সেরা এআই–কর্মীর খোঁজে মার্ক জাকারবার্গ
Published: 27th, June 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর বিভিন্ন উদ্ভাবনে চলা প্রতিযোগিতায় শীর্ষে থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। এ জন্য এআই প্রযুক্তিনির্ভর ‘সুপার ইনটেলিজেন্স’ নামের নতুন গবেষণাগার চালুর পরিকল্পনা করেছেন তিনি। শুধু তা–ই নয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেরা এআই–গবেষক ও নির্মাতাদের পাশাপাশি এআই খাতের উদ্যোক্তাদের মোটা অঙ্কের বেতনে গবেষণাগারটিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন মার্ক জাকারবার্গ।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অনেককে ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত বেতন দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, সেরা এআই–গবেষক ও নির্মাতাদের কাছে নিজেই ই–মেইল বা হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠিয়ে মোটা অঙ্কের বেতনে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন মার্ক জাকারবার্গ। এরই মধ্যে যেসব এআই–গবেষক ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেরা উদ্ভাবনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ করছেন জাকারবার্গ।
মেটার মানবসম্পদ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘রিক্রুটিং পার্টি’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতিদিন নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করছেন জাকারবার্গ। কোনো প্রার্থীকে নির্বাচনের পর তিনিই প্রথম বার্তা পাঠাচ্ছেন। সেই ব্যক্তির কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলে নিজ বাসভবনের পাশাপাশি মেটা কার্যালয়ে সাক্ষাতের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।
জাকারবার্গের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের বেতনে চাকরির সুযোগ পেয়েও সবাই যে রাজি হচ্ছেন, তা নয়। মেটার অভ্যন্তরীণ কাঠামো ও কৌশলগত অগ্রাধিকার নিয়ে অনিশ্চয়তা ও বিভ্রান্তির বিষয়টি অনেক এআই–বিশেষজ্ঞকে ভাবিয়ে তুলেছে। মেটায় সাম্প্রতিক সময়ে কর্মীদের একাধিকবার দায়িত্ব পুনর্গঠনসহ প্রধান এআই–বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কৌশলগত মতপার্থক্যের কারণেও দ্বিধায় রয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রতি এআই খাতে বড় ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে মেটা। বছরের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটির নতুন এআই মডেলের উন্মোচন বেশ বিলম্বিত হয়। পরে জানা যায়, মডেলটির কার্যকারিতা বাস্তবের তুলনায় অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করা হয়েছিল। এতে বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি গুগল ও ওপেনএআইয়ের মতো প্রতিযোগীদের তুলনায় বেশ পিছিয়ে পড়ে মেটা। এরপরই মেটার সুপার ইনটেলিজেন্স গবেষণাগারের জন্য সেরা এআই–কর্মী নিয়োগ দিতে সরাসরি যুক্ত হয়েছেন মার্ক জাকারবার্গ।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ক জ ক রব র গ
এছাড়াও পড়ুন:
দোকানিদের ভবনে ফেরাতে পদক্ষেপ নিন
চট্টগ্রাম নগরীতে কাঁচাবাজারের জন্য খ্যাত চকবাজারের ধনির পুল এলাকায় সাড়ে পাঁচ বছর আগে ছয় কোটি টাকায় একটি তিনতলা ভবন নির্মাণ করেছিল সিটি করপোরেশন। কয়েক দফা পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বিক্রেতা বা দোকানদারেরা ভবনটিতে দোকান নিয়ে বসছেন না। ফুটপাতে বাজার বসার কারণে ওই এলাকায় যানজট লেগেই আছে, ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে পাশের খালেও জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। অথচ ভবন নির্মাণে পরিকল্পনায় ভুল থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়ে ভবনটিকে কাজে লাগাতে হবে।
চকবাজারের এই কাঁচাবাজার নিয়ে প্রথম আলো আগেও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সম্ভাব্যতা যাচাই করা ছাড়া বা পরিকল্পনাহীন অবকাঠামো নির্মাণ করার মধ্য দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের বাস্তব উদাহরণ এটি। জনগণের অর্থে নির্মিত ভবনটি জনগণের কোনো উপকারেই আসছে না। দোকানদার বা বিক্রেতারা এখানে সুফল পাওয়ার কথা থাকলেও তা থেকে পুরোপুরিই বঞ্চিত তাঁরা। অন্যদিকে ফুটপাতে দোকান বসার কারণে নানাভাবে নাগরিক দুর্ভোগ বেড়ে গেছে, ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশেরও।
অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে নতুন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা শাহাদাত হোসেন ভবনটিকে চালু করার প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ফুটপাতে দোকানদারদের ভবনের দোতলায় পুনর্বাসন করেন তিনি। এ জন্য তাঁদের কোনো দোকানভাড়া দিতে হচ্ছিল না। শুধু বাজারের ইজারাদারের টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছিল। ফুটপাতে থাকার সময়ও এই অর্থ দিতে হতো। এরপরও দোকানিরা ভবনে থাকেননি। দু-তিন মাস না যেতেই আবার ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ব্যবসা শুরু করেন সবজি বিক্রেতারা। গত শুক্রবার ফুটপাত ও সড়কে দোকান দেখে ক্ষুব্ধ হন মেয়র শাহাদাত হোসেন।
তার মানে, শুধু দোকানিদের পুনর্বাসনই যথেষ্ট নয়। কাঁচাবাজারটি যখন পুরোনো ভবনে ছিল, তখন দোকানের বিন্যাস যেমন ছিল নতুন ভবনে সেটি হয়নি। আগের ভবনে সবজি, পেঁয়াজ, রসুনের বাজার ছিল নিচতলায়। দোতলায় ছিল মাছ-মাংসের বাজার। নতুন ভবনে হয়েছে উল্টো। মানুষ নিচতলা থেকে মাছ-মাংস কিনে সবজির জন্য আর দোতলায় উঠতে চান না। ফলে দোতলায় থাকা দোকানিরা বলছেন, ক্রেতারা না আসায় তাঁদের পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁরা ফুটপাতে বসছেন। ফুটপাতে যেখানে তাঁদের দৈনিক বিক্রি ৪০-৫০ হাজার টাকা ছিল, নতুন ভবনে তা কমে ৮-১০ হাজার টাকায় নেমে এসেছে।
ভবনটিকে যেভাবেই হোক কাজে লাগাতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া। পুরোনো ভবনে যেভাবে বাজারের দোকানগুলো বরাদ্দ করা ছিল, নতুন ভবনেও সে অনুসারে করা যায় কি না, বিবেচনা করা হোক। তা ছাড়া ক্রেতাদের মানসিকতায়ও পরিবর্তন আনতে হবে। ফুটপাতে দোকান বসানো ও খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।