৩৮ রেকর্ড ও সংখ্যাতত্ত্বে মেসির ৩৮তম জন্মদিন উদযাপন
Published: 24th, June 2025 GMT
সর্বজয়ী ফুটবলার লিওনেল মেসি ৩৯ বছরে পা রেখেছেন। আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনার জার্সিতে ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করা মেসি ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সব শিরোপা ও সব ব্যক্তিগত অর্জনে পরিপূর্ণ। ৩৮তম জন্মদিনে মেসির ক্যারিয়ারের সেরা সব রেকর্ড ও অর্জনের ৩৮টি তথ্য তুলে ধরা হলো।
লা লিগায় সর্বাধিক গোল: মেসি বার্সার জার্সিতে ৬৭২ গোল করেছেন। লা লিগায় যা সর্বাধিক ব্যক্তিগত গোলের রেকর্ড।
একক ক্লাবে সর্বাধিক গোল: এক ক্লাবের হয়ে সর্বাধিক ৬৭২ গোলের মালিক মেসি। তিনি সান্তোসের হয়ে পেলের করা ৬৪৩ গোলের রেকর্ড ভেঙেছেন।
এক পঞ্জিকা বর্ষে সর্বাধিক গোল: মেসি ২০১২ সালে ক্লাব ও দেশের হয়ে ৯১ গোল করেছিলেন। এক বছরে যা সর্বাধিক গোলের রেকর্ড।
ইউরোপের শীর্ষ লিগে সর্বাধিক গোল: ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগের ম্যাচে সর্বাধিক ৪৯৬ গোল করেছেন। ভেঙেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড।
সর্বাধিক ব্যালন ডি’অর: মেসি সর্বাধিক ৮বার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন।
ব্যালন ডি’অরে সর্বাধিক সেরা তিন: মেসি ১৪বার ব্যালন ডি’অরে সেরা তিনে শেষ করেছেন।
বিশ্বকাপে দু’বার গোল্ডেন বল: বিশ্বের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ফিফা বিশ্বকাপে দুটি গোল্ডেন বল জিতেছেন মেসি।
ছয়বার ৫০ গোলের কীর্তি: ক্লাব ক্যারিয়ারে মেসি ছয় মৌসুমে অন্তত ৫০ গোল করার কীর্তি গড়েছেন।
সর্বাধিক গোলে সহায়তা: মেসি তার ক্যারিয়ারে সবার চেয়ে বেশি ৩৮৪ গোলে সহায়তা দিয়েছেন। তার মতো এতো গোল আর কেউ করাতে পারেননি।
সর্বাধিক গোল্ডেন বুট: সর্বাধিক ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জয়ী খেলোয়াড় রোনালদো। তিনি ছয়টি গোল্ডেন শু জিতেছেন।
লা লিগায় সর্বাধিক গোলে সহায়তা: মেসি তার লা লিগা ক্যারিয়ারে সর্বাধিক গোলে সহায়তা দেওয়ার কীর্তি গড়েছেন। ১৯২ গোল করিয়েছেন তিনি।
ফিফার সেরা: মেসি ক্যারিয়ারে ৮ ব্যালন ডি’অর ছয় গোল্ডেন বুটের সঙ্গে তিনবার ফিফা দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। যা সর্বাধিক।
লা লিগা শিরোপা: মেসি সর্বাধিক ১০বার লা লিগা শিরোপা জিতেছেন। লা লিগা ক্যারিয়ারে ৯বার মৌসুম সেরা ফুটবলার হয়েছেন।
ক্যারিয়ারে সর্বাধিক ট্রফি: মেসি তার ক্যারিয়ারে সর্বাধিক ৪০টি শিরোপা জিতেছেন।
গ্রুপ পর্বে অপরাজিত: মেসি তার ক্যারিয়ারে ৩৩বার বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। কোন টুর্নামেন্টে তিনি গ্রুপ পর্বে বিদায় নেননি।
অভিষেকে লাল কার্ড: মেসি তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচেই লাল কার্ড দেখেছিলেন। ২০২৫ সালে হাঙ্গেরির বিপক্ষে বেঞ্চ থেকে মাঠে নামার তিন মিনিটের মধ্যে লাল কার্ড দেখেছিলেন তিনি।
ক্যারিয়ারে লাল কার্ড: মেসি তার ক্যারিয়ারে তিনবার লাল কার্ড দেখেছেন। এর মধ্যে দুটি জাতীয় দলের জার্সিতে।
গোলের সেঞ্চুরি: আন্তর্জাতিক ফুটবলে তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে গোলের সেঞ্চুরি করেছেন মেসি। রোনালদো ও আলী দায়ের আছে ওই রেকর্ড।
বিশ্বকাপে গোল: মেসি তার ক্যারিয়ারে ৫টি বিশ্বকাপ খেলেছেন। একমাত্র আর্জেন্টাইন হিসেবে ৪ আসরে গোল করেছেন।
প্রতি পর্বে গোল: কাতার বিশ্বকাপে মেসি গ্রুপ পর্ব, শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে গোল করেছেন। বিশ্বকাপে শেষ ষোলো পর্ব চালু হওয়ার পর একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ওই কীর্তি তার।
হ্যাটট্রিক: মেসি তার ক্যারিয়ারে ৫৯বার হ্যাটট্রিক করেছেন। এর মধ্যে ৪৮বার বার্সার জার্সিতে। একবার ইন্টার মায়ামির জার্সিতে এবং ১০বার দেশের জার্সিতে হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি।
প্রথম মিনিটে গোল: মেসি তার ক্যারিয়ারে এতো এতো রেকর্ড, গোল করলেও কখনো ম্যাচের প্রথম মিনিটে গোল পাননি।
পাঁচ গোল, পাঁচ গোলে সহায়তা: মেসি তার ক্যারিয়ারে দু’বার এক ম্যাচে পাঁচটি করে গোল করেছেন। ক্লাবের হয়ে বায়ার লেভারকুসেনের বিপক্ষে এবং জাতীয় দলের জার্সিতে এস্তোনিয়ার বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন তিনি। ইন্টার মায়ামির জার্সিতে পাঁচ গোলে সহায়তা দেওয়ার রেকর্ড তার নামের পাশে।
ক্যারিয়ারে প্রথম হ্যাটট্রিক: ২০০৬-০৭ মৌসুমে মেসি তার ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে।
বিশ্বকাপে সর্বাধিক ম্যাচ: কাতার বিশ্বকাপের ম্যাচ দিয়ে বিশ্ব মঞ্চে সর্বাধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েন তিনি।
লাতিনের সর্বাধিক ম্যাচ: মেসি ১৯৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। আর্জেন্টিনা ও লাতিন আমেরিকার হয়ে যা সর্বাধিক ম্যাচ খেলার রেকর্ড। সব মিলিয়ে তার ওপরে আছেন তিনজন।
সেভিয়া ও বলিভিয়া প্রীতি: মেসি বার্সার হয়ে সেভিয়ার বিপক্ষে ৩৮ গোল করেছেন। যা একক ক্লাবের বিপক্ষে তার সর্বাধিক। জাতীয় দলের হয়ে বলিভিয়ার জালে সর্বাধিক ১১ গোল দিয়েছেন। যদিও বলিভিয়ায় গিয়ে কখনো গোল করতে পারেননি।
আর্জেন্টিনায় জার্সি নম্বর: মেসি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের পুরোটা নাম্বার টেন পরে খেলেননি। তিনি ১৮ ও ১৯ নম্বর জার্সিও পরেছেন। সর্বশেষ ১০ নম্বরের বাইরে জার্সি পরেছেন ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্রান্সের বিপক্ষে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইংলিশ বধ: মেসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইংলিশ ক্লাবের বিপক্ষে সর্বাধিক ২৭ গোল করেছেন। যা দ্বিতীয় সেরার চেয়ে সাত গোল বেশি।
ফ্রি কিক মাস্টার: মেসি তার ক্যারিয়ারে ৬৮বার ফ্রি কিকে গোল করেছেন। যার ১১টি আর্জেন্টিনার জার্সিতে।
সর্বাধিক কোপা আমেরিকা ম্যাচ: মেসি তার ক্যারিয়ারে সর্বাধিক ৩৯টি কোপা আমেরিকা ম্যাচ খেলেছেন।
টানা গোল: ক্লাব ক্যারিয়ারে ১০ ম্যাচে টানা গোল করেছেন মেসি।
গোলহীন যাত্রা: মেসির ক্লাব ক্যারিয়ারে সবচেয়ে লম্বা গোলখরা গেছে ২০০৬-০৭ মৌসুমে। তখন তরুণ মেসি, উঠতি প্রতিভা। সেকালে ১০ ম্যাচে গোল পাননি আর্জেন্টাইন তারকা।
সর্বাধিক লাইক: মেসির কাতার বিশ্বকাপ জয়ী ছবিতে প্রতিক্রিয়া পড়ে ৭৪.
সেরা একাদশে ১৭বার: মেসি তার ক্যারিয়ারে ১৭বার ফিপ্রো ওয়ার্ল্ড ইলেভেনে জায়গা পেয়েছেন। যা সর্বাধিক। তার পরে থাকা রোনালদো ১৫বার ফিপ্রো ওয়ার্ল্ড ইলেভেন জায়গা পেয়েছেন
অবসর: মেসি ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকা ফাইনালে হারের পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ফাইনালে পেনাল্টি মিস করে একটি বিশ্বকাপ ও তিনটি কোপা আমেরিকা হারের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে অবসর নেন তিনি। ওই অবসর ভেঙে মেসি দুটি কোপা আমেরিকা, একটি বিশ্বকাপ, একটি ফিনালিজিমা জিতেছেন। অলিম্পিক স্বর্ণ জেতায় তিনি সর্বজয়ীর খাতায় নাম তুলেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ফ টবল গ ল কর ছ ন আর জ ন ট ন ল র র কর ড ব শ বক প র প রথম ফ ইন ল আম র ক ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
নীরবতা ভেঙে হঠাৎ রাজনীতিকে ‘না’ বলে দিলেন শমসের মুবিন চৌধুরী
বছর দুয়েক আগেও দেশে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত ও ‘দলছুট’ হিসেবে পরিচিত সাবেক কূটনীতিক শমসের মুবিন চৌধুরীর রাজনৈতিক অবসরের হঠাৎ ঘোষণা ছড়িয়ে পড়েছে রবিবার রাতে।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশ যখন টালমাটাল তার কয়েক মাস আগে নামকাওয়াস্তে দল ‘তৃণমূল বিএনপি’র নেতৃত্বে আসেন শমসের মুবিন, যার পদ ছিল চেয়ারপার্সন।
আরো পড়ুন:
‘আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে’
একটি দল বেহেস্তের টিকিট দেখিয়ে ভোট চাচ্ছে: আমান উল্লাহ
এই দলের মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপির নারায়ণগঞ্জের আরেকজন আলোচিত নেতা তৈমূর আলম খন্দকার। রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে তৈমূর আলমের কাছে চিঠি দিয়ে রাজনীতিকে বিদায় বলে দিয়েছেন শমসের মুবিন।
শমসের মুবিন ও তৈমূর খন্দকারের নেতৃত্বাধীন ‘তৃণমূল বিএনপি’ ডামি দল হিসেবে আখ্যা পায়। তখন অনেকে বলেছিলেন, বিএনপি ভাঙার অপচেষ্টা হিসেবে দলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাম ও পদ ব্যবহার করে তৃণমূল বিএনপি তৈরি করা হয়েছে। একে অনেকে ‘কিংস পার্টি’ নামে অভিহিত করেছিলেন। বিএনপি-জামায়াতসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনে ঘোষণার পরও তখন বেশ কয়েকটি দল রাতারাতি গজিয়ে ওঠে, যার একটি এই তৃণমূল বিএনপি। এসব দল অভিনব কায়দায় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আসার চেষ্টা করেছিল।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে, বদলে গেছে রাজনীতির হাওয়া; নিষিদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম। এখন আর তৃণমূল বিএনপি বলে কোনো দলের কার্যক্রম মাঠে দেখা যায় না; শোনা যায় না তাদের দলের নেতাদের নাম। গণমাধ্যমেও তাদের কোনো উপস্থিতি নেই।
এখন নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে বিএনপি। অথচ কোথাও শমসের মুবিন চৌধুরীর নাম উচ্চারিত হয় না। রাজনীতির আড়ালেই পড়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎ সরব হলেন; তবে রাজনৈতিক বিদায়ের ঘণ্টা ধ্বনি শোনাতেই যেন অচমকা গভীর রাতে গণমাধ্যমে হাজির হলেন তিনি।
তৈমূর খন্দকার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শমসের মুবিন চৌধুরী অনেক দিন ধরেই দলে নিষ্ক্রিয়। তাদের দলও অনেক দিন ধরে নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। তিনি (শমসের মুবিন) ফোন করে অবসরের কথা জানিয়েছেন এবং তার কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন।
তৈমূর খন্দকার বরাবর চিঠিতে শমসের মুবিন লিখেছেন, “এই মর্মে আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে সকলকে অবগত করছি যে, শারীরিক কারণে আমি শমসের এম চৌধুরী রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই সঙ্গে তৃণমূল বিএনপির সকল পদ থেকে আমি পদত্যাগ করিলাম। আমার এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ইং থেকে কার্যকর হইল।”
“আমার উপরে উল্লেখিত সিদ্ধান্ত দলের সংশ্লিষ্ট এবং গণমাধ্যমে অবগত করার জন্য আপনাকে সবিনয় অনুরোধ করিলাম”, লেখেন তিনি।
সাবেক কূটনীতিক শমসের মুবিন চৌধুরী একসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। পরে তিনি বিএনপি ছেড়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ নামে দলেও যোগ দিয়েছিলেন।
বিকল্পধারা ছেড়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল বিএনপি নামে দলটির চেয়ারপারসন হন শমসের মুবিন।
ঢাকা/রায়হান/রাসেল