সুনামগঞ্জ, সিলেট ও লালমনিরহাটের সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ৪৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট এলাকায় দায়িত্বরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা তাদের আটক করেন। আটক সবাই বাংলাদেশি বলে জানা গেছে।

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়াকোট সীমান্ত দিয়ে আজ ভোরে ২০ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। তারা বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিলেন। 

বিজিবির ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক জানান, নোয়াকোট বিওপির আওতাধীন বাগানবাড়ি সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবির একটি টহল দল তিন পরিবারের ২০ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে আট নারী, ছয় পুরুষ ও ছয় শিশু রয়েছে। ১৯ জনের বাড়ি কুড়িগ্রামে, আর একজন পাবনার বাসিন্দা।

ছাতক নোয়াকোট বিওপির হাবিলদার কবির আহমদ জানান, আটকদের মঙ্গলবার দুপুরে ছাতক থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই থানার ওসি মোহাম্মদ মুখলেছুর রহমান আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে মঙ্গলবার ভোরে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার মিনাটিলা বিওপির কেন্দ্রী এলাকা দিয়ে ঠেলে পাঠানো ১৯ জনকে আটক করেছে বিজিবি। তারা সবাই কুড়িগ্রামের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে আছে তিন পরিবারের ছয় পুরুষ, ছয় নারী ও সাত শিশু। 

এর আগে গত ১২ জুন জৈন্তাপুরের দুটি সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে ও ছাতকের নোয়াকোট সীমান্ত দিয়ে ১৭ জনকে পুশইন করেছিল বিএসএফ। গতকাল আটক ১৯ জনকে থানায় হস্তান্তর করেছে বিজিবি।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হক বলেন, ঠিকানা যাচাই-বাছাই শেষে ১৯ জনকে জৈন্তাপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ‘পুশইন’ ঠেকাতে সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বিজিবি।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্ত দিয়ে শিশুসহ সাত জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে তাদের পাঠানোর পর হেফাজতে নেয় বিজিবি। পরে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আটক সবার বাড়ি খুলনার দৌলতপুর উপজেলার খালিশপুর গ্রামে।  

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোরে ৮৮২ নম্বর মেইন পিলারের ২ নম্বর সাব-পিলার এলাকা দিয়ে সাতজনকে বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ। পরে বিজিবি সদস্যরা তাদের হেফাজতে নেন। সাতজনের মধ্যে তিন শিশু, দুই পুরুষ ও দুই নারী রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

(তথ্য দিয়েছেন সিলেট ব্যুরো, ছাতক প্রতিনিধি ও পাটগ্রাম সংবাদদাতা)

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এসএফ প শইন উপজ ল র ব এসএফ

এছাড়াও পড়ুন:

ভাইবোনের শেষ দেখা করাল বিজিবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে এক বিরল মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এক ভারতীয় বৃদ্ধার মরদেহ তার বাংলাদেশি স্বজনদের শেষবারের মতো দেখার সুযোগ করে দিয়েছে।

শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আজমতপুর সীমান্তের শূন্য রেখায় এই হৃদয়স্পর্শী ঘটনা ঘটে। এ সময় বিজিবি ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

কলমাকান্দায় ৩৯ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার

উখিয়ায় ৪ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার

মহানন্দা ব্যাটালিয়নের (৫৯ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, মৃত নারীর নাম সেলিনা বেগম। বার্ধক্যজনিত কারণে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ভারতের মালদা জেলার গোপালগঞ্জ থানার শ্মশানী-চকমাহিলপুরের নিজ বাড়িতে মারা যান। তিনি মৃত গাজলুর রহমানের স্ত্রী। মৃত সেলিনা বেগমের ভাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোল্লাটোলা-বাগিচাপাড়ার বাসিন্দা তোফাজ্জল হক।

তিনি জানান, তার বোনের মরদেহ শেষবারের মতো দেখার জন্য বিজিবির কাছে আবেদন জানান। আবেদনের গুরুত্ব বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয় বিজিবি। তারা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতিতে মরদেহ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। শনিবার সকালে আন্তর্জাতিক সীমারেখায় সীমান্ত পিলার ১৮২/২-এস এর নিকট শূন্য লাইনে তোফাজ্জল হককে তার প্রয়াত বোনের মরদেহ দেখানোর সুযোগ দেয়া হয়।

তিনি আরো জানান, সীমান্তে বিজিবি সবসময় অত্যন্ত মানবিক ভূমিকা পালন করতে চায়। মরদেহ স্বজনদের দেখানোসহ এ ধরনের কার্যক্রমকে বিজিবি মৌলিক কর্তব্য মনে করে।

দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এমন উদ্যোগকে স্থানীয়রা উচ্চ প্রশংসা করেছে। তারা বলছেন, এটি প্রমাণ করে যে মানবিক সম্পর্ক সীমান্তের বেড়াজাল পেরিয়েও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকা/মেহেদী/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভাইবোনের শেষ দেখা করাল বিজিবি