দুই সীমান্তে বিএসএফের ঠেলে পাঠানো ২৭ বাংলাদেশি পুলিশ হেফাজতে
Published: 26th, June 2025 GMT
ভারতের মুম্বাইসহ বিভিন্ন শহরে কাজ করা ২৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও আটজনকে মেহেরপুরের গাংনী সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা পুলিশের হেফাজতে আছেন। যাচাই–বাছাই শেষে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের জাম্বুরাছড়া সীমান্ত দিয়ে ১৯ বাংলাদেশি প্রবেশ করেন। তাঁরা একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল পেয়ে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছেন যে তাঁরা ভারতের মুম্বাইসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতেন। তাঁদের নাম–ঠিকানা যাচাই করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, এই ১৯ জনের মধ্যে ৬ পুরুষ, ৯ নারী ও ৪ শিশু রয়েছে। তাঁদের বাড়ি শরীয়তপুর, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলায়।
একই দিনে ভোরে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের খাশমহল সীমান্ত দিয়ে আরও আট বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। তাঁদের মধ্যে নারী ও শিশু আছে।
খাশমহল ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার আবুল বাসার বলেন, এই আটজন নিজেদের বাংলাদেশি দাবি করলেও কারও কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তাই যাচাই–বাছাই শেষে তাঁদের গাংনী থানায় সোপর্দ করা হবে।
ফেরত আসা কয়েকজন বলেন, তাঁরা দালালের মাধ্যমে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। ভারতীয় পুলিশ তাঁদের ধরে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ তাঁদের সীমান্তে এনে কাঁটাতারের গেট খুলে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।
আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ভারতে নির্মাণশ্রমিকদের ভালো বেতন মেলে, এমন কথা শুনে দালালের মাধ্যমে নদীয়ার বহরমপুর এলাকায় যাই। প্রায় তিন বছর কাজ করার পর হঠাৎ পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এরপর জেলে ছিলাম। গতকাল বুধবার রাতে বিএসএফ আমাদের একটি বড় ট্রাকে সীমান্তে এনে নামিয়ে দেয়।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ৩০০ জন
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ভারতীয় সীমান্তে জড়ো হচ্ছে শত শত মানুষ। পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানা এলাকার হাকিমপুর সীমান্তে এমন ঘটনা দেখা গেছে। বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র এই সীমান্তেই জড়ো হয়েছেন নারী শিশু সহ অন্তত ৩০০ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
আরো পড়ুন:
সৌদিতে বাস-ট্যাংকার সংঘর্ষ, ৪২ ভারতীয় হজযাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা
দিল্লির আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর সহযোগী গ্রেপ্তার
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে, শহর থেকে বিভিন্ন সময়ে ভারতে অনুপ্রবেশকারী এই বাংলাদেশিরা ফের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য হাকিমপুর সীমান্তে এসে পৌঁছেছেন। কেউ দালালের মাধ্যমে কেউ আবার নিজেরাই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এসেছেন সীমান্তে। কিন্তু বিএসএফের বাধায় সীমান্তেই আটকে পড়েছেন এই বাংলাদেশিরা।
আটকে পড়া ব্যক্তিরা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে ভারতে অনুপ্রবেশের পর তারা কলকাতা, দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু থেকে মুম্বাইয়ের মতো শহরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারত জুড়ে শুরু হওয়া এসআইআরের কারণে জেল ও জরিমানা এড়াতে দেশে তারা ফিরতে চাইছেন।
অফিসিয়াল বিবৃতি জারি না করলেও বিএসএফ সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে এমন ছবি শুধুমাত্র হাকিমপুর সীমান্তের নয়। এই সীমান্তে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের সংখ্যাটা অনেক বেশি। বিএসএফ জানিয়েছে, আটকে পড়া এই বাংলাদেশিদের মানবিক বিবেচনায় গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্বের দাবির স্বপক্ষে নিথিপত্র বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ব্যাটালিয়ন খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে আগামী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ