খুলনায় সুকান্ত দাস নামের পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে নগরের ইস্টার্ন গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি খানজাহান আলী থানা-পুলিশের হেফাজতে আছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, নগরের তেলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সরকারের ওপর গুলিবর্ষণকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বেলা আড়াইটার দিকে ফুলবাড়ি গেট বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধনের আয়োজন করে খানজাহান আলী থানা বিএনপি। কর্মসূচি শেষে দলটির কর্মীরা ইস্টার্ন গেট এলাকার একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে যান। ঘটনার সময় ওই এলাকা দিয়ে সাদা পোশাকে সিএনজিচালিত তিন চাকার যানে করে যাচ্ছিলেন এসআই সুকান্ত দাস। গাড়িটি যাত্রী ওঠানামা করানোর জন্য ইস্টার্ন গেটের সামনে দাঁড়ালে বিএনপির কয়েকজন কর্মী তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করেন। পরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা এগিয়ে গিয়ে উত্তেজিত কর্মীদের শান্ত করেন এবং সুকান্ত দাসকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

খুলনা মহানগর পুলিশের খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জনতা এসআই সুকান্তকে মারধর করছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। তখন পরিস্থিতি খুব উত্তপ্ত ছিল। তাঁরা বুঝিয়ে তাঁকে (সুকান্ত) পুলিশের হেফাজতে নিয়ে নেন। পরে চিকিৎসার জন্য তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

খুলনা মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ ফুলবাড়ী গেট এলাকায় বিএনপির একটা মানববন্ধন কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচি শেষের দিকে নেতা–কর্মীরা জানতে পারেন যে ইস্টার্ন গেটে স্থানীয় জনগণ এসআই সুকান্তকে মারধর করছে। ওখানকার মানুষজনও তার নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সুকান্ত যেহেতু আলোচিত মানুষ, তাই খবর পেয়ে নেতা–কর্মীরা সেখানে যান ও সুকান্তকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে দেন। বিএনপি বিশ্বাস করে, কেউ অপরাধী হলে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে তার বিচার হবে। বিএনপির কেউ তার মারধরের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন।

সুকান্তের বিষয়ে মিজানুর রহমান আরও বলেন, বিগত সরকারের সময় পুলিশ লীগ নামের একটা শব্দ ছিল, বলা যায় খুলনায় পুলিশ লীগের আহ্বায়ক ছিলেন এই সুকান্ত। সুকান্তের অত্যাচার থেকে বিএনপির কোনো নেতা–কর্মী বাদ যাননি। মহানগর বিএনপির সভাপতির বাড়ি ড্রিল মেশিন দিয়ে ভাঙচুর করেছেন। তাঁর ওপর খুলনার মানুষের একটা ক্ষোভ আছেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র কর ম র র একট

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার মেয়ে নদীতে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না’

‘আমার মেয়ে লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে, না তাকে মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে, না ধর্ষণ করে মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে—আমরা কিছুই জানি না। আমরা জানতে চাই। কারণ, আমার মেয়ে নদীতে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না। আমাদের একটাই দাবি, কীভাবে হলো, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত বিষয়টি জানতে চাই। যদি কোনো অপরাধী বের হয়, তাঁর যেন শাস্তি হয়।’

কথাগুলো বলছিলেন ভোলা পৌর এলাকার এক গৃহবধূ। ২০ জুন লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট নৌ পুলিশ মেঘনা নদীতীর থেকে তাঁর অনার্স পড়া মেয়ের (২৩) লাশ উদ্ধার করে। এর আগে ১৭ জুন ভোলা থেকে ঢাকাগামী একটি লঞ্চ থেকে ওই ছাত্রী পড়ে যান। তিনি নিজে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন নাকি তাঁকে কেউ ফেলে দিয়েছে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমন অবস্থায় তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্‌ঘাটনের দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

ওই ছাত্রী ভোলা সরকারি কলেজের একটি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তিনি কোনো পদে না থাকলেও কলেজ ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। তাঁর মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা রকমের বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে কলেজ শাখা ছাত্রদল। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কলেজের সামনে মানববন্ধন করে সংগঠনের পক্ষ থেকে মৃত্যুর ঘটনার সুষ্টু তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন এবং অপরাধীর শাস্তি দাবি করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ভোলা কলেজ ছাত্রদলের সদস্যসচিব মো. ফজলুল করীম, যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর হোসেন, আরাফাত ইসলাম, ছাত্রদল কর্মী নাইম ইসলাম, জিদান আনবীর, কামরুল ইসলাম প্রমুখ। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার সঞ্চালনায় ছিলেন ছাত্রদলের নির্বাহী সদস্য আব্দুস সামাদ।

বক্তারা বলেন, একটি মহল ওই ছাত্রী ও ছাত্রদলকে জড়িয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজেবাজে পোস্ট দিচ্ছে। ছাত্রদল এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায়। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুরহস্য ও দোষীদের খুঁজে বের করতে হবে। যদি কোনো অপরাধী এর সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাঁকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কেউ কিছু না জেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্টাপাল্টা কিছু লিখলে তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্রদল মামলা করবে বলে বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন।

ওই ছাত্রীর বাড়ি ভোলা পৌরসভার একটি ওয়ার্ডে। আজ দুপুরে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রীর মা কাঁদছেন। তাঁকে পাড়াপ্রতিবেশী সান্ত্বনা দিচ্ছেন।

মেয়ের ছবি হাতে মায়ের কান্না। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা পৌরসভার একটি ওয়ার্ডে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক, ছাড় নয়: রকিবুল ইসলাম বকুল
  • সন্ত্রাসী যে দলেরই হোক, ছাড় নয়: রকিবুল ইসলাম
  • খুলনায় এসআইকে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ 
  • বাগমারায় বাক্‌প্রতিবন্ধী পথশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • এসআইকে মারধর করে পুলিশে হস্তান্তর
  • পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে মানববন্ধনে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের একাত্মতা
  • ‘আমার মেয়ে নদীতে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না’
  • তানোরে ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১
  • গোপালগঞ্জে আলাদা তিন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩