মাদারীপুরে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহকে (২৩) কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাঁরা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মী। এ ছাড়া মামলায় ১০ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে মাসুম বিল্লাহর সহকর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আকাশ মাতুব্বর সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন। পুলিশ জানিয়েছে, আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

মামলায় এনসিপির জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী মো.

হাসিবুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন এনসিপির জেলা কমিটির সদস্য মো. আবদুল রহিম, আবদুল্লাহ আদিল (টুটুল), রাতুল হাওলাদার ও মুজিবুল্লাহ সরদার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রোমান শেখ, ইসমাইল, আরাফাত হোসেন ও মেহেদী হাসান।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শহরের ভূঁইয়া কমিউনিটি সেন্টারে এনসিপির সদর উপজেলা কমিটির আয়োজনে কর্মিসভা চলছিল। সেখানে কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জেরে মাসুম বিল্লাহর ওপর হামলা চালানো হয়। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে গুরুতর আহত করা হয়। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মামলার আসামিদের অভিযোগ, জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকার কারণে এনসিপির সদ্য ঘোষিত কমিটিতে তাঁদের রাখা হয়নি। কর্মিসভার দিন পদবঞ্চিত কয়েকজনের সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীদের কথা-কাটাকাটি হলে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। তাঁদের দাবি, মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সাতজন ওই কর্মিসভায় উপস্থিতই ছিলেন না।

প্রধান আসামি হাসিবুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সভায় ছিলাম না, তবু আমাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন—এমন তিনজনকেও আসামি করা হয়েছে। এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’

অন্যদিকে মামলার বাদী আকাশ মাতুব্বর বলেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এনসিপিতে ঢুকে পড়েছে। মাসুমের ওপর হামলা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। আমরা এর বিচার চাই।’

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বিরোধ থেকেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম হীরা তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা

গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে হীরা তৈরি করেছেন চীনের সেন্টার ফর হাই-প্রেশার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অ্যাডভান্সড রিসার্চের বিজ্ঞানীরা। উল্কাপিণ্ডে থাকা বিভিন্ন উপাদান সফলভাবে কাজে লাগিয়ে ষড়্‌ভুজাকার হীরা তৈরি করেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, কৃত্রিমভাবে তৈরি হীরাটি প্রকৃতিতে পাওয়া যেকোনো বস্তুর চেয়ে শক্ত। বৈজ্ঞানিক সাময়িকী নেচারে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

গবেষণার তথ্যমতে, বিজ্ঞানীরা উচ্চ তাপমাত্রা, উচ্চ চাপ ও আধা হাইড্রোস্ট্যাটিক পরিস্থিতিতে উল্কাপিণ্ডে থাকা গ্রাফাইটকে ষড়্‌ভুজাকার হীরাতে রূপান্তর করেছেন। এই স্ফটিক কাঠামো প্রচলিত প্রাকৃতিক হীরার চেয়ে শক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক হীরা শক্ত হলেও কিছুটা দুর্বলতা থাকে। তবে ষড়্‌ভুজাকার হীরা বা লন্সডেলাইট আরও শক্তিশালী পারমাণবিক বিন্যাস নিয়ে গঠিত।

বিজ্ঞানী ইয়াং লিউশিয়াং বলেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে হীরা তৈরিতে দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জের সমাধান করা হয়েছে। ভবিষ্যতের উপাদান উদ্ভাবনের জন্য একটি পদ্ধতিগত ভিত্তি স্থাপন করেছি আমরা। অপর বিজ্ঞানী হো-কোয়াং মাও এই অর্জনকে পরবর্তী প্রজন্মের অতি কঠিন উপকরণ ও উন্নত ইলেকট্রনিক যন্ত্র বিকাশের জন্য একটি নতুন পথ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, কাঁচামাল হিসেবে অতি বিশুদ্ধ, অপরিষ্কার–মুক্ত প্রাকৃতিক গ্রাফাইট ষড়্‌ভুজাকার হীরার নমুনা তৈরিতে সহায়তা করেছে। পুরো প্রক্রিয়া সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

১০০ মাইক্রন স্কেলে পরীক্ষাগারে ষড়্‌ভুজাকার হীরা তৈরি করা হয়েছে। উল্কাপিণ্ডে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া এই বিরল হীরা তৈরির মাধ্যমে অতি কঠিন পদার্থের সন্ধানে এগিয়ে গেলেন চীনের বিজ্ঞানীরা। নতুন এই প্রক্রিয়া ভবিষ্যতে পরীক্ষাগারে নতুন পদার্থ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ