মৃত্যুর ৩ দিন আগে খায়রুল বাসারকে কী বলেন মনু মিয়া
Published: 28th, June 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ইটনায় বিনা পারিশ্রমিকে তিন হাজারের বেশি কবর খোঁড়া সেই মনু মিয়া (৬৭) মারা গেছেন। জীবনের প্রায় অর্ধশত বছর তিনি ব্যয় করেছেন কবর খননের কাজে, বিনিময়ে কখনো কিছু চাননি। আশপাশের গ্রাম ও জেলাজুড়েও পরিচিত ছিলেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে।
মনু মিয়ার মৃত্যুর খবরে আহত হয়েছেন অভিনেতা খায়রল বাসার। কারণ, মনু মিয়ার ঘোরা মারা যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মাসখানেক ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। এই সময়টা তার পাশে ছিলেন খায়রুল বাসার। হাসপাতালে গিয়ে মনু মিয়ার সঙ্গে দেখাও করেছেন তিনি।
আজ শনিবার নিজের ফেসবুকে মনু মিয়ার সঙ্গে দুটি ছবি প্রকাশ করেছেন খায়রুল বাসার। লিখেছেন, ‘মনু কাকা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। এতদিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। ৩ দিন আগে উনি বাড়ি ফিরেছেন। বলছিলেন, আগের চেয়ে বেশ সুস্থ আছেন। ওনার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা আল্লাহ কবুল করেছেন। সুস্থ থেকেই উনি আল্লাহ ডাকে ফিরতে চেয়েছিলেন, এই দোয়াও চাইতেন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘উনার মহৎ কর্মের ফলস্বরূপ আল্লাহ নিশ্চয়ই উনাকে ওনার স্বপ্নের ঘোড়া উপহার দেবেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুন। সবাই মনু কাকার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে শান্তিতে রাখুন।’
কদিন আগে মনু মিয়া অসুস্থ হয়ে ঢাকায় এলে দুষ্কৃতিকারীরা তার ঘোড়াটি হত্যা করে। এরপরই আলোচনায় আসেন মনু মিয়া। সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয় বিষয়টি। নজরে আসে খায়রুল বাসারেরও। তিনি মনু মিয়াকে ঘোড়া কিনে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মনু মিয়ার সঙ্গে দেখাও করেন অভিনেতা। কিন্তু মনু মিয়া ঘোড়ার পরিবর্তে দোয়া চান খায়রুল বাসারের কাছে।
হাসপাতালে মনু মিয়ার সঙ্গে দেখা করার পর সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে অভিনেতা লিখেন, ‘আজ এক নায়কের সাথেই দেখা হলো আমার। আমি নিজ চোখে এক নায়ককেই দেখে আসলাম, বুক মেলালাম এক নায়কের সাথে! আজন্ম এক নায়ক মনু মিয়া। এই নায়কের গল্প বলবো শিগগিরেই। এটুকু বলি, মনু মিয়া অসহায় না বরং অসহায়ের সহায় হয়ে ওঠার প্রচণ্ড শক্তি আছে তার। এই দিশাহীন সমাজে এক আদর্শের নাম মনু মিয়া। মনু চাচা দোয়া ছাড়া কিছু চান না আপনাদের কাছে। উনি আপনাদের জন্য দোয়া করেন আপনারা ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শুভ জন্মাষ্টমী আজ
অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্যাপন করা হয়।
সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।