এনআরবি ইসলামিক লাইফের চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে এফআইডির চিঠি
Published: 26th, June 2025 GMT
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান জিএম কিবরিয়া, চেয়ারম্যানের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জামাল হাওলাদারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়ে অবহিত করতে বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি)। গত ২৩ জুন এ চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি নিজেকে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির একজন বীমা গ্রাহক পরিচয় দিয়ে এফআইডি সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন- বীমা কোম্পানিটির চেয়ারম্যান, এমডি এবং চেয়ারম্যানের স্ত্রীর অর্থ আত্মসাত করেছেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদও ওই আবেদনের সাথে সংযুক্ত করেছেন। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে এফআইডি আইডিআরএকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
বীমা গ্রাহক মজিবুর রহমান আবেদনে অভিযোগ করেন, এনআরবি ইসলামিক লাইফ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় সরকারের পাশাপাশি শেয়ারহোল্ডার ও পলিসি হোল্ডারদের স্বার্থও এতে জড়িত। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ও সাবেক ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ ব্যক্তিরা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে দাবি করা হয়। এ অভিযোগ ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে আলোচিত হয়েছে।
চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম কিবরিয়া, তার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম এবং কোম্পানির সিইও শাহ জামাল হাওলাদার মিলে প্রিমিয়ামের টাকা আত্মসাৎ করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিদেশে পাচার করছেন।
মজিবুর রহমান চিঠিতে উল্লেখ করেন, আইডিআরএ পূর্বেই এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সে বিভিন্ন অনিয়ম, অনুমোদনবিহীন বীমা পরিকল্প বিক্রি, অতিরিক্ত ব্যয়, পলিসি তামাদি, এবং একক প্রিমিয়ামকে মেয়াদি বীমা হিসেবে দেখানোর মতো গুরুতর দুর্নীতির তথ্য তাদের তদন্তে উদঘাটন করে।
ফলে আইডিআরএ কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালের ১০ জুন এক চিঠির মাধ্যমে শাহ জামাল হাওলাদারের পুনঃনিয়োগের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। চিঠিতে সিইও’র কর্মকাণ্ডকে গ্রাহক স্বার্থবিরোধী ও কোম্পানির জন্য ‘চরম ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে অভিহিত করা হয়।
জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের পতনের পরও কীভাবে এই কোম্পানিতে পুরনো প্রভাবশালী নেতারা বহাল থাকেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এই বীমা গ্রাহক। ২০২৪ সালের তিনি এনআরবি ইসলামিক লাইফের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। একইসঙ্গে তিনি আত্মসাৎকৃত অর্থ দেশে ফেরতের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার কোম্পানির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস থ সরক র র গ র হক
এছাড়াও পড়ুন:
এনআরবি ইসলামিক লাইফের চেয়ারম্যান-সিইওর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করতে চায় মন্ত্রণালয়
এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহ জামাল হাওলাদারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চায় সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত সোমবার বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এম আসলাম আলমের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ তদন্ত করার কথা বলেছে। তদন্ত শেষে তা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানানোর কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকের কাছে ১৯ জুন এনআরবি ইসলামিক লাইফের একজন পলিসি হোল্ডার এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইওর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ করেন। সে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইডিআরএ চেয়ারমানকে তদন্ত করার চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম আসলাম আলমের সঙ্গে আজ বুধবার যোগাযোগ করলে তিনি সংস্থাটির মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
আইডিআরএর মুখপাত্র সাইফুন্নাহার সুমি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি মাত্র এসেছে। শিগগির এ ব্যাপারে কাজ শুরু হবে।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা বেগম সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের নারীবিষয়ক সম্পাদক। তাঁদের প্রধান সহযোগী সিইও শাহ জামাল হাওলাদার।
আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থায়নকারী হওয়ায় উপঢৌকন হিসেবে ২০২১ সালে বিমা কোম্পানিটির লাইসেন্স দেওয়া হয়। শুরুর দিকে ভালো চললেও আওয়ামী লীগের তহবিলে চাঁদা দেওয়াসহ অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার করতে থাকায় কোম্পানিটির অবস্থা খারাপ হতে থাকে।
চেয়ারম্যান ও সিইওর যোগসাজশে অনুমোদনহীন বিমা পরিকল্প বিক্রি, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা খরচ, উচ্চ হারে পলিসি তামাদি হওয়া, কোম্পানির বিপুল অঙ্কের নগদ টাকা হাতে রাখা, একক প্রিমিয়ামকে মেয়াদি দেখিয়ে তহবিল লোপাট ইত্যাদি হয়েছে বলে আইডিআরএর আগের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল। অভিযোগে এ কথাও তুলে ধরা হয়। আত্মসাৎ ও পাচার অর্থ ফেরত আনতে অভিযোগপত্রে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
কোম্পানির চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, তিনি দেশের বাইরে থাকতে পারেন, ভেতরেও থাকতে পারেন। সিইও শাহ জামাল হাওলাদারের সঙ্গে খুদে বার্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন জানিয়েছেন।