নোয়াখালীতে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢুকে পদ হারালেন এক ছাত্রদল নেতা। তাঁর নাম মোহাম্মদ সান্নাউল্লাহ। তিনি সেনবাগ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক। আজ শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক পরীক্ষা উপলক্ষে প্রশাসনের তরফ থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। যেখানে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে সেনবাগ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সানাউল্লাহ দলবল নিয়ে উপজেলার সুলতান মাহমুদ ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে যান। তিনি প্রায় ২৫-৩০ মিনিট কেন্দ্রে অবস্থান করেন। এ সময় ছাত্রদল নেতা ছাড়া স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতাও পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে ঘোরাঘুরি করেন।

ছাত্রদল নেতা সানাউল্লাহ পরীক্ষাকেন্দ্রের বিভিন্ন হলে ঘুরে ঘুরে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। হলের ভেতরে ছবি তোলেন এবং সেই ছবি নিজের ফেসবুকেও পোস্ট করেন। এ ছাড়া একই ছবি দলের আরও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীও পোস্ট করেন। এতে বিষয়টি জানাজানি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের তরফ থেকে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সানাউল্লাহকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক নির্দেশনা ও প্রচলিত নিয়ম লঙ্ঘন করে সেনবাগ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সানাউল্লাহ উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মোহাম্মদ সানাউল্লাহকে সাংগঠনিক পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ সানাউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি পরীক্ষা শুরুর প্রায় ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকেছেন এবং কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষার হলে গেছেন। তিনি যখন পরীক্ষার হলে ঢোকেন, তখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়নি। তবু তিনি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দলের সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিয়েছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র ক ন দ র পর ক ষ ক ন দ র ছ ত রদল ন ত য় ছ ত রদল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারল না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থী

স্কুলের ল্যাব সহকারীর ‌‘প্রতারণার’ কারণে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চলতি বছরের এইচএসসির বিএমটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তিন পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসা ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখার। বৃহস্পতিবার থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলো, উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কাওসার আলী, একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মো. রাজু আহমেদ, হাবিবগঞ্জ গ্রামের শাহদৎ হোসেনের ছেলে সাকিবুল হাসান। তারা সবাই ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিউম্যান রিসোর্স ট্রেডের শিক্ষার্থী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী এটি ছিল তাদের প্রথম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা। 

এ তিন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তারা যথাসময়ে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইল্ট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএম শাখায় ভর্তি হন। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী তারা অভ্যন্তরীণ সকল পরীক্ষাও দিয়েছেন। প্রথম বর্ষ সমাপনীর বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য তারা ২৬০০ টাকা করে এই প্রতিষ্ঠানের ল্যাব সহকারী মো; রাজু আহমেদের কাছে জমা দেন। কিন্তু রাজু ফরম পূরণ না করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। বুধবার পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গেলে তারা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণ হয়নি। আসেনি প্রবেশপত্র। 

প্রবেশপত্র কেন আসেনি জানতে চাইলে তাদের আশ্বস্ত করে রাজু আহমেদ বলেন, পরীক্ষার আগে যথাসময়ে তাদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হবে। অবশেষে পরীক্ষার দিন গিয়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন, তাদের ফরম পূরণই হয়নি। রাজু আহমেদ পালাতক। অভিযোগকারীরা জানান, তারা এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ও স্কুলের সভাপতি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাতের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে এই প্রতারণা এবং তাদের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাওয়ার জন্য রাজু আহমেদের শাস্তির দাবি জানান। 

এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি তাঁকে আগে জানানো হয়নি। বর্তমানে রাজু আহমেদ পলাতক রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, তার ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদ এর আগেও স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেবার কথা বলে অনেক অভিভাবকের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ভর্তি করে দিতে পারেননি। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি স্থগিত করা হয়। এ বছর আবারও দুর্নীতি ও প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্কুলের সভাপতিকে অনুরোধ করেছেন। 

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি দ্রুত বিষয়টির তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন। প্রথমিকভাবে ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নোয়াখালীর সেই ছাত্রদল নেতাকে বহিষ্কার
  • এইচএসসি পরীক্ষা: বাংলা দ্বিতীয় পত্রের সময় পরিকল্পনা করে নাও
  • সেই এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন
  • সেই এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন: প্রেস উইং
  • প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেননি ১৭ শিক্ষার্থী
  • নাটোরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রদল নেতা, সচিবকে শোকজ
  • প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ অসাধু চক্র পাবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • জাল প্রবেশপত্র: সিলেটে ছাত্রীর ১ বছর কারাদণ্ড
  • এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারল না উল্লাপাড়ার তিন শিক্ষার্থী