রচণ্ড সংকটের মধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের ঘাটতি এই সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে। সংস্থাটি জানায়, প্রতিদিনই গাজা উপত্যকার বহু রোগী রক্ত সংস্থানের জন্য হাহাকার করছেন। কিন্তু রক্তের মজুত এতই কম, চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, জরুরি সেবাদানকারীদের খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে গাজায়। এই সংকট এতই তীব্র, ক্ষুধায় অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন অনেকেই। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট ৫৫ হাজার ৭০৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ১০১ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬৯ জন নিহত ও ২২১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার সকালে ত্রাণ কেন্দ্রে অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলায় আরও অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৭২ জন। এ ছাড়া গাজা শহরের কাছে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আবারও সতর্ক করে বলেছে, হাসপাতালগুলোর কাছে মজুত থাকা জ্বালানিতে সর্বোচ্চ তিন দিন চলবে। আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে হাসপাতালের জ্বালানি মজুতের স্থানে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী। তারা বলছে, ওই এলাকাগুলো ‘রেড জোন’ বা সামরিক অভিযান চলমান এলাকা। এতে জ্বালানির অভাবে হাসপাতালগুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। কারণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় হাসপাতালগুলোর সব গুরুত্বপূর্ণ বিভাগই জেনারেটরের ওপর নির্ভরশীল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, আগ্রাসন শুরুর আগে গাজায় ৩৮টি হাসপাতাল থাকলেও এখন মাত্র ১৬টি হাসপাতাল আংশিকভাবে চালু রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি সরকারি ও ১১টি বেসরকারি। এর বাইরে জরুরি সেবা দিতে সক্ষম আটটি ফিল্ড হাসপাতাল এখনও চলছে।
এদিকে, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে নজিরবিহীনভাবে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম পবিত্র এই স্থানটি করোনা মহামারির সময়ও পুরোপুরি বন্ধ ছিল না। ইসলামিক ওয়াক্ফ কাউন্সিলের সদস্য ড.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গাইবান্ধায় নেওয়া হলো খুবি শিক্ষার্থীর মরদেহ
রাঙামাটির সাজেকে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায় পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খাগড়াছড়ি সেনানিবাস থেকে মরদেহটি নিয়ে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি।
আরো পড়ুন:
দাবি মেনে নেওয়ায় অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা
যবিপ্রবিসাসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
এর আগে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে দীঘিনালা-সাজেক সড়কের সিজকছড়া এলাকায় খুবি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহনকারী চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে যায়। এতে মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী (২৩) নিহত হন। আহত হন শিক্ষকসহ আরো ১২ জন। শিক্ষার্থীদের সবাই চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত।
স্থানীয়রা ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত উদ্ধার কাজ চালিয়ে আহতদের খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে গুরুতর আহতদের বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আহতদের মধ্যে অন্তত ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
খুবি শিক্ষার্থী রুবিনার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে। আজ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সেখানে পৌঁছায় মরদেহ বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি।
সেনাবাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, বেসামরিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি মরদেহ নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খাগড়াছড়ি রিজিয়ন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতাল থেকে মরদেহটি গ্রহণ করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মো. রাশেদুর রহমান ও শিক্ষার্থী রণজিৎ রায়। রুবিনার মরদেহ হস্তান্তরের সময় খাগড়াছড়ি রিজিয়ন ও সদর দপ্তর ২০৩ পদাতিক ব্রিগেডের জিটু-আই মেজর কাজী মোস্তফা আরেফিন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুমানা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, বিকেলে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সেফালিকা ত্রিপুরা, জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসা সহায়তায় ১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. সাবের হোসেন বলেন, “গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। আর নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে গাইবান্ধায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
ঢাকা/হাসিব/মেহেদী