কুমিল্লা নগরের পরিচিত মুখ আকরাম আহমেদ। বয়স ৭৫ বছর পার হয়েছে। তবে বয়সের ভার তাঁকে কাবু করতে পারেনি। প্রতিদিন ভোর হলেই হেঁটে চলেন নগরের এ-গলি থেকে ও-গলি, সঙ্গী সংবাদপত্র।

আকরাম আহমেদ মানুষের কাছে বেশি পরিচিত ইংরেজিতে কথা বলতে পারার কারণে। সবাই তাঁকে সম্মান করেন। ছোটবেলা থেকেই পড়ার প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। সেই আগ্রহ থেকেই তিনি পত্রিকা বিলি করেন। বলা চলে, পড়ার প্রতি ভালোবাসা থেকেই এই বয়সেও তাঁর পত্রিকা নিয়ে ছুটে চলা। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে এভাবেই ছুটে চলেছেন তিনি।

আকরাম বলেন, মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার জন্য সবচেয়ে ভালো মাধ্যম সংবাদপত্র। তিনি চান নতুন প্রজন্মের মধ্যে যেন পাঠাভ্যাস গড়ে ওঠে। এ জন্য তিনি ৭৫ বছর বয়সে ছোটেন পত্রিকা নিয়ে। প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়েই বের হন মানুষের কাছে পত্রিকা পৌঁছে দিতে। বেলা ১১টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায় তাঁর পত্রিকা বিলি।

আকরাম আহমেদ কুমিল্লা নগরের বাদুড়তলা এলাকার বাসিন্দা। তবে সেখানে নিজের একটুকরা জায়গা থাকলেও টাকার অভাবে ঘর বানাতে পারেননি। বিনা পয়সায় থাকেন কুমিল্লা নগরের নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকার একটি গোডাউনে। পত্রিকা বিক্রির টাকা থেকে যা পান তা দিয়েই কোনো রকমে চলেন। তাঁর বাবার বাড়ি ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার শাহাপুর গ্রামে।

আকরাম আহমেদ ১৯৬৮ সালে কুমিল্লা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭০ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। একই প্রতিষ্ঠানে ডিগ্রিতে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা আর হয়নি তাঁর। ৫০ বছর বয়সে বিয়ে করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়। তাঁদের কোনো সন্তান নেই। ২০১২ সালে তাঁর স্ত্রী এরশেদা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাঁকে নিয়ে যান। এরপর আর তিনি ফিরে আসেননি। সেই থেকে একা আছেন তিনি।

আকরাম একসময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গ্রন্থাগারিক পদে কর্মরত ছিলেন। ২০০৮ সালে অবসরে যান। পরে একেক সময় একেক কাজ করেছেন। প্রায় ১০ বছর আগে পত্রিকা বিলি করার সিদ্ধান্ত নেন। কুমিল্লা নগরের বাদুড়তলা এলাকায় পত্রিকা বিলির সময় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটা পর্যায়ে দেখলাম, মানুষের পত্রিকা পড়ার প্রতি আগ্রহ কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে না উঠলে তারা কী শিখবে? যে মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাস আছে, সেই মানুষই জ্ঞানী বলে আমি মনে করি। অবসর একাকী জীবনে কী করা যায়, সেটা যখন ভাবছিলাম, তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম মানুষের কাছে সংবাদপত্র দেওয়ার।’

কুমিল্লার ধর্মসাগরপাড়ের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আকরাম ভাই প্রতিদিন ভোরে আমার বাসায় পত্রিকা দিয়ে যান। তাঁকে আমরা সবাই ভালোবাসি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আকর ম আহম দ নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

সিনেটে সমঝোতা, যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন শেষ হচ্ছে

কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল আবার চালু করা নিয়ে সিনেটে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছেন ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দলের সদস্যরা। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র সরকারে রেকর্ড ৪০ দিন ধরে চলা শাটডাউন বা অচলাবস্থার অবসান হতে চলেছে, খবর মার্কিন সংবাদমাধ্যমের।

সরকারি ব্যয়ের বাজেট পাস নিয়ে দীর্ঘ এ অচলাবস্থার কারণে বহু সরকারি কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে গেছে।

সরকারি ব্যয়ের বাজেট পাস নিয়ে দীর্ঘ এ অচলাবস্থার কারণে বহু সরকারি কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন চলছে, পঞ্চম দফায়ও বিল পাসে ব্যর্থ সিনেট০৭ অক্টোবর ২০২৫

রোববার সিএনএন ও ফক্স নিউজসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা ভর্তুকি, খাদ্য সহায়তা এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারি কর্মী বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়ে টানাপোড়েনের পর আইনপ্রণেতারা আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের তহবিল চালু রাখার জন্য একটি অস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছেছেন।

দেখে মনে হচ্ছে, সরকারের অচলাবস্থা শিগগির শেষ হতে যাচ্ছে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

এ খবর প্রকাশের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে, সরকারের অচলাবস্থা শিগগির শেষ হতে যাচ্ছে।’

ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে সপ্তাহান্তের ছুটি কাটিয়ে হোয়াইট হাউসে ফিরেছেন ট্রাম্প।

আরও পড়ুনশাটডাউন হলেও ট্রাম্প খাদ্যসহায়তা বন্ধ করতে পারবেন না, আদালতের নির্দেশ০১ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকার শাটডাউনের কবলে, ট্রাম্পের হুমকিতেও কাজ হলো না০১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ