চতুর্থ দিনেই ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কায় বাংলাদেশ
Published: 27th, June 2025 GMT
কলম্বোর সিংহলীজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এর আগে তিনটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ফলাফল— তিনটিতেই পরাজয়। এর মধ্যে দুইটিই ছিল ইনিংস ব্যবধানে। দীর্ঘ ১৮ বছর পর আবার কলম্বোয় ফিরেই যেন সেই পুরনো দুঃস্বপ্নে পা রাখছে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনে গড়ানোর আগেই আরও একটি ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা এখন স্পষ্টতর।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২৪৭ রানে। জবাবে শ্রীলঙ্কা তুলে নেয় ৪৫৮ রান, যা থেকে ২১১ রানে পিছিয়ে পড়ে টাইগাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেও কাটতে পারেনি ব্যর্থতার ছায়া। ইনিংসের শেষভাগে ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। দিনের শেষ বলে আউট হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। অপরপ্রান্তে ১৩ রানে অপরাজিত আছেন লিটন দাস। এখনও শ্রীলঙ্কার থেকে ৯৬ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের সামনে রয়েছে ইনিংস ব্যবধানের শঙ্কা।
টেলএন্ডারদের নিয়ে লিটন কি পারবেন এই ব্যবধান ঘুচিয়ে প্রতিপক্ষকে একটি চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য উপহার দিতে? বাস্তবতা বলছে, এমন প্রত্যাশায় আশার বাতি জ্বালানোর মতো মানুষ এখন হাতে গোনা।
আরো পড়ুন:
চার বছর পর ইংল্যান্ড টেস্ট দলে আর্চার
ব্রিজটাউনে দ্বিতীয় দিনে পড়ল ১০ উইকেট
দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ইনিংসের সূচনাতেই বিদায় নেন এনামুল হক বিজয়, যিনি ১৯ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ১৯ রান। একই রানে ফিরেন সাদমান ইসলাম, যিনি করতে পারেন মাত্র ১২ রান।
সেখান থেকে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে স্থায়িত্ব ছিল না সেই প্রতিরোধেও। ৬৩ রানে মুমিনুল ফিরে যান ১৫ রান করে। এরপর শান্তও ৭০ রানে বিদায় নেন ১৯ রান (১ চার, ১ ছক্কা) করে।
১০০ রানের মাথায় সাজঘরের পথ ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম, যিনি ২ চারে করেন ২৬ রান। আর দিনের একেবারে শেষ বলেই আউট হয়ে যান মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ব্যাট থেকে আসে ১১ রান।
শ্রীলঙ্কার বোলিং আক্রমণে ধার ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রবথ জয়সুরিয়া ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা নেন ২টি করে উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন আসিথা ফার্নান্দো ও তারিন্দু রত্নায়েকে।
সবমিলিয়ে কলম্বোর আকাশে যেমন বৃষ্টির শঙ্কা, বাংলাদেশের ইনিংসেও তেমনি বিপর্যয়ের ঘন মেঘ। চতুর্থ দিনেই ম্যাচ শেষ হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব যবধ ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।