কমিটিতে ফ্যাসিবাদের দোসর, নড়াইল জেলা বিএনপিতে ক্ষোভ
Published: 28th, June 2025 GMT
নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কালিয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি নিয়ে অভিযোগ করেছেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। দলে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে ফ্যাসিবাদের দোসর আওয়ামী নেতাকর্মীদের দলে টানছেন বলে তাদের অভিযোগ। এতে জেলার নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী, যারা ১৬ বছর রাজনৈতিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, রাজপথে থেকে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন তারা নিজেদের বঞ্চিত মনে করছেন। তারা বিষয়টি জানিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
কালিয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ তুলে নেতাকর্মীরা বলছেন, কমিটিতে আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কয়েকজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার অনুমোদন দিয়েছে জেলা কমিটি। গত ৬ জানুয়ারি কালিয়া উপজেলা বিএনপির অনুমোদিত কমিটিতে আওয়ামী লীগের যে নেতারা স্থান পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তারা হলেন- অ্যাডভোকেট এএসএম সাইফ আহমেদ হিরক (আইনবিষয়ক সম্পাদক), মো.
বিষয়টি জানাজানি হলে দলের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচির ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করেন। নেতাকর্মীদের পক্ষে চিঠিতে স্বাক্ষর করেন কালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরদার আনোয়ার হোসেন ও কালিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা ইউসুফ।
এ প্রসঙ্গে সরদার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘যাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ করার অভিযোগ উঠেছে তারা আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে আছে কিনা খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’
খোঁজখবর না নিয়েই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিলেন কেন? এ প্রশ্নের জবাবে সরদার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘আমরা যখন তারেক জিয়া বরাবর লিখিত অভিযোগ করি, তখন আমাদের দলীয় কিছু নেতাকর্মীরা বলেছিল, আমরা আপনাকে কমিটির কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেব। কিন্তু ওদেরকে যারা কাগজপত্র সংগ্রহ করে দিতে চেয়েছিল সেই সব আওয়ামী লীগ নেতারা এখন পলাতক।’’
এ প্রসঙ্গে কালিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা ইউসুফের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের দেওয়া পৌর কমিটির তালিকা বাদ দিয়ে নিজেদের মতো করে কমিটি দিয়েছে। এ কারণে এলাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।’’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ফ্যাসিস্ট অসংখ্য লোকজনকে উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি জেলা ও উপজেলা কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে পুনর্গঠনের দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘কালিয়া উপজেলা এবং পৌর বিএনপি’র কমিটির যে তালিকা আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, আমরা সেই কমিটির অনুমোদন দিয়েছি। ওই তালিকা থেকে নাম রদবদল করার কোনো সুযোগ নেই।’’
কালিয়া উপজেলা বিএনপির অনুমোদিত কমিটিতে আওয়ামী লীগের যে নেতারা স্থান পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের অন্যতম মোল্লা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা পূর্ব থেকেই বিএনপি করে আসছি। কিন্তু ২০১৮ সালে এলাকার পরিস্থিতির কারণে সাবেক এমপি মুক্তির সাথে এলাকায় সামাজিক দল করি। তবে আমরা আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে কখনও ছিলাম না। এবার জেলা বিএনপি’র সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম আমাদের উপজেলা বিএনপি’র বিভিন্ন কমিটিতে রেখেছেন। আমরা কৃতজ্ঞ।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলীয় একাধিক কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সাবেক সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেছা বাপ্পির সঙ্গে একাধিক সভায় তাকে দেখা গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তিনি এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে বলেছেন, ফজিলাতুন নেছা বাপ্পি সম্পর্কে তার বেয়াইন হন। আওয়ামী লীগের লোকজনকে কমিটিতে স্থান দেওয়ায় বিষয়টির সঙ্গে তিনি জড়িত নন।
ঢাকা/আরএস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প র ব এনপ র ন ত কর ম র র ল ইসল ম এ প রসঙ গ ব এনপ র স র অন ম দ কম ট ত কম ট র আম দ র র কম ট ব ষয়ট উপজ ল আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে পার্লারের আড়ালে ইয়াবার কারবার, নারী গ্রেপ্তার
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় একটি বিউটি পার্লারের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসা ইয়াবার পাইকারি কারবারের চক্রের সন্ধান মিলেছে। শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই পার্লারের মালিক সুরাইয়া আক্তারকে ৪৫০ পিস ইয়াবাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারিক। তিনি জানান, সুরাইয়ার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো টলারেন্সে রয়েছে। এ ধরনের অপরাধে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
পুলিশ জানায়, সুরাইয়া তার স্বামীর বাড়ি শ্রীপুর পৌরসভার ১নং সিএনবি বাজার এলাকার বাসায় বসে পার্লারের ব্যবসার পাশাপাশি মাদক সরবরাহ করতেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে তার বসতঘর থেকে ৪৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুরাইয়া স্বীকার করেছেন, এসব ইয়াবা তিনি কক্সবাজার থেকে সংগ্রহ করে বিমানে করে শ্রীপুরে নিয়ে এসেছেন।
আরো পড়ুন:
কুমিল্লায় এক বছরে ১১ কোটি টাকার মাদক জব্দ
নানা সঙ্কটে ধুঁকছে চাঁপাই মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর
সুরাইয়া মূলত ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার শিলাসী গ্রামের বাসিন্দা। বিয়ের পর থেকে শ্রীপুরে পার্লার পরিচালনার আড়ালে ইয়াবার পাইকারি কারবারি চালিয়ে আসছিলেন বলে পুলিশ ধারণা করছে। এ ঘটনায় আরো কেউ জড়িত কি না—তা জানার জন্য তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/রফিক/বকুল