বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। টিকিটের দাম তিন টাকা হলেও প্রতি রোগী থেকে আদায় করা হচ্ছে ৫ টাকা। অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে অপমান এবং লাঞ্ছিত হতে হয়। এভাবে রোগীর পকেট কেটে বছরে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য হলেও কর্তৃপক্ষ উদাসীন। 

হাসপাতালের রেজিস্টার ঘেঁটে দেখা গেছে, চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ১১৫১৫ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১০৬৯০, মার্চে ১০০৫৪, এপ্রিলে ১১৪১৭ এবং মে মাসে ১১২১৪ জন রোগী বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য টিকিট সংগ্রহ করেছেন। এ চার মাসে টিকিট বিক্রি বাবাদ অতিরিক্ত ৮৭ হাজার ৩৫২ টাকা আদায় হয়েছে। রোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে এ টাকা হাসপাতালের সাবেক প্রধান অফিস সহকারী রইস উদ্দিন, মালী আনিসুর রহমান ও দুলাল নামে এক দালাল ভাগাভাগি করে নেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী। 

অভিযোগ পেয়ে ২২ জুন সকাল ১১টায় বহির্বিভাগে কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায় মালী মো.

আনিছুর রহমান টিকিট বিক্রি করছেন। রোগীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান টিকিটের দাম ৩ টাকা। কাউন্টার থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫ টাকা। এ সময় হাসপাতালের একজন কর্মচারী বলেন, এটি খুব সামান্য টাকা। বেশির ভাগ রোগী এটি নিয়ে কিছু বলেন না। আর রোগীরা বলছেন, হাসপাতালে সেবার মান ভালো না। আমরা অতিরিক্ত দুই টাকা দিতে চাই না। খুচরা দিলেও পাঁচ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা। 

জানতে চাইলে কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা আনিছুর বলেন, হাসপাতালে লোকবল সংকট। কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই কাউন্টারে বসেছি। বাড়তি কাজ করি। কিছু টাকা নিতেই পারি। এ ছাড়া দুই টাকা খুচরা থাকে না। তাই ৫ টাকা করে নিই। 

হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু সায়েম বলেন, অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথা শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. শফিউল্লাহ নেওয়াজ বলেন, বহির্বিভাগের টিকিট প্রতিটি তিন টাকা নেওয়ার কথা। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীকে সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মালী দিয়ে টিকিট কাউন্টারের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে শফিউল্লাহ নেওয়াজ বলেন, হাসপাতালে জনবল সংকট প্রকট। বাধ্য হয়ে মালী দিয়ে এ কাজ করানো হচ্ছে। ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে ৩১ শয্যার ওষুধ, রোগীর খাবারসহ অন্যান্য সুযোগসুবিধা রয়েছে বলে জানান তিনি। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হাসপাতালে বর্তমানে ৪ জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট, ৬ জন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। শয্যা ব্যবস্থা থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ জন অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকে এখানে।
জেলা সিভিল সার্জন এস.আই.এম রাজিউল করিম বলেন, বাগমারায় অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি এখন জানলাম। তদন্ত করে দেখব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক উন ট র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিমা বিসর্জনের নৌকা থেকে আত্রাই নদে পড়ে কিশোর নিখোঁজ

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় আত্রাই নদে প্রতিমা বিসর্জনের সময় নৌকা থেকে পড়ে রনি (১৬) নামের এক কিশোর নিখোঁজ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আত্রাই নদের মহাদেবপুর শিবগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ রনি জেলার মান্দা উপজেলার বানডুবি গ্রামের রণজিত হাওলাদারের ছেলে। ঘটনার পর তাকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্গাপূজায় প্রতিমা বিসর্জনের অংশ হিসেবে প্রতিবারের মতো এবারও আত্রাই নদে প্রতিমা ভাসানোর আয়োজন করা হয়েছিল। স্থানীয় মানুষ, পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধবসহ অনেকে নৌকা নিয়ে নদীতে ঘুরছিলেন। এর মধ্যে রনি যে নৌকায় ছিল, সেটি মহাদেবপুর উপজেলার শিবগঞ্জ এলাকায় পৌঁছায়। হঠাৎই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রনি নৌকা থেকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়। এ সময় নৌকায় রনির সঙ্গে থাকা লোকজন দ্রুত থানা-পুলিশকে খবর দেন। পুলিশের সহযোগিতায় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধারকাজ শুরু করে। তবে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন রেজা প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ কিশোরকে দ্রুত উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তল্লাশি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ