এইচএসসি পরীক্ষার সময় বাংলা বিষয়ে এ প্লাস পেতে হলে বাংলা প্রথম পত্রের পাশাপাশি বাংলা দ্বিতীয় পত্রেও ভালো নম্বর পেতে হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে কিন্তু বহুনির্বাচনি প্রশ্ন নেই। সব কটিই রচনামূলক প্রশ্ন। ব্যাকরণ ও নির্মিতি অংশ মিলিয়ে মোট ১২টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। সময় তিন ঘণ্টা বা ১৮০ মিনিট। বাংলায় এ প্লাস পাওয়ার এই কঠিন কাজটি সহজ করে দিতে পারে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পাওয়া। আর বেশি নম্বর পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো বাংলা দ্বিতীয় পত্রে ১২টি প্রশ্নের উত্তর যথাযথ পরীক্ষার খাতায় লেখা। আর তা করতে প্রয়োজন এই পরীক্ষায় সঠিক ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’ বা ‘সময় পরিকল্পনা’ করা।

বাংলা দ্বিতীয় পত্রে দুটি অংশ আছে—১.

ব্যাকরণ অংশ ২. নির্মিতি অংশ। ব্যাকরণ অংশের নম্বর ৩০, উত্তর করতে হবে ছয়টি প্রশ্নের। প্রতিটি প্রশ্নের একটি করে ‘বিকল্প প্রশ্ন’ থাকবে। প্রতিটি প্রশ্নের নম্বর পাঁচ। তাই প্রশ্ন নির্বাচন করার সুযোগ আছে। আর নির্মিতি অংশে নম্বর থাকবে ৭০, উত্তর করতে হবে ছয়টি প্রশ্নের। প্রতি প্রশ্নের বিকল্প প্রশ্ন থাকবে। এখানেও প্রশ্ন বাছাই করার সুযোগ আছে। প্রতিটি প্রশ্নের নম্বর থাকবে ১০ করে, শুধু ‘প্রবন্ধ লিখন’ প্রশ্নে নম্বর থাকবে ২০।

প্রশ্নপত্র পড়ে প্রশ্ন নির্বাচন

বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্রটি হাতে পেয়েই প্রশ্নটি খুব ভালো করে পড়তে হবে। তারপর ‘সঠিক প্রশ্নটি’ নির্বাচন করতে হবে। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে মোট ২৩টি প্রশ্ন পড়তে হবে। প্রতি প্রশ্নের বিকল্প প্রশ্ন থাকবে, তাই যে প্রশ্নের উত্তর ভালো জানা সেগুলোর উত্তর লিখতে হবে। যে প্রশ্নের উত্তর করতে চাও, সে প্রশ্নগুলো আগে দাগ দিয়ে রাখতে পারো। এতে নির্বাচিত প্রশ্নগুলো সহজেই চোখে পড়বে। আর প্রশ্নপত্র পড়ে ‘প্রশ্ন নির্বাচন’ করতে সময় থাকতে মাত্র ৫ মিনিট।

ব্যাকরণ অংশের প্রশ্ন লেখার সময় পরিকল্পনা

১. প্রথম প্রশ্নটি বাংলা উচ্চারণের নিয়ম আর বিকল্প প্রশ্নটি থাকবে শব্দের শুদ্ধ উচ্চারণ নিয়ে। নম্বর থাকবে ৫। যে প্রশ্নটি ভালো পারবে তা লিখবে। প্রশ্ন এক বা দুই পৃষ্ঠার মধ্যে লিখবে। সময় নেবে ১০ মিনিট।

২. দ্বিতীয় প্রশ্নটি থাকবে বাংলা বানানের নিয়ম আর বিকল্প প্রশ্নটি থাকবে শব্দের ভুল বানান শুদ্ধ করে লেখো। নম্বর থাকবে ৫। ভালো নম্বর পেতে ‘ভুল শব্দের শুদ্ধ বানান’ প্রশ্নটির উত্তর করবে। সময় নেবে ১০ মিনিট।

৩. তৃতীয় প্রশ্নটি থাকবে ব্যাকরণিক শব্দ শ্রেণি আর বিকল্প প্রশ্ন থাকবে অনুচ্ছেদ থেকে শব্দ নির্দেশকরণ। নম্বর থাকবে ৫। তুমি অনুচ্ছেদ থেকে শব্দ শ্রেণি নির্দেশকরণ লিখলে বেশি নম্বর পাবে। সময় নেবে ৬ মিনিট।

৪. ৪ নম্বর প্রশ্নটি থাকবে বাংলা শব্দ গঠন আর বিকল্প প্রশ্ন থাকবে ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয়। নম্বর থাকবে ৫। ব্যাসবাক্যসহ সমাস নির্ণয় প্রশ্নের উত্তর লিখলে বেশি নম্বর পাবে। সময় নেবে ৭ মিনিট।

৫. পঞ্চম প্রশ্নটি হবে বাক্যতত্ত্ব আর বিকল্প প্রশ্নটি থাকবে বাক্য রূপান্তর নিয়ে। নম্বর থাকবে ৫। তুমি সময় বাঁচানোর জন্য বাক্য রূপান্তর প্রশ্নটি লিখবে। সময় পাবে ১০ মিনিট।

৬. ষষ্ঠ প্রশ্নটি থাকবে বাংলা ভাষার অপপ্রয়োগ নিয়ে আর বিকল্প প্রশ্ন থাকবে অশুদ্ধ বাক্যকে শুদ্ধ করে লেখো। নম্বর থাকবে ৫। অশুদ্ধ বাক্যকে শুদ্ধ করে লিখলেই পূর্ণ নম্বর পাবে। প্রশ্নের উত্তর খাতার পূর্ণ এক পৃষ্ঠায় লিখবে। সময় নেবে ৭ মিনিট।

নির্মিত অংশের প্রশ্ন লেখার সময় পরিকল্পনা

৭. নির্মিতি অংশের সাত নম্বর প্রশ্নটি থাকবে একটি ইংরেজি অনুচ্ছেদের বাংলা অনুবাদ করা আর বিকল্প প্রশ্ন থাকবে পারিভাষিক শব্দ। নম্বর থাকবে ১০। তুমি পূর্ণ নম্বর পেতে পারিভাষিক শব্দের উত্তর দেবে, লিখবে এক পৃষ্ঠায়। সময় নেবে ১০ মিনিট।

৮. আট নম্বর প্রশ্ন থাকবে একটি দিনলিপি লেখা আর বিকল্প প্রশ্ন থাকবে প্রতিবেদন লিখন। এতে নম্বর ১০। তুমি অবশ্যই প্রতিবেদনটি লিখবে। খাতায় দুই থেকে তিন পৃষ্ঠায় সুন্দর করে লিখবে। সময় নেবে ২০ মিনিট।

৯. ৯ নম্বর প্রশ্নটি হবে বৈদ্যুতিন চিঠির ওপর আর বিকল্প প্রশ্ন থাকবে আবেদনপত্র লেখার ওপর। নম্বর থাকবে ১০। এটি কিন্তু ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের ই-মেইল লেখার মতো। ই-মেইল বিষয়ে তোমার প্রস্তুতি অনেক ভালো। তাই তুমি বৈদ্যুতিন চিঠির উত্তর করবে। এটি দুই পৃষ্ঠায় লিখবে। সময় পাবে ১৫ মিনিট।

১০. দশম প্রশ্নটি থাকবে সারাংশ বা সারমর্ম লেখা আর বিকল্প প্রশ্ন থাকবে ভাবসম্প্রসারণ লেখো। নম্বর থাকবে ১০। সারমর্ম লিখলে এক পৃষ্ঠায় আর ভাবসম্প্রসারণ লিখলে তিন পৃষ্ঠায় লিখবে। এখানে তুমি ভালো পারো বা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করো সেই প্রশ্নটি লিখবে। আর ভাবসম্প্রসারণ লিখলে সময় নেবে ১৫ মিনিট।

১১. একাদশ প্রশ্নটি হবে সংলাপ লেখা আর বিকল্প প্রশ্নটি হবে খুদে গল্প লেখার ওপর। নম্বর থাকবে ১০। তুমি সংলাপ লেখা প্রশ্নটি উত্তর করবে। এটি লেখা সহজ কিন্তু নম্বর বেশি। তুমি দুই থেকে তিন পৃষ্ঠার মধ্যে সংলাপ লেখা শেষ করবে। সময় নেবে  ১৫ মিনিট।

১৩. শেষ প্রশ্নটি হবে প্রবন্ধ লেখার ওপর। নম্বর থাকবে ২০। পাঁচটি প্রবন্ধ থেকে একটি প্রবন্ধ লিখতে হবে। তুমি যে বিষয়ে সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্য পাও, তাই নিয়ে প্রবন্ধ লিখবে। কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় পৃষ্ঠা প্রবন্ধ লিখতে হবে। সময় পাবে ৪৫ মিনিট।

লেখা শেষে রিভিশন

পরীক্ষা শেষ। খাতায় শেষ প্রশ্ন লেখা শেষ করে শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুসারে অবশ্যই ‘END’ বা সমাপ্ত লিখবে। তোমার খাতাটি অবশ্যই রিভিশন দেবে। রিভিশন দিলে খাতায় ছোট-বড় কোনো ভুল করলে তা বুঝতে পারবে, তা শুধরে নিতে পারবে। তাই খাতা রিভিশন দেওয়ার জন্য সময় রাখবে মাত্র ৫ মিনিট।

একনজরে ১৮০ মিনিট সময় পরিকল্পনা দেখে নাও—

প্রশ্নপত্র পড়া ও নির্বাচনে সময় রাখবে ৫ মিনিট

লেখা শেষে খাতা রিভিশন দিতে সময় রাখবে ৫ মিনিট

ব্যাকরণ অংশ—

১. প্রথম প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ১০ মিনিট

২. দ্বিতীয় প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ১০ মিনিট

৩. তৃতীয় প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ৬ মিনিট

৪. চতুর্থ প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ৭ মিনিট

৫. পঞ্চম প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ১০ মিনিট

৬. ষষ্ঠ প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ৭ মিনিট

নির্মিতি অংশ—

৭. সপ্তম প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ১০ মিনিট

৮. অষ্টম প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ২০ মিনিট

৯. নবম প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ১৫ মিনিট

১০. দশম প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ১৫ মিনিট

১১. একাদশ প্রশ্ন লিখতে সময় নেবে ১৫ মিনিট

১২. শেষ প্রশ্ন প্রবন্ধ লিখতে সময় নেবে ৪৫ মিনিট।

লেখক: মোস্তাফিজুর রহমান, প্রভাষক, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা

আরও পড়ুনএইচএসসির প্রবেশপত্রে থাকা ১৮ নিয়ম জানতে হবে২৪ জুন ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব য করণ অ শ প রবন ধ ল খ ১৫ ম ন ট ১০ ম ন ট সময় ন ব পর ক ষ সময় প র সময় র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণ, ঢাকা বোর্ডের নতুন জিপিএ–৫ পেলেন ২০১ পরীক্ষার্থী

২০২৬ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২০১ জন পরীক্ষার্থী। আর ফেল থেকে পাস করেছেন ৩০৮ জন পরীক্ষার্থী।

আজ রোববার সকালে পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশিত হয়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, এবার ৭৯ হাজার ৬৭১ জন শিক্ষার্থী ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৩৩১ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে।

আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, আবেদনের সময় বৃদ্ধি১৩ নভেম্বর ২০২৫

শিক্ষা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে গত বৃহস্পতিবার বলা হয়েোছিল, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও এসএমএসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবেন। আবেদনকারীর দেওয়া মোবাইল ফোন নাম্বারে এসএমএস পাঠানো হবে। ফলাফল http://www.educationboardresults.gov.bd/  ওয়েবসাইট থেকেও জানা যাবে।

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণ বা খাতা চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়া গত ২৩ অক্টোবর শেষ হয়। পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুধু অনলাইনে করা হয়েছে। অন্যবার এসএমএসের মাধ্যমেও এ সুযোগ ছিল।

এ বছর ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা ফল গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শতভাগ পাসের ধারাবাহিকতা ধরে রাখল গিয়াসউদ্দিন ইসলামিক মডেল কলেজ
  • যশোর শিক্ষাবোর্ডে নতুন করে জিপিএ-৫ পেলেন ৭২ শিক্ষার্থী
  • এইচএসসিতে পুনর্নিরীক্ষণে জিপিএ-৫ পেলেন আরও ৩২ জন
  • রাজশাহী বোর্ডে এইচএসসিতে ফেল থেকে পাস করলেন ৫৩ শিক্ষার্থী
  • কুমিল্লা বোর্ডে এইচএসসিতে খাতা চ্যালেঞ্জে জিপিএ-৫ পেলেন ২৩ জন
  • এইচএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণ, ঢাকা বোর্ডের নতুন জিপিএ–৫ পেলেন ২০১ পরীক্ষার্থী