খর রোদ্দুরে এক পশলা বৃষ্টির মতোই অভিনয়ের ভুবনে আইশা খানের আবির্ভাব। যদিও অভিনেত্রী হিসেবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে থেকেই আইশা ছিলেন অনেকের পরিচিত মুখ। উপস্থাপনা আর মডেল হিসেবে নজর কেড়েছিলেন। সময়ের পালাবদলে আইশাকে এখন অভিনেত্রী হিসেবে চেনেন দর্শক। কারণ একটাই, স্বল্পসময়ের ব্যবধানে হরেক রকম চরিত্র পর্দায় তুলে ধরার সুযোগ হয়েছে তাঁর। খুব একটা পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না; মাত্র দুই বছরের কাজের তালিকায় চোখ রাখলেই স্পষ্ট হবে অভিনয়ে কতভাবে নিজেকে ভেঙে নতুনরূপে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ‘বুক পকেটের গল্প’, ‘অভিশাপ’, ‘বাকরখানির প্রেমকথা’, ‘তোমাতে হারাই’, ‘সে প্রথম প্রেম আমার’, ‘মায়াফুল’, ‘নেক্সট ডোর নেইবার’, ‘লাভ ইন দি ইয়ার’, ‘স্বপ্নসিঁড়ি’, ‘মায়াডোর’, ‘বাবার ছায়া’, ‘দূরের দেখা’, ‘ভালোবেসে বন্দি’, ‘সাইলেন্ট লাভ’, ‘ফ্রেঞ্জি’, ‘লস্ট ইন লাভ’, ‘নার্ভাস কাপল’, ‘তোমার মায়ায়’, ‘মেঘ রুদ্রর গল্প’, ‘তুই জীবন’, ‘দহন’, ‘নজর’, ‘প্রতিবেশিনী’, ‘নিরুদ্দেশ’সহ আরও বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করে দর্শক মনোযোগ কেড়ে নিয়েছেন তরুণ এই অভিনেত্রী। তার চেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, ছোটপর্দার গণ্ডিতেই নিজেকে বন্দি রাখেননি আইশা। নির্মাতা বিপ্লব হায়দারের ‘ভয়াল’ সিনেমায় অভিনয় করে এই আভাসও দিয়েছেন, অভিনয় জগতে তিনি সুদূরের যাত্রী; যার সুবাদে ‘ভয়াল’-এর কাজ শেষ হতে না হতেই নির্মাতা সোহেল আরমানের ‘সংবাদ’ এবং প্রসূন রহমানের ‘শেকড়’সহ আরও দুটি সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ হয়েছে। যদিও ‘সংবাদ’ সিনেমার কাজ মাঝে স্থগিত হয়ে গেলেও ‘শেকড়’-এর শুটিং শেষ হয়েছে অনেক আগেই। ‘শেকড়’ সিনেমায় আইশা অভিনয় করেছেন ফাল্গুনী নামে এক তরুণীর চরিত্রে। ফাল্গুনী সেই তরুণীদের যার সখ্য গড়ে উঠেছে সংগীতের সঙ্গে। সে উচ্চাঙ্গসংগীত খুব পছন্দ করে, পাশাপাশি রবীন্দ্রসংগীতের তালিমও নেয়। খুব সাধারণ মেয়ে, অল্পতেই খুশি হয় আবার কষ্টও পায়। এই চরিত্রটি নিয়ে আইশা বলেছিলেন, ‘মুখে শুনে হয়তো ফাল্গুনী চরিত্রটি খুব সাদামাটা মনে হবে, তবে পর্দায় অসাধারণ লাগবে। কারণ, গল্পের ঘটনাবহুল অধ্যায়গুলো তাঁকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা সহজেই দর্শকমনে ছাপ ফেলবে।’ ‘শেকড়’ সিনেমায় অভিনয় নিয়ে এও বলেছিলেন, বেশ কয়েকটি কারণে এই সিনেমার অভিনয় করা; যার অন্যতম কারণ ছিল সিনেমার গল্প ও চরিত্র। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে নির্মাতা প্রসূন রহমান নান্দনিক নির্মাণের বিষয়টি তুলে এনেছিলেন। বলেছিলেন, পর্দায় প্রসূন রহমান তাঁর উপস্থাপনের ভঙ্গি অনেকের চেয়ে আলাদা। এ নির্মাতার ‘সুতপার ঠিকানা’ সিনেমাটি দারুণভাবে মনে আঁচড় কেটেছিল। তাই এমন একজন নির্মাতার কাছে ভিন্ন ধাঁচের একটি গল্পে কাজ করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া সহজ ছিল না। তাঁর এই কথা থেকে স্পষ্ট যে, অভিনয়জীবনে সেই কাজটি করতে চান, যা তাঁর কাছে ব্যতিক্রম এবং দর্শকমনে ছাপ ফেলার মতো মনে হয়। এর প্রমাণও মেলে সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর অভিনীত নাটক ও সিরিজে চোখ রাখলে।
আবার অবাক হতে হয় এটা দেখে যে, তাঁর অনেক কাজ দর্শক প্রশংসা পেলেও এখনও তিনি প্রচারবিমুখ। অন্তর্মুখী স্বভাবটা এখনও ধরে রেখেছেন। কোনো কাজের সমাপ্তি না টানা পর্যন্ত তা নিয়ে মুখ খুলতে চান না। তারকাখ্যাতির মোহে যখন অনেকে দিনরাত ছুটে বেড়াচ্ছেন, তখনও সময়ের আলোচিত তারকা হয়েও খানিকটা চুপচাপ আইশা। কারণ একটাই, নীরবে, নিভৃতে ভালো কিছু কাজ করে যাওয়াই তাঁর লক্ষ্য।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক
৭ বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন নেতৃত্ব।
তবে পূজার ছুটি শেষ না হওয়ায় এখনও হয়নি অভিষেক ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ফলে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না নবনির্বাচিতরা।
আরো পড়ুন:
গকসুর জিএস, এজিএসের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি, পুনর্নির্বাচন দাবি
চাকসু নির্বাচন: দুই নারী প্রার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজার পর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অভিষেক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এতে নির্বাচনের পর যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা এখন রূপ নিয়েছে অপেক্ষার আবহে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৭ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেন। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের প্রচারণা আর ভোটের দিন ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে।
ভোট শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হওয়ায় এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি তারা।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার বলেন, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। এই বিলম্বের সুযোগে কিছু মহল নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে সফল করতে এবং অপপ্রচার রোধে নির্বাচিত সদস্যদের দ্রুত শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারেন।”
সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “নির্বাচনের পরের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল এবং দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন পূজার ছুটির পর যতদ্রুত সম্ভব অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ছুটি শেষে শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।”
২০১৩ সালে প্রথমবার গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন প্রার্থী। ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৭৬১ জন।
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী