তিন সীমান্ত দিয়ে ৪৬ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 24th, June 2025 GMT
সুনামগঞ্জ, সিলেট ও লালমনিরহাটের সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ৪৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট এলাকায় দায়িত্বরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা তাদের আটক করেন। আটক সবাই বাংলাদেশি বলে জানা গেছে।
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়াকোট সীমান্ত দিয়ে আজ ভোরে ২০ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। তারা বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন।
বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক জানান, নোয়াকোট বিওপির আওতাধীন বাগানবাড়ি সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবির একটি টহল দল তিন পরিবারের ২০ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে আট নারী, ছয় পুরুষ ও ছয় শিশু রয়েছে। ১৯ জনের বাড়ি কুড়িগ্রামে, আর একজন পাবনার বাসিন্দা।
ছাতক নোয়াকোট বিওপির হাবিলদার কবির আহমদ জানান, আটকদের মঙ্গলবার দুপুরে ছাতক থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই থানার ওসি মোহাম্মদ মুখলেছুর রহমান আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে মঙ্গলবার ভোরে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার মিনাটিলা বিওপির কেন্দ্রী এলাকা দিয়ে ঠেলে পাঠানো ১৯ জনকে আটক করেছে বিজিবি। তারা সবাই কুড়িগ্রামের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে আছে তিন পরিবারের ছয় পুরুষ, ছয় নারী ও সাত শিশু।
এর আগে গত ১২ জুন জৈন্তাপুরের দুটি সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে ও ছাতকের নোয়াকোট সীমান্ত দিয়ে ১৭ জনকে পুশইন করেছিল বিএসএফ। গতকাল আটক ১৯ জনকে থানায় হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক বলেন, ঠিকানা যাচাই-বাছাই শেষে ১৯ জনকে জৈন্তাপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ‘পুশইন’ ঠেকাতে সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বিজিবি।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্ত দিয়ে শিশুসহ সাত জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে তাদের পাঠানোর পর হেফাজতে নেয় বিজিবি। পরে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আটক সবার বাড়ি খুলনার দৌলতপুর উপজেলার খালিশপুর গ্রামে।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোরে ৮৮২ নম্বর মেইন পিলারের ২ নম্বর সাব-পিলার এলাকা দিয়ে সাতজনকে বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ। পরে বিজিবি সদস্যরা তাদের হেফাজতে নেন। সাতজনের মধ্যে তিন শিশু, দুই পুরুষ ও দুই নারী রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
(তথ্য দিয়েছেন সিলেট ব্যুরো, ছাতক প্রতিনিধি ও পাটগ্রাম সংবাদদাতা)
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এসএফ প শইন উপজ ল র ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁর দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
নওগাঁর ধামইরহাট ও সাপাহার সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ ১৮ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাঁদের আটক করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ধামইরহাট উপজেলার কালুপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে গতকাল রাতের কোনো এক সময় ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। পরে রাত ৩টার দিকে ২৭১/১ এস সীমান্ত পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কালুপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বিজিবি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের ধামইরহাট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক ১৪ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও পাঁচজন পুরুষ। তাঁদের বাড়ি খুলনা, নড়াইল ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
নওগাঁর পত্নীতলা ১৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর জানান, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই ১৪ জনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে গতকাল রাতের কোনো এক সময় সাপাহার উপজেলার বামনপাড়া এলাকা দিয়ে চারজনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সীমান্তের ২৪৬/২ এস পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে ওই চারজনকে আটক করে বিজিবি। পরে তাঁদের সাপাহার থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ বলেন, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই চারজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও দুজন নারী। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলায়। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এর আগে গত ৩১ জুলাই নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্তের আগ্রাদ্বিগুণ এলাকা দিয়ে ১০ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।