বিপিএলে বিসিবির আগ্রহ বিদেশি প্রতিষ্ঠানে
Published: 23rd, June 2025 GMT
বিপিএলের প্রতি বৈশ্বিক ক্রিকেটারদের ব্যাপক আগ্রহ ছিল প্রথম দিকে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটাররা খেলেছেন ঢাকার টি২০ লিগে। ২০২০ সাল পর্যন্ত বড় কোম্পানির হাতে ছিল বেশির ভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা। বেক্সিমকো, জেমকন, বসুন্ধরা, ওরিয়েন্ট, ডিবিএল ও আলিফ গ্রুপের হাতে ছিল দলগুলো। বিসিবি পেশাদারিত্ব দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় এসব কোম্পানির বেশির ভাগই ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।
দেরিতে হলেও সেই ভুলের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে ডিসেম্বরে শুরু হতে যাওয়া বিপিএলকে ঢেলে সাজাতে চায় বিসিবি। ১৪ বছর পর বাণিজ্যিক ও পেশাদার মডেল দেওয়া হতে পারে দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ লিগে। এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেওয়া হতে পারে বলে জানান বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের নতুন চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনাম। আইএল টি২০ বা এসএ২০ লিগের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠান চাইলে বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিতেও বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে বলে জানান বিসিবির একজন কর্মকর্তা।
২০১২ সালে বিপিএল শুরু হয়েছিল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গেম অনের মাধ্যমে। আইপিএলের মডেল অনুসরণ করে ক্রিকেটারদের নিলাম, ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচন ও রাজস্ব বণ্টন করা হয়। অংশগ্রহণকারী ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি সাড়ে সাত লাখ ডলার করে লভ্যাংশ দেওয়া হলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি নেওয়া হয় এক মিলিয়ন ডলার। এতে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা লভ্যাংশ পেয়ে খুশি থাকলেও বিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজি ফির কারণে পাঁচ লাখ ডলার অতিরিক্ত ব্যয় করতে হিমশিম খেয়েছে।
ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছিল ক্রিকেটারের কোটি কোটি টাকা সম্মানী পরিশোধ করতে গিয়ে। টুর্নামেন্ট শেষে সম্মানী পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বিদেশিদের দায়িত্ব নেয় বিসিবি। প্রথম আসরে গেম অন বা ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে চুক্তিও ছিল না। টুর্নামেন্ট শেষে নানা জটিলতা দেখা দেওয়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো গেম অনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে। ফলে প্রথম দুই আসরের পর ফ্র্যাঞ্চাইজিদের লভ্যাংশ দেওয়া বন্ধ করে দেয় বিসিবি।
গেম অনের সঙ্গে বিসিবির অভিজ্ঞতা সুখকর না হলেও নতুন করে বিপিএল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে বর্তমান চেয়ারম্যান মাহাবুবুল আনামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বিপিএলের পুরো কাঠামো ঠিক করতে হবে। ফ্র্যাঞ্চাইজি নীতিমালা থেকে শুরু করে টুর্নামেন্ট কীভাবে হলে বিপিএল বাণিজ্যিক টুর্নামেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে, সে চেষ্টা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর মডেল অনুসরণ করা যেতে পারে। আইপিএল নিয়ে কাজ করা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির পরামর্শ নেওয়া গেলে ভালো হবে।’
বিসিবি একজন কর্মকর্তা গতকাল সমকালকে জানান, ২০২১ সাল পর্যন্ত আইপিএল আয়োজনে দায়িত্ব পালন করা আইএমজিকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বিপিএল আয়োজনে। তিনি বলেন, ‘বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ম্যানেজ করা খুব কঠিন। নিম্বাসের কাছে টিভি সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রির অভিজ্ঞতা ভালো না। আইএমজিকে বিপিএল আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হলে সেটা ভালো না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বরং দেশি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হলে চুক্তির অর্থ আদায়ের সুযোগ থাকবে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকানা নিতে বিদেশি প্রতিষ্ঠিত বড় কোনো কোম্পানির আগ্রহী হলে সুযোগ দেওয়া উচিত।’
বিসিবির একজন পরিচালক জানান, বিদেশি ভালো কোম্পানি এলে ফ্র্যাঞ্চাজি স্বত্ব দেওয়া হতে পারে। যদিও মাহাবুবুল আনাম বলছেন, ‘এই বিষয়টি কার্যকর করতে হলে বোর্ডের সিদ্ধান্ত লাগবে।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বিপিএল নিয়ে কাজ করছেন মাহাবুবুল আনাম ও সদস্য ফাহিম সিনহা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল ফ র য ঞ চ ইজ গ ম অন ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩২৯ জন
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বছর মশাবাহিত এ রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩২ জনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডেঙ্গুতে মৃত সর্বসাম্প্রতিক ব্যক্তি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো এসব তথ্যে বলা হয়েছে, রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩২৯ জন। এ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার ৭৫৮ জন হয়েছে। নতুন রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩৬ জন বরিশাল বিভাগের।
এ ছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৪ জন, ঢাকা বিভাগে ৩৮, ময়মনসিংহ বিভাগে ২, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৪, খুলনা বিভাগে ১৫ এবং রাজশাহী বিভাগে ১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৯০৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৪৮ জন। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৬৬১ জন।
উল্লেখ্য, ডেঙ্গুতে ২০২৩ সালে দেশে এক হাজার ৭০৫ এবং ২০২৪ সালে ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়।