জয়পুরহাটের ১৫৪ কৃষকের জমির দলিল, স্বাক্ষর করা ফাঁকা স্ট্যাম্প ও ইন্স্যুরেন্সের নামে নেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছে উইগ্রো টেকনোলজি লিমিটেড। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে তাদের ডেকে এসব ফেরত দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনজুরুল আলম। 

ভুক্তভোগী দিলবর হোসেন বলেন, ‘বাড়ির দলিল, স্বাক্ষর করা ফাঁকা স্ট্যাম্প এবং ইন্স্যুরেন্সের সাড়ে তিন হাজার টাকা ফেরত পেয়ে ভালো লাগছে। আরও সাতশ থেকে আটশজন এখনও তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজগপত্র ফেরত পাননি।’ তাদের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান তিনি।

মুক্তার হোসেন নামে আরেক কৃষক বলেন, ‘আমরা কৃষক। অত প্যাঁচ বুঝি না। এ সুযোগে সংস্থাটির কিছু লোক প্রতারণা করেছে। এটি মেনে নেওয়া যায় না। টাকা ফেরত দিলেই হবে না। জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’ 

উইগ্রোর চিফ অপারেটিং অফিসার ফাইয়াজ সাফির বলেন, ‘সোহেল রানা নামে এক কর্মকর্তার কারণে গ্রাহকদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এ কারণে আমরা দুঃখিত। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ১৫৪ জনের টাকা, দলিলসহ যাবতীয় ডকুমেন্ট ফেরত দিয়েছি। ৩০ জুনের মধ্যে অন্য ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনজুরুল আলম বলেন, প্রতারণার প্রমাণ পাওয়ার পর সোহেল রানাকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সংস্থাটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৫৪ কৃষক দলিল, টাকা পেয়েছেন। অন্যদেরও ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সংস্থার কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সময় প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উইগ্রো নামের সংস্থাটি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি না নিয়ে তিন বছর ধরে জেলা সদরের বারিধারা মহল্লায় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। তারা কৃষিঋণ দেওয়ার কথা বলে কৃষকদের কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর, ব্যাংক চেকের ফাঁকা পাতা, জামানত হিসেবে বাড়ি-জমির দলিল ও ইন্স্যুরেন্সের কথা বলে এক হাজারের বেশি কৃষকের কাছ থেকে সাড়ে তিন হাজার করে টাকা নেয়। পরে তাদের ঋণ দেওয়া হয়নি। আটকে রাখা হয়েছে স্বাক্ষরিত ফাঁকা স্ট্যাম্প, চেকের পাতা ও ইন্স্যুরেন্সের টাকা। আড়াই মাস তাদের পেছনে ঘুরে না পেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। 

বিষয়টি নিয়ে দৈনিক সমকালে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি প্রশাসনের নজরে এলে সংস্থাটির ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার কাগজপত্র যাচাই করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন কর্মকর্তা খলিলুর রহমান। তাঁকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয় অবৈধ কার্যক্রম। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইন স য র ন স র কর মকর ত র দল ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কলকাতায় প্রথমবারের মতো লোকাল এসি ট্রেন চালু

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় প্রথমবারের মতো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে। শিয়ালদহ থেকে নৈহাটি জেলার রানাঘাট পর্যন্ত চলবে ট্রেনটি। সময় লাগবে ১ ঘন্টা ২০ মিনিট। রোববার দুপুরে কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশনে ট্রেনটির উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।

টিকিট কাটা যাবে সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক। ট্রেনটি এই লাইনের সব স্টেশনে থামবে। বিধাননগর (উল্টোডাঙ্গা), দমদম, সোদপুর, খড়দা, বারাকপুর, নৈহাটি, কাচড়াপাড়া, কল্যানী ও রানাঘাটে ওঠানামা করতে পারবেন যাত্রীরা।

চেন্নাই–এর ইন্টগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির তৈরি করা ট্রেনে ১২টি কোচ রয়েছে। প্রতি ট্রিপে ১ হাজার ১২৬ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। ট্রেনে রয়েছে সর্বাধিক আধুনিক ব্যবস্থা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এসি ট্রেন চালুর ফলে এই লাইনের মানুষের দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণ হলো। সোমবার থেকে রানাঘাট স্টেশন থেকে নিয়মিত ট্রেনের পরিষেবা শুরু হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যসহ কলকাতার বিশিস্টজনেরা।

উদ্বোধনের পর সুকান্ত মজুমদার ট্রেনে করে দমদম স্টেশনে নামেন। এ সময় সেখানে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির কিছু সমর্থক বিক্ষোভ করে। তারা ভোটার তালিকা সংশোধনের নিমিত্তে জারি করা এসআইআর বা ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের প্রতিবাদ করে। একই সঙ্গে দেশব্যাপী বাংলা ভাষা ও বাঙালী হেনস্তার প্রতিবাদ করেন।

এ সময় সুকান্ত মজুমদার জানিয়ে দেন, ‘বাংলায় এসআইআর হবেই। দম থাকলে আটকে দেখান।’

জবাবে আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তারা এই রাজ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালী হেনস্তা ও এসআইআরের প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ