দ্বিতীয় দিনই কলম্বো টেস্ট শ্রীলঙ্কার মুঠোয়
Published: 26th, June 2025 GMT
কলম্বো টেস্টের প্রথম দিন বল হাতে কর্তৃত্ব করেছে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশকে শাসন করেছে ব্যাট হাতে। পাথুম নিশাঙ্কা দুর্দান্ত এক অপরাজিত সেঞ্চুরি করেছেন। দিনেশ চান্ডিমাল সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও দিন শেষে স্বাগতিকরা ৭৮ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান তুলেছে। ৪৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় দিনই টেস্ট হাতের মুঠোয় নিয়েছে।
নিশাঙ্কা-চান্ডিমালের দাপট: দ্বিতীয় দিন সকালেই হাতে থাকা দুই উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ইনিংস শুরু করে ৮৮ রানের ওপেনিং জুটি পায় লঙ্কানরা। লাহিরু উদারা ৪০ রান করে ফেরেন। এরপর পাথুম নিশাঙ্কা ও দিনেশ চান্ডিমাল ১৯২ রানের জুটি গড়ে ম্যাচই একপ্রকার বাংলাদেশের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। নিশাঙ্কা ২৩৮ বলে ১৪৬ রান করেছেন। ১৮টি চার মেরেছেন তিনি। চান্ডিমাল ৯৩ রান করে আউট হন। ১০টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কা তোলেন তিনি। উইকেট দুটি নেন তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।
আড়াইশ’ ছোঁয়া পুঁজি: কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালেই সাজঘরে ফেরেন এবাদত হোসেন। উপায় নেই দেখে ব্যাট চালিয়ে খেলেছেন তাইজুল ইসলাম। ২২০ রানে প্রথম দিন শেষ হওয়া ইনিংস ২৪৭ রানে নিয়েছেন তিনি। তাইজুল খেলেছেন ৩৩ রানের ইনিংস। সকালে বাংলাদেশের ইনিংসে ৭.
মুশফিক-লিটনের আত্মহনন: কলম্বোয় ৭৬ রানে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারানোর পর মিডল অর্ডারের দুই ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস দলকে সেরা ভরসাটা দিচ্ছিলেন। ততক্ষণে বল পুরনো হয়েছে, উইকেট সহজ হয়েছে। নির্ভার ব্যাটিংও করছিলেন তারা। কিন্তু ৬৭ রানের জুটি দিয়ে আত্মঘাতী শট খেলে আউট হন লিটন। পরেই সুইপ খেলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক তারা। তারা যথাক্রমে ৩৪ ও ৩৫ রান করেন।
লাঞ্চ করে সাদমান-শান্তর ভাত ঘুম: শুরুতে এনামুল বিজয় ও মুমিনুল হক ফিরলেও ওপেনার সাদমান ইসলাম ভালো ব্যাটিং করছিলেন। গল টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি পাওয়া নাজমুল শান্ত ক্রিজে এসে তাকে নিয়ে লাঞ্চে যান। দল তখন দুই উইকেট হারিয়েছে। কিন্তু লাঞ্চের পরই তিন রান করে যোগ করে সাদমান ও শান্ত আউট হন। সাদমান ৪৬ রান করেন। শান্ত করেন ৮।
অভিষিক্ত সোনালের বাজিমাত: শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম ইনিংসে আসিথা ফার্নান্দো ৩ উইকেট নিয়েছেন। দলে ফেরা বাঁ হাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দো নিয়েছেন ২ উইকেট। তবে অভিষিক্ত সোনাল দিনুশা বাজিমাত করেছেন। তিনি ৩ উইকেট নেন যার প্রথম দুটি ছিল লিটন ও মুশফিকের। শেষ ব্যাটার তাইজুলকেও ফিরিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ দিনের সেরা তিন উইকেটই গেছে তার দখলে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উইক ট হ র স দম ন ত ইজ ল র ন কর কলম ব প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
এক বছরে এসএমই ঋণ বিতরণ ২ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা
২০২৪ সালের কিছু সময়জুড়ে অস্থিরতা ছিল। আবার ব্যাংক খাতে তারল্য প্রবাহও কম ছিল। এসবের প্রভাব পড়েছে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্প (সিএমএসইএমই) খাতের ঋণ বিতরণে। করোনার পর গত বছর বিতরণ কমেছে। ২০২৪ সালে সিএমএসএমইতে বিতরণ হয়েছে মোট ২ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। আগের বছরের তুলনায় যা ১৪ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা বা সাড়ে ৬ শতাংশ কম।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কম খরচে বেশি কর্মসংস্থান হয় ছোট ও মাঝারিশিল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে। যে কারণে উন্নয়নশীল দেশে সব সময়ই এসব খাতে বিতরণে জোর দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বেশ আগ থেকে এ খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়ে আসছে। চলতি বছরের এক নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যাংক খাতের মোট ঋণের অন্তত ২৭ শতাংশ সিএমএসএমইতে বিতরণের নির্দেশ দেওয়া। বিনা জামানতে নারীদের জন্য ২৫ লাখ টাকা এবং অন্য ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে বলা হয়েছে। করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নেই এ ধরনের ব্যবসায়ীর অন্য ব্যবসাসংক্রান্ত সনদ দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যাংকার মোহাম্মদ নূরুল আমিন সমকালকে বলেন, ২০২৪ সালের বড় একটি সময়জুড়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা ছিল। গত বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন এবং পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়। যে কারণে হয়তো ঋণ বিতরণ কমে গেছে। কেননা, যে কোনো অনিশ্চয়তার মধ্যে বিনিয়োগ হয় খুব কম। বেসরকারি খাতের সার্বিক ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ঘরে নেমেছে। আরও কিছুদিন হয়তো এরকম থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণভাবে সব সময়ই সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ বেড়ে থাকে। তবে গত বছর কমেছে। এর আগে করোনার মধ্যে লকডাউনের কারণে অধিকাংশ কাজে স্থবিরতা ছিল। ফলে ২০২০ সালে ঋণ বিতরণ কমে যায়। ওই বছর বিতরণ নেমে ছিল এক লাখ ৫৩ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকায়। আগের বছর ২০১৯ সালে যেখানে বিতরণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। এর মানে এক বছরে বিতরণ কমে ১৪ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৬২ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে সিএমএসএমই খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১৩ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএমএসএমইতে মোট ২ লাখ ২৯ হাজার ৩১৩ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে। ২০২২ সালে বিতরণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ২০ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ঋণ বিতরণ বেড়েছিল ৮ হাজার ৮২৩ টাকা; যা ৪ শতাংশ। এর আগে ২০২২ সালে এ খাতে ঋণ বেড়েছিল ৩৫ হাজার ৬১ কোটি টাকা বা প্রায় ১৯ শতাংশ। ২০২১ সালে সিএমএসএমইতে মোট বিতরণ হয়েছিল এক লাখ ৮৫ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। আগের বছরের তুলনায় যা বেশি ছিল ৩২ হাজার ৩২ কোটি টাকা বা প্রায় ২১ শতাংশ।
বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, ২০২৪ সালে বিভিন্ন ধরনে অস্থিরতা ছিল। যে কারণে ঋণ চাহিদা ছিল কম। আবার দু’একটি ব্যাংক ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে এসএমই ঋণে খেলাপি বেশি। এসব কারণে হয়তো কমেছে। এসএমই ঋণ বিতরণ কমার ক্ষেত্রে তারল্য সংকট কোনো কারণ ছিল না বলে তিনি মনে করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ বাড়াতে অনেক আগ থেকে নানা নির্দেশনা দিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ খাতের জন্য কম সুদের বেশ কয়েকটি প্রণোদনা ও পুনঃঅর্থায়ন তহবিল রয়েছে।