রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন প্রশাসনিক-একাডেমিক ভবনের কাজে চাঁদা দাবি করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে এ দুটি ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছে।  

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে বর্তমানে ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা প্রশাসনিক ভবন ও ১৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ চলছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ভবন দুটির নির্মাণ চলছে। উভয় ভবনের নির্মাণকাজ পেয়েছে চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমই-আরবিজেবি। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সাতজনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাম্পাসে ঢুকে ঠিকাদারের কর্মচারীদের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। পরে সন্ত্রাসীরা নির্মাণ শ্রমিকদের থাকার জন্য তৈরি করা টিনশেডের ঘরে ঢুকে তাদের ১০ থেকে ১২টি মোবাইল ফোনসেট ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার আগে চাঁদা না দিলে নির্মাণকাজ বন্ধের হুমকি দেয়। চাঁদা না দিয়ে কাজ চলমান রাখলে পরবর্তী সময়ে ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর ঠিকাদারের লোকজন ও শ্রমিকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানায়। 

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া প্রায় ছয় মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ২৬ জুন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে সাত সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক ধরে হেঁটে ক্যাম্পাসে ঢুকছে। তাদের মধ্যে চারজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ক্যাম্পাসে ঢোকার মুখে চেয়ারে বসা নিরাপত্তা প্রহরী অস্ত্রধারীদের দেখে উঠে দাঁড়ান। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। অস্ত্রধারীরা শ্রমিকদের ঘরে ঢুকে কয়েক মিনিট অবস্থান করার পর একই পথে চলে যায়। 

এ ব্যাপারে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাঙামাটি কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছে। পাশাপাশি অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকেও জানানো হয়েছে বিষয়টি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কাজে দুইবার চাঁদা দাবি করেছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভবনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
 
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মীর হোসেন জানান, চাঁদা না দেওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীদের কাউকেই চিনতে পারিনি। এরা কোনো দলের কিনা জানি না। 

কোতোয়ালি থানার ওসি সাহেদ উদ্দীন জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.

আতিয়ার রহমান এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, এর আগে সিসিটিভি ফুটেজ না থাকায় কারা চাঁদা চাইতে এসেছিল জানা যায়নি। তবে এবার কারা এসেছে আমরা জানতে পেরেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভবন র ন র ম ণ ক জ বন ধ র ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

শাটডাউনের বিপক্ষে জনজীবন

আওয়ামী লীগের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায় জনজীবনে তেমন কোনো চাপ সৃষ্টি হয়নি।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখারপুল, সচিবালয়, জিপিওসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে- যান চলাচল স্বাভাবিক, মানুষের চলাচল স্বাভাবিক এবং বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডও অন্যান্য দিনের মতোই চলছে।

আরো পড়ুন:

ঢাবি শিক্ষক এরশাদের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি ছাত্র ফ্রন্টের

ঢাবিতে কৃত্রিম বুদ্ধমত্তা-বিষয়ক জাতীয় প্রতিযোগিতা

সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার আধিক্য যেমন লক্ষ্য করা গেছে, বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীও দেখা গেছে। কোথাও যান সংকট হয়নি, বরং কিছু বাসে বাড়তি যাত্রীর চাপ ছিল।

গুলিস্তানে এক বেসরকারি অফিসকর্মী রিফাত হোসেন বলেন, “শাটডাউন বলে আজকে কিছুই বুঝলাম না। প্রতিদিন যেমন বের হই, আজও ঠিক তেমনই বের হয়েছি। রাস্তায় কোনো সমস্যা দেখিনি।”

চানখারপুলে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ মাহমুদা আক্তার বলেন, “শাটডাউনের নামে মানুষকে ভয় দেখানো ঠিক না। বাস কম হলেও চলাচল পুরোপুরি থেমে যায়নি। আমরা স্বাভাবিকভাবেই অফিসে যাচ্ছি।”

ঠিকানা পরিবহন শ্রমিক শহীদুল ইসলাম বলেন, “শাটডাউন ডেকেছে শুনেছি, কিন্তু রাস্তায় কোনো প্রভাব নেই। পুলিশের বাড়তি অবস্থানও দেখি নাই। গাড়ি চলছে, যাত্রীও আছে।”

সচিবালয়ের কাছে একজন সরকারি চাকরিজীবী হাসিবুল করিম বলেন, “শাটডাউনের মতো কর্মসূচি কখনোই জনস্বার্থের পক্ষে নয়। এতে ব্যবসার ক্ষতি হয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়। আজকে যানচলাচল প্রতিদিনের মতোই।” 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক

নিষিদ্ধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সতর্ক উপস্থিতি বিশেষভাবে দেখা যায়নি। নিয়মিত দায়িত্বপালন ছাড়া আলাদা কোনো প্রস্তুতি চোখে পড়েনি।

শাটডাউনের বিপক্ষে জনমতই শক্তিশালী

সরেজমিন চিত্র, সাধারণ মানুষের বক্তব্য এবং বিভিন্ন পরিবহন সংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট- রাজধানীবাসী শাটডাউনের পক্ষে নয়। বরং জনজীবন স্বাভাবিক রাখার পক্ষেই তাদের মত।

রাজধানীর ৩৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, ব্যস্ত সকাল, মানুষের স্বাভাবিক আনাগোনা এবং চলমান পরিবহন কার্যক্রম প্রমাণ করেছে- শাটডাউন ঢাকার জনজীবনে চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি বরং জনগণ নিষেধাজ্ঞামূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থানই দেখিয়েছে।

ঢাকা/আসাদ/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩২ নম্বরের দিকে যাওয়া ২টি বুলডোজার আটকে দিল সেনাবাহিনী
  • শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার
  • পটুয়াখালীতে গ্রামীণ ব্যাংকে আগুন, প্রভাব পড়েনি শাটডাউনের
  • এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতুতে নিরাপত্তা জোরদার, যানবাহনের সংখ্যা কম
  • ট্রাইব্যুনালে নিরাপত্তা জোরদার, আছে সেনাবাহিনী-র‍্যাব-পুলিশ
  • মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশজুড়ে ‘সতর্কতা’
  • শেখ হাসিনাসহ অন্যদের মামলার রায় যা-ই হোক না কেন, তা কার্যকর হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • ঢাকাসহ ৪ জেলায় বিজিবি মোতায়েন
  • ঢাকা-গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর-মাদারীপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে বিজিবি
  • শাটডাউনের বিপক্ষে জনজীবন