বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু দেশের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিক বেকারত্ব। হাজার হাজার তরুণ-তরুণী প্রতিদিন চাকরির সন্ধানে হতাশ হয়ে ঘুরছেন। তাই বেকারত্বের প্রকৃত কারণ বিশ্লেষণ ও কার্যকর সমাধানের পথ খোঁজা জরুরি।
বেকারত্ব জটিল সমস্যার নাম, যার মূল কারণ– ১.
বেকারত্ব শুধু ব্যক্তিগত নয়, রাষ্ট্রের জন্যও গভীর নিরাপত্তা ও সামাজিক সংকট তৈরি করে। উচ্চ বেকারত্ব বাড়িয়ে দেয় সামাজিক অস্থিরতা, অপরাধপ্রবণতা ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি। আর্থিকভাবে দেশের সামগ্রিক উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি সংকুচিত হয়।
বেকারত্বের হার কমাতে রাষ্ট্রকে অবশ্যই কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সম্ভাব্য পদক্ষেপ হতে পারে, শিক্ষার মান উন্নয়ন: শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাজারমুখী করে গড়ে তুলতে হবে। ন্যূনতম দক্ষতা অর্জন ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তি ও গবেষণার সমন্বয় বাড়াতে হবে। কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষার প্রসার: কারিগরি শিক্ষার মান ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে দক্ষতা ও বাস্তব কর্মপরিবেশে অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে হবে। উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র ব্যবসার সহায়তা: সরকারি প্যাকেজ ও নীতিমালা উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি কমাবে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। কর্মসংস্থানবান্ধব পরিবেশ: শ্রমবাজারের প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সার্বিক রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা: দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মসংস্থাননীতি গ্রহণ ও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। জনসংখ্যা, শিক্ষা, শিল্প ও সেবা খাতের সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়নে নজর দিতে হবে।
বেকারত্বের হার বেশি হওয়ার বড় কারণ নারীদের পিছিয়ে পড়া। কিন্তু ২০২৫ সালের বাংলাদেশেও নারীদের কর্মসংস্থানে বড় প্রতিবন্ধকতা নিরাপত্তার অভাব। নিরাপদ পরিবেশ ছাড়া নারীদের পক্ষে দক্ষতা ও সৃজনশীলতা প্রকাশ করা কঠিন। তাই নারীদের জন্য কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মানসিক ও সামাজিকভাবে উৎসাহিত করা এবং কাজের প্রতি আগ্রহ ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের চ্যালেঞ্জ। নারীরা যখন সুরক্ষিত ও প্রেরণা পাবেন, তখনই তারা শ্রমবাজারে বেশি হারে অংশগ্রহণের ব্যাপারে উৎসুক হবেন এবং দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে। রাষ্ট্র ও সমাজকে একযোগে কাজ করতে হবে নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পথে বাধা দূর এবং সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে।
বেকারত্ব শুধু নির্দিষ্ট একটি বিভাগ বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা সমাধান করা যাবে না। এ জন্য প্রয়োজন ব্যাপক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং রাষ্ট্রীয় সঠিক নীতি। ২০২৫ সালের বাংলাদেশে বেকারত্ব কমাতে হলে এখনই সময় কর্তৃপক্ষের আন্তরিক ভূমিকা ও সমগ্র সমাজের সচেতনতা গড়ে তোলার। শিক্ষা যদি মানসম্মত হয়, কারিগরি দক্ষতা এবং উদ্যোক্তাদের প্রেরণা বৃদ্ধি পায়, তবেই আমরা বেকারত্বের ভয়াল আঁধার কাটিয়ে সত্যিকার অর্থে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারব।
ফাহিমা আক্তার: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
fahima.jnu17@gmail.com
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপ স্বপ্ন বুকে নিয়ে সান্তোসে চুক্তির মেয়াদ বাড়ালেন নেইমার
ক্যারিয়ারের শুরু যেখানে, সেখানেই আবার নতুন অধ্যায় লিখছেন নেইমার জুনিয়র। ছয় মাসের অস্থায়ী চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ঘোষণা এলো ২০২৫ সালের শেষ অব্দি ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব সান্তোসে খেলবেন তিনি।
সান্তোস ক্লাব এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নেইমারের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সূত্র মতে, চুক্তিতে এমন একটি শর্ত রাখা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে তা ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ থাকে।
৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড চলতি বছরের জানুয়ারিতে সৌদি ক্লাব আল হিলাল থেকে চুক্তি বাতিল করে ফিরেছিলেন তার বাল্যকালের ক্লাবে। সেই ফেরা শুধু পেশাদার সিদ্ধান্ত নয়, ছিল আবেগের ঢেউও।
আরো পড়ুন:
তিন মিনিটের ঝলকে শেষ ষোলোয় চেলসি
বেনফিকার বিস্ময়, বায়ার্নকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নেইমার বলেন, ‘‘সান্তোস কেবল একটি ক্লাব নয়, এটি আমার ঘর, আমার শিকড়। আমি হৃদয়ের কথা শুনেই ফিরে এসেছি।’’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘শৈশবে যে মাঠে ছুটেছি, আজ সেই মাঠে ফিরে এসে আমি সত্যিই সুখী। এখানেই অপূর্ণ স্বপ্নগুলো পূরণের আশা আছে।’’
চুক্তি নবায়নের মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, নেইমার এখন শুধুই খেলোয়াড় নন, তিনি সান্তোসের আত্মার অংশ, এক জীবন্ত কিংবদন্তি। যেখানে তার ফুটবলজীবনের শুরু, সেখানে হয়তো একদিন তার যাত্রার শেষটাও লেখা হবে।
ঢাকা/আমিনুল