আমিনুল গণিকে সরিয়ে শেখ হাসিনার নতুন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ
Published: 25th, June 2025 GMT
ন্যায় বিচার নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন ওঠায় আদালত অবমাননার মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমিনুল গনি টিটোর নিয়োগ বাতিল করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি রাষ্ট্রনিযুক্ত নতুন আইনজীবী হিসেবে আমির হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার আইনজীবী টিটোর বক্তব্য শুনে বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে এই মামলার অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে আগামী বুধবার লিখিত বক্তব্য জমা দিতে বলেছেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে গত ১৯ জুন আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনা ও গাইবান্ধার সাবেক এক আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী আমিনুল গনি টিটোকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে ২৫ জুন ট্রাইব্যুনালে পলাতক আসামিদের পক্ষে বক্তব্য শোনার জন্য দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা প্রশ্ন উঠে। এতে বলা হয়, আমিনুল গনি টিটো গত বছর ৫ আগস্ট সকালে শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ যথারীতি ট্রাইব্যুনালে আসেন আমিনুল গনি টিটো ও অ্যামিকাস কিউরি এ ওয়াই মশিউজ্জামান। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে এ ওয়াই মশিউজ্জামান বক্তব্য দিতে প্রস্তুতির জন্য ট্রাইব্যুনাল এর কাছে দুই সপ্তাহের সময় চান। এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল এক সপ্তাহের সময় মঞ্জুর করে।
এরপর স্টেট ডিফেন্স হিসেবে আমিনুল গনি টিটোর বক্তব্য শোনেন ট্রাইব্যুনাল। বক্তব্য শুরুতেই আমিনুল গনি টিটো বলেন, ৩৬ বছর আইন পেশার জীবনে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় সম্মানিত বোধ করছেন তিনি। এ মামলায় স্টেট ডিফেন্স হিসেবে আসামির পক্ষে আইনগতভাবে লড়াই করতে তিনি সার্বিকভাবে প্রস্তুত রয়েছেন। এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল তার কাছে জানতে চান, আসামি শেখ হাসিনার ফাঁসি চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ধরনের স্ট্যাটাস দিয়েছেন কি না। জবাবে আইনজীবী টিটো বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে আমি একজন পেশাদার আইনজীবী হিসেবে আসামিদের পক্ষে আইনগতভাবে লড়তে চাই।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট থাকায় এখন আর আপনি এ মামলায় স্টেট ডিফেন্স হিসেবে থাকতে পারেন না। এখানে ন্যায় বিচারের প্রশ্নে নৈতিকতা জড়িত। পরে তার নিয়োগ বাতিল করেন ট্রাইব্যুনাল।
স্টেট ডিফেন্স হিসেবে থাকতে না পারায় অসম্মানিত বোধ
আদেশের পর বেরিয়ে আমিনুল গনি টিটো সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে স্টেট ডিফেন্স থেকে সরিয়ে দেওয়ায় কিছুটা অসম্মানিত বোধ করছি। আমার সঙ্গে কথা বলে নিয়োগ দেওয়া উচিত ছিল বলে দাবি করেন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ষ ট রন য ক ত আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস