কাল বাদে পরশু শুরু কলম্বো টেস্ট। যে মাঠে খেলা হবে, সেই সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে আজ অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। কথা বলতে অবশ্য সবই ফ্ল্যাশব্যাক বিষয়াদি। নতুন কোনো প্রসঙ্গ নেই, ভবিষ্যৎমুখী নেই। পরশু থেকে শুরু কলম্বো টেস্টের কথা সামান্য উচ্চারিত হলো কেবল মেহেদী হাসান মিরাজের ফেরার প্রসঙ্গেই।

নাজমুলের কাছে প্রশ্ন গেছে মূলত দুটি বিষয়ে। দুটোই পুরোনো চর্চিত বিষয়। এক.

সমালোচকেরা বলছেন, গলে নিজের আর মুশফিকুর রহিমের ব্যক্তিগত অর্জনের কথা চিন্তা করেই নাকি আরও আগে ইনিংস ঘোষণা দেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। ইনিংসটা আরও আগে ঘোষণা করলে শ্রীলঙ্কাকে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট করার যথেষ্ট সময় পেত বাংলাদেশ, থাকত জয়ের সম্ভাবনা। কিন্তু সেটা না করে তারা খেললেন ‘ব্যক্তিগত অর্জন’ আর ড্রয়ের জন্য।

নাজমুল মার্জিত ভাষায় সে ধারণার তীব্র প্রতিবাদই করলেন আজ, ‘হয়তো ঝুঁকি নিতে পারতাম বা আরও আগে ডিক্লেয়ার করা উচিত ছিল, এ রকম অনেকে যার যার জায়গা থেকে বলতেই পারেন। তবে আমার মনে হয় না, না জেনে ব্যক্তিগতভাবে কোনো খেলোয়াড়কে আক্রমণ করা উচিত।’

গল টেস্টের পঞ্চম দিনের সেই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে অধিনায়ক বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত মাইলফলকের জন্য আমাদের ড্রেসিংরুমে কেউ খেলে না। কন্ডিশন দেখে এবং ড্রেসিংরুমে থাকা কোচিং স্টাফ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে দলের জন্য যেটা ভালো মনে হয়েছে, সে সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।’

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তাদের মাটিতে ড্র করাটাও যে বাংলাদেশের জন্য ভালো ফলাফল, মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটাও, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের ভালো স্মৃতি খুব বেশি নেই। তারপরও এ রকম একটা টেস্টে আমরা দাপট দেখিয়ে ড্র করতে পেরেছি, এটা ভালো। সব মিলিয়ে গত টেস্টটা আমরা ভালোভাবে শেষ করতে পেরেছি। আশা করি এই টেস্টেও সেটা পারব।’

এ সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নে নাজমুল আলাদা করেই বলেছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের কথা। গলে প্রথম ইনিংসে ১৬৩ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে বৃষ্টি আসার আগে ৪৯ করে আউট হয়ে যান মুশফিক। নাজমুল বলেছেন. ‘মুশফিক ভাই এত বছর ক্রিকেট খেলেছেন, আমার মনে হয় না ওই ১ রান নিয়ে অনেক বড় কিছু উনি অর্জন করে ফেলতেন। দলের জন্য তিনি কি করেছেন তা আমরা সবাই জানি।’

ইনিংস ঘোষণা করতে সময় নেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে পরে আবার বলেছেন, ‘আমরা যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিলাম বৃষ্টির কারণে সেটা কাজে লাগাতে পারিনি। উইকেট পঞ্চম দিনেও খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। এ কারণেই আমরা তখন ইনিংস ঘোষণা করতে পারিনি। আমাদের বোলিং আক্রমণও একটু অনভিজ্ঞ ছিল। তাসকিন, মিরাজ থাকলে ভিন্ন পরিস্থিতি হতে পারত।’

এ প্রসঙ্গে নাজমুলের শেষ কথা, ‘না জেনে এসব না বলাই ভালো। সবাই খুবই খুশি যে আমরা ভালোভাবে ম্যাচ শেষ করতে পেরেছি।’

দ্বিতীয় মূল প্রসঙ্গ, শ্রীলঙ্কা সিরিজের পরই তিনি টেস্টের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবেন কিনা। শ্রীলঙ্কায় আসার আগে সংবাদ সম্মেলনের দিনও নাজমুল জানতেন টেস্টের মতো ওয়ানডেতেও তিনি অধিনায়ক। কিন্তু এরপর হঠাৎ করেই তাঁকে ডেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি শুধু টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর ওয়ানডে নেতৃত্বের মেয়াদ আর বাড়ছে না। নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক করা হবে মেহেদী হাসান মিরাজকে।

সূত্র জানিয়েছে, বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান নাজমুল আবেদীন এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর নাজমুল হোসেন তাঁকে বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর প্রয়োজনে টেস্ট দলের নেতৃত্ব থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হোক। কারণ তিনি সব সময় মনে করেন এক ড্রেসিংরুমে তিনজন অধিনায়ক থাকা ঠিক নয়।

তখন থেকেই আলোচনা, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের পর নাজমুল হয়তো টেস্ট দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেবেন। কিন্তু আজ নাজমুলই জানিয়েছেন, এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত তিনি এখনো নেননি। এ নিয়ে বোর্ডের কারও সঙ্গে কথাও বলেননি। পরশু থেকে শুরু কলম্বো টেস্টেই আপাতত তাঁর সব মনোযোগ।

কিন্তু এ নিয়ে তো আলোচনা হচ্ছে! নাজমুল হেসে বললেন, ‘আলোচনা তো আগে থেকেই হচ্ছে, আলোচনা হতে থাক। এ নিয়ে কথা বলতে চাই না। একজন অধিনায়ক ও ব্যাটসম্যান হিসেবে আমি এখন টেস্ট ম্যাচটাই ভালোভাবে শেষ করতে চাই। আলোচনা আলোচনার জায়গায় থাক।’

তবে জানা গেছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পর বিষয়টি নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে কথা বলবেন নাজমুল।

তার আগে অধিনায়ক হিসেবে তিনি চান দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই টেস্টের আগে সবার মনোযোগ খেলাতেই থাকুক। অধিনায়কত্ব ছাড়া নিয়ে আলোচনায় কিছুটা বিরক্তিও প্রকাশ করলেন যেন, ‘এ রকম সময়ে এ ধরনের আলোচনা হওয়াই উচিত নয়। এসব আলোচনা ৭-৮ দিন আগে থেকে বা তারও আগে থেকে না হওয়া ভালো। এসব যত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় ততই ভালো। আশা করব পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে সবাই চেষ্টা করবে মাঠে কীভাবে অবদান রাখতে পারে।’

অসুস্থতার কারণে গল টেস্টে খেলেননি মিরাজ। তবে সুস্থ হয়ে তিনি অনুশীলনে ফিরেছেন আগেই। দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর খেলা একরকম নিশ্চিতই বলতে হয়। নাজমুলের সঙ্গে সাংবাদিকদের কথোপকথনে তাঁকে নিয়ে আলোচনার সূত্র ধরে এল কলম্বো টেস্ট প্রসঙ্গও, ‘মিরাজ দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ব্যাটিং-বোলিং দুইভাবেই সে অবদান রাখতে পারে। ও দলে আসায় ব্যাটিং, বোলিং আরও ভালো হবে আশা করি। আশা করব মিরাজ গত সিরিজে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে যেভাবে পারফরম করেছে, মিরাজ সেভাবেই খেলবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র জ র পর প রসঙ গ বল ছ ন কলম ব এ রকম

এছাড়াও পড়ুন:

ডিমে শিশুর অ্যালার্জি কেন হয়, কীভাবে বুঝবেন, সমাধান কী

কেন হয়

শিশুদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা পুরোপুরি গড়ে না ওঠায় অনেক সময় ডিমের প্রোটিনকে শরীর ‘অচেনা’ বা ক্ষতিকর হিসেবে ভুলভাবে শনাক্ত করে। ফলে ঠিক যেভাবে রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা কাজ করে, একই ধরনের প্রতিক্রিয়া এখানে সৃষ্টি হয়। এই প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবেও হতে পারে, আবার অনেক ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টা পরেও দেখা দিতে পারে।

লক্ষণ 

ত্বকে লাল লাল চাকা, একজিমা।

পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব বা মুখের চারপাশে চুলকানো।

সর্দি, শ্বাস নেওয়ার সময় শোঁ শোঁ শব্দ, শ্বাসকষ্ট হওয়া।

দ্রুত হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ কমে যাওয়া। 

অ্যানাফাইলেকসিস শক। 

আরও পড়ুনডিম দিনে কয়টি ও কীভাবে খাবেন০৫ জুলাই ২০২৫রোগনির্ণয় 

শিশুকে প্রথম ডিম খাওয়ানোর সময় অ্যালার্জি উপসর্গ বোঝা যায়। 

চিকিৎসক যদি মনে করেন ডিম বা ডিমযুক্ত খাবার খেলে অ্যালার্জি হয়, তবে তা স্কিন টেস্ট করে নিশ্চিত হতে পারেন।

চিকিৎসা

ডিম ও ডিমযুক্ত খাবার না খাওয়া। 

অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া দমনে অ্যান্টি হিস্টামিন, মারাত্মক অ্যানাফাইলেকসিসে শক ইনজেকশন এপিনেফ্রিন ব্যবহার।

● ডিমে অ্যালার্জি থাকলে কিছু খাদ্য উপাদান পরিহার করা যেমন—এলবুমিন, গ্লোবুলিন ইত্যাদি।

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

আরও পড়ুনডিমের কমলা, না হলুদ কুসুম—কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ